খবরটা নতুন নয়। ২০২৩ এশিয়া কাপের মতো ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও পাকিস্তানে দল পাঠাবে না ভারত। নরেন্দ্র মোদি সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্ত আইসিসিকে ই–মেইলের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছে ভারতের ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। ভারতের এমন সিদ্ধান্তে যারপরনাই ক্ষুব্ধ পাকিস্তানের ক্রিকেট মহল।
দেশটির সাবেক ক্রিকেটাররা ভারত সরকারের পাকিস্তানে ক্রিকেট দল না পাঠানোর সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন। কেউ বলছেন, ‘ক্রিকেট নিয়ে ভারত তামাশা করছে’। কেউ বলছেন, ‘যথেষ্ট হয়েছে’। এখনই নমনীয় অবস্থান থেকে সরে আসতে হবে।
পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক রশিদ লতিফ ভারতের পাকিস্তানের মাটিতে খেলতে না চাওয়ার পেছনে রাজনৈতিক কারণই আসল বলে মনে করেন। পিটিআইকে সাবেক এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান বলেন, ‘যথেষ্ট হয়েছে। যখন সব দলই কোনো সমস্যা ছাড়া পাকিস্তানে খেলতে পারছে, তখন ভারতের এই সিদ্ধান্তটা পুরোপুরি রাজনৈতিক। এটা কোনো মতেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কা দলের ওপর হামলার পর টানা ছয় বছর নিরাপত্তা শঙ্কাকে সামনে এনে কোনো টেস্ট খেলুড়ে দেশ পাকিস্তানে খেলতে যায়নি। তবে গত কয়েক বছরে পরিস্থিতি পাল্টেছে। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ডসহ সব দেশই সেখানে খেলতে গেছে। বাকি আছে শুধু ভারত। দ্বিপক্ষীয় সিরিজ বন্ধ থাকলেও ২০২৩ সালে এশিয়া কাপ খেলতে পাকিস্তানে যাওয়ার কথা ছিল ভারতের। কিন্তু ভারত সরকার রাজি না হওয়ায় টুর্নামেন্টটি ‘হাইব্রিড মডেলে’ পাকিস্তানের পাশাপাশি শ্রীলঙ্কায় আয়োজন করা হয়।
এখন চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ঘিরে ভারতের একই ধরনের অবস্থান নিয়ে ত্যক্ত-বিরক্ত জাভেদ মিয়াঁদাদ। পাকিস্তানের সাবেক টেস্ট অধিনায়ক তাঁর দেশের ক্রিকেটকে ভারত ছাড়াই চলতে পরামর্শ দিয়েছেন, ‘যা চলছে, সেটা তামাশা। আমরা যদি আদৌ ভারতের সঙ্গে না–ও খেলি, পাকিস্তানের ক্রিকেট শুধু টিকেই থাকবে না, উন্নতিও করবে। যেটা অতীতেও দেখা গেছে।’
পাকিস্তানের হয়ে ১২৪ টেস্ট ও ২৩৩ ওয়ানডে খেলা মিয়াঁদাদ মনে করেন, আইসিসির আয়ের জন্য ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ হওয়া দরকার। এখন নিজেদের স্বার্থেই ভারতকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে পাকিস্তানে আনার ব্যবস্থা করা উচিত আইসিসির, ‘আমি দেখতে চাই ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ ছাড়া আইসিসি ইভেন্টে কীভাবে আয় হয়।’
ভারত সরকার ক্রিকেট দল না পাঠানোর কারণ হিসেবে প্রকাশ্য কিছু না বললেও দেশটির সংবাদমাধ্যম নিরাপত্তার কথা বলে আসছে। বর্তমান বাস্তবতায় যা সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ও পিসিবির প্রধান নির্বাচক ইনজামাম উল হক, ‘তারা (না এসে) ক্রিকেটের বড় একটা ইভেন্টকে বঞ্চিত করছে। পাকিস্তানের মাটিতে ভারতীয় দলের ওপর কোনো হুমকি নেই। বরং এখানে খেলতে এলে পরম আতিথেয়তাই পাবে।’
৮ বছর বিরতি দিয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পরবর্তী আসর শুরু হওয়ার কথা ২০২৫ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি। এই টুর্নামেন্টে অংশ নেবে ৮ দল।