দিনের দ্বিতীয় ওভারেই অসাধারণ এক কীর্তি গড়েছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আজই অভিষেক হওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার টিসেপো মোরেকি। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে বোলিং করতে এসে প্রথম ডেলিভারিতেই তিনি এলবিডব্লু করে ফিরিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের ওপেনার ডেভন কনওয়েকে। ২৪তম বোলার হিসেবে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম বলেই উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েছেন মোরেকি। এরপর ইনিংসের ১৭তম ওভারে আরেক ওপেনার টম ল্যাথামকে ফিরিয়েছেন ডেন পিটারসন।
ব্যস, ওই পর্যন্তই। দিনের পরের অংশটা শুধুই নিউজিল্যান্ডের। আরও নির্দিষ্ট করে বললে কেইন উইলিয়ামসন ও রাচিন রবীন্দ্রর। তৃতীয় উইকেটে ৪১৯ বলে অবিচ্ছিন্ন ২১৯ রানের জুটি গড়ে দিনটি নিউজিল্যান্ডের করে দিয়েছেন তাঁরা। প্রথম দিনে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে যে ৮৬ ওভার খেলা হয়েছে, তাতে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে ২৫৮ রান তুলেছে কিউইরা।
এমনিতে টেস্ট লড়াইয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকা একতরফা ছড়ি ঘুরিয়ে এসেছে। এর আগে দুই দল মুখোমুখি হয়েছে ১৭টি টেস্ট সিরিজে। এর মধ্যে ১৩টি সিরিজে জয় পেয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। বাকি ৪টি সিরিজ হয়েছে ড্র। তবে এবারের সিরিজটা দক্ষিণ আফ্রিকা শুরু করেছে ‘আন্ডারডগ’ হিসেবে।
এই সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকার আন্ডারডগ হয়ে খেলতে নামার কারণটা এখন প্রায় সবারই জানা। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার এই সিরিজের স্কোয়াডের ৮ জনই ছিলেন অভিষেকের অপেক্ষায়। তাঁদের মধ্যে আছেন অধিনায়ক নিল ব্র্যান্ডও। শেষ পর্যন্ত প্রথম টেস্টে ব্র্যান্ডসহ ৬ জনের অভিষেক হয়েছে। স্থানীয় ক্রিকেটাররা দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরোয়া ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ এসএ টি-টোয়েন্টি খেলতে বাধ্য বলেই নিয়মিত খেলোয়াড়দের এই সিরিজের দলে নেওয়া হয়নি।
তা দক্ষিণ আফ্রিকার এমন আনকোরা দল নিয়ে নিউজিল্যান্ডে খেলতে যাওয়ার কারণ যেটাই হোক, এ দলের শুরুটা যেমন হওয়ার কথা ছিল, প্রথম টেস্টের প্রথম সেশনটা তেমন ছিল না। প্রথম সেশনে ২৫ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৬৫ রান তোলে নিউজিল্যান্ড।
এ সময় মনে হচ্ছিল, টস জিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিং নেওয়ার সিদ্ধান্তটা ঠিকই ছিল। কিন্তু পরের দুই সেশনে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে রাজ করেছেন উইলিয়ামসন ও রবীন্দ্র। দুজনেই করেছেন শতক। উইলিয়ামসনের এটি টেস্ট ক্যারিয়ারের ৩০তম শতক, তিনি ছাড়িয়ে গেছেন ডন ব্র্যাডম্যান ও বিরাট কোহলির ২৯ টেস্ট শতককে। ২৫৯ বলে ১৫টি চারে ১১২ রান করে উইকেটে আছেন উইলিয়ামসন। টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথম শতক পাওয়া রবীন্দ্র অপরাজিত আছেন ২১১ বলে ১৩টি চার ও ১ ছয়ে ১১৮ রান করে।
যদিও উইলিয়ামসন ও রবীন্দ্র আউট হয়ে যেতে পারতেন শতকের আগেই; দুজনই ‘জীবন’ পেয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার রুয়ান ডি সোয়ার্টের বলে। রবীন্দ্রর ক্যাচ যখন পড়েছে, তিনি ছিলেন ৮০ রানে। আর উইলিয়ামসন জীবন পেয়েছেন আরও আগে, ৪৫ রানে।