নিউজিল্যান্ডের হয়ে কেন্দ্রীয় চুক্তির প্রস্তাব কেইন উইলিয়ামসন ফিরিয়ে দিয়েছেন জানুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকার টি-টোয়েন্টি লিগ এসএটোয়েন্টিতে খেলতে। তবে নিজের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার ফুরিয়ে আসছে, এমনটি মনে করেন না উইলিয়ামসন।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে নিউজিল্যান্ড বিদায় নেওয়ার পর জানানো হয়, ২০২৪-২৫ মৌসুমের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকছেন না উইলিয়ামসন। আগেই টেস্ট দলের দায়িত্ব ছাড়া উইলিয়ামসন সীমিত ওভারের অধিনায়কত্ব ছাড়ছেন বলেও জানানো হয়। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে এরপর।
তবে দেশে ফিরে সাংবাদিকদের উইলিয়ামসন বলেছেন, কেন্দ্রীয় চুক্তির নিয়মের কারণেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিতে হয়েছে তাঁকে। সে নিয়ম অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট না থাকলে কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা খেলোয়াড়দের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি লিগ সুপার স্ম্যাশে খেলতে হবে।উইলিয়ামসন বলেছেন, ‘এটা স্রেফ চুক্তির বর্তমান যে নিয়ম, সেটির কারণে নিতে পারছি না (প্রস্তাব)। তবে নিউজিল্যান্ডের হয়ে খেলার ব্যাপারে আমি প্রায় কোনো ক্রিকেটই মিস করব না। এটা আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওই সময়ে বেশ কয়েকটি দারুণ টুর্নামেন্ট আছে কিন্তু এসএটোয়েন্টিকে বেশ রোমাঞ্চকর মনে হচ্ছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এর অর্থ হলো কেন্দ্রীয় চুক্তির প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়া। তবে আমার পুরো প্রাধান্য এখনো নিউজিল্যান্ডের হয়ে খেলা। মনে হয় ওই তিন সপ্তাহের মধ্যে আমি কয়েকটি ম্যাচ মিস করব।’
ওই কয়েকটি ম্যাচের মধ্যে থাকতে পারে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি। অবশ্য নিউজিল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম স্টাফ জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টেও তাঁকে পাওয়া নিয়ে সংশয় আছে। অবশ্য ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ শ্রীলঙ্কা ও ভারত সফরের সিরিজ, দেশের মাটিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের পর ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানে হতে যাওয়া চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলার কথা উইলিয়ামসনের।
এদিকে দ্য ডমিনিয়ন পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রধান নির্বাহী স্কট উইনিঙ্কের সঙ্গে ২০২৮ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলা পর্যন্ত উইলিয়ামসনের কথা হয়েছে। সেবারের আসর হবে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে। উইলিয়ামসন আভাস দিয়েছেন, ২০২৬-২৭ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরের টেস্ট সিরিজও তাঁর ভাবনায় আছে।
উইলিয়ামসন বলেছেন, ‘আমি যত দিন পারি খেলে যেতে চাই। আমার অধিনায়কত্বের সময়টা সত্যিই উপভোগ করেছি। আমার জন্য এটা দারুণ সম্মানের ব্যাপার ছিল বেশ কয়েক বছর। নেতৃত্বের ব্যাপারে দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি রোমাঞ্চিত, সেটির অংশ হতেও মুখিয়ে আছি।’
তিন সংস্করণ মিলিয়ে নিউজিল্যান্ডকে ২০৬টি ম্যাচে নেতৃত্ব দেওয়া উইলিয়ামসন বলেন, ‘সময়সীমার ব্যাপারে বলা আসলে কঠিন। ফিট থাকতে চাই, ভালো করতে চাই, উন্নতির চেষ্টা করে যেতে চাই। এটি (২০২৮ সাল) আরও কয়েক বছর পরে, বছর ধরে ধরে যেতে হবে।’
এদিকে নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটের প্রধান নির্বাহী বলেছেন, কেন্দ্রীয় চুক্তিতে না থাকলেও খেলার ব্যাপারটি শুধু উইলিয়ামসনের মতো কয়েকজন সিনিয়র ক্রিকেটারের ক্ষেত্রেই বিবেচনা করা হবে। এটি তাঁদের প্রাপ্য বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। ২০২২ সালে কেন্দ্রীয় চুক্তির প্রস্তাব গ্রহণ না করা ট্রেন্ট বোল্ট যেমন সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও খেলেছেন। অবশ্য টেস্ট অধিনায়ক টিম সাউদির পরবর্তী চুক্তির তালিকায় থাকার কথা আছে।