টেস্ট দলের ক্রিকেটারদের জন্য আজকের দিনটা ছিল বিশ্রামের; কিন্তু প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের জন্য নয়। তিনি মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে এলেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের দলে ডাক পাওয়া ক্রিকেটারদের অনুশীলনে। চোট থেকে ফেরা সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালও ছিলেন অনুশীলনে।
তবে গতকাল রেকর্ড–গড়া টেস্ট জয়ের আমেজটা তো এত সহজে মিলিয়ে যাওয়ার নয়। আজ সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে আসা হাথুরুসিংহের কথায়ও আফগানদের ৫৪৬ রানে হারানোর সেই রোমাঞ্চ, ‘আমি জানি না, আপনারা দেখেছেন কি না, আমি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছি, এটা শুধু একটা টেস্ট জয় নয়, তার চেয়েও বিশেষ কিছু। আমি বোঝাতে চেয়েছি, আমরা যেভাবে এই ম্যাচের জন্য প্রস্তুত হয়েছি, সেটা এর আগে কখনো হয়নি। আমরা ফাস্ট ও সবুজ উইকেট তৈরি করেছি। এ ধরনের উইকেটে খেলে জেতা বিরাট ব্যাপার।’
উইকেটের জন্য মিরপুর স্টেডিয়ামের কিউরেটর গামিনি ডি সিলভাকেও ধন্যবাদ দিয়েছেন বাংলাদেশের কোচ, ‘আমরা অনেক মানসিক বাধা পার করেছি। কারণ, ম্যাচের আগে অনেকেই আমরা কেমন করব, সেটা নিয়ে সন্দেহ করেছিল। আমরা এখানে সাধারণত ভিন্ন ধাঁচের ক্রিকেট খেলি। গামি, কিউরেটরকেও কৃতিত্ব দিতে হবে এ ধরনের উইকেট তৈরির জন্য। সেদিক থেকে, এটা একটা টেস্ট জয়ের চেয়েও বেশি কিছু।’ এই টেস্টে তরুণদের পারফরম্যান্সে মুগ্ধ হাথুরুসিংহে, ‘নতুন নায়ক বেরিয়ে এসেছে এই টেস্ট ম্যাচ থেকে।’
এবারের মিরপুর টেস্টকে ‘নাজমুলের টেস্ট’ বলাই যায়। মুমিনুল হকের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছেন এই বাঁহাতি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। স্বাভাবিকভাবেই নাজমুলকে প্রশংসায় ভাসালেন কোচ, ‘শান্তকে কৃতিত্ব দিতে হবে দুই ইনিংসে তার ব্যাটিংয়ের জন্য। বিশেষ করে প্রথম দিনের প্রথম দুই ঘণ্টা সে আর জয় যেভাবে খেলেছে, সেটা ড্রেসিংরুমের সবার স্নায়ু ঠান্ডা করেছে।’
প্রথমবারের মতো জাকির হাসানকে সামনে থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে হাথুরুসিংহের। দ্বিতীয় ইনিংসে দুর্ভাগ্যজনকভাবে রানআউট না হলে জাকিরও যোগ দিতে পারতেন মিরপুর টেস্টে সেঞ্চুরিয়ানদের তালিকায়। তবে জাকির যা করেছেন তাতে কোচ মুগ্ধ, ‘জাকিরকে এবারই প্রথম দেখলাম। চোটের কারণে সে আগের টেস্টে ছিল না। তার ক্যারিয়ারের শুরুটা দারুণ হয়েছে। খুবই দারুণ লেগেছে তার ব্যাটিং। পেস ও স্পিনে সমান দক্ষ সে। দুই ধরনের বোলিংয়েই সমান দক্ষ, এমন ওপেনার খুব কম পাবেন।’
আরেক ওপেনার মাহমুদুল হাসানের উইকেটে পড়ে থাকার দক্ষতা প্রধান কোচের চোখে পড়েছে, ‘জয়ের টেম্পারমেন্ট ভালো। তার রেকর্ডও বলে, সে যদি শুরু পেয়ে যায়, তাহলে বড় ইনিংস খেলে। দুজনই দলের জন্য খুবই ইতিবাচক দিক। আর আমি খুবই খুশি যে মুমিনুল রানে ফিরেছে।’
এ তো গেল টেস্টের কথা; বাংলাদেশের সামনে এখন অপেক্ষমাণ ওয়ানডে সিরিজের চ্যালেঞ্জ। আগামী ৫ জুলাই শুরু হতে যাওয়া তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের জন্য এর মধ্যেই শক্তিশালী দল ঘোষণা করেছে আফগানরা। যে দলে রশিদ খান, মুজিব উর রেহমান, মোহাম্মদ নবী, ফজলহক ফারুকির মতো আফগান তারকারা আছেন।
তবু হাথুরুসিংহের বিশ্বাস, শক্তিশালী আফগানদের বিপক্ষে এগিয়ে থাকবে বাংলাদেশ। তাঁর যুক্তি, ‘বোলিংয়ের দিক থেকে তারা সেরা দলগুলোর একটি। তাদের বোলিংটা একটা বড় হুমকি। পরিকল্পনা সাজানোর সময় আমরা এটি অবশ্যই মাথায় রাখব। তবে আমার মনে হয়, আমাদের ব্যাটসম্যানরা কিছুটা এগিয়ে থাকবে।’