এমন সুযোগ কজন পান!
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের দলেই ছিলেন না। স্টিভ স্মিথের চোটে আসে সে সুযোগ। স্কোয়াডে সুযোগ পেলেও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার একাদশে সুযোগ মেলেনি মারনাস লাবুশেনের। ছিলেন বদলি খেলোয়াড়ের তালিকায়। কিন্তু মাঠে নামলেন ‘কনকাশন সাব’ হিসেবে। আর সুযোগ পেয়েই করলেন বাজিমাত। কাল অপরাজিত ৮০ রানের ইনিংসে খাদের কিনারা থেকে জয় এনে দিয়েছেন দলকে।
এমন সুযোগ যে পাবেন লাবুশেন, স্বাভাবিকভাবেই সেটা তাঁর জানার কথা নয়। তবে এমনটা যে হতে পারে, সেটা লাবুশেনের মা নাকি জানতেন! না মানে, এমন কোনো ভবিষ্যদ্বাণী তিনি করেননি, তবে তাঁর আগে থেকেই মনে হচ্ছিল, প্রোটিয়াদের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে লাবুশেন খেলবেন।
যা ম্যাচ শেষে জানিয়েছেন লাবুশেন নিজেই, ‘(মা) দুর্দান্ত একজন নারী। পুরো ম্যাচেই মা ছিলেন। যদিও আমি ম্যাচের প্রথম সাড়ে তিন ঘণ্টা খেলিইনি। তাঁর মনে হচ্ছিল আমি খেলব। আমি এই ম্যাচ খেলব, এই ভাবনায় সে অনড় ছিলেন। আমি বলেছি, মা আমি একাদশ দেখেছি, আমি সেখানে নেই। তখনো তাঁর মনে হচ্ছিল আমি খেলব। তিনিই ঠিক। সত্যি বলতে এটা ব্যাখ্যা করা কঠিন।’
গতকাল ব্লুমফন্টেইনে জয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ছিল মাত্র ২২৩ রান। এই রান তাড়া করতে নেমে ১১.১ ওভারে মাত্র ৭২ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। ১১৩ রানে হারায় ৭ উইকেট। এই অবস্থা থেকে দলকে ৩ উইকেটের জয় এনে দিতে ৯৩ বলে অপরাজিত ৮০ রান করেছেন লাবুশেন।
গতকাল দুর্দান্ত খেলা লাবুশেনের ওয়ানডে ক্যারিয়ার অবশ্য ঠিক তাঁর হয়ে কথা বলছে না। এই ম্যাচের আগে সবশেষ ১৪ ইনিংসে লাবুশেনের গড় মাত্র ২২.৩০। সব মিলিয়ে ৩১ ওয়ানডেতে লাবুশেনের গড় ৩৪.৩৩। ১ সেঞ্চুরি ও ৭ ফিফটিতে মোট রান ৯২৭।
টেস্টে ৫৩ গড়ে রান করা ব্যাটসম্যানের কাছ থেকে যেটা মোটেই প্রত্যাশিত নয়। যে কারণে বাদ পড়েন অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ দল থেকেও। নিজের পারফরম্যান্সে হতাশ লাবুশেন বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়ায় মোটেই অবাক হননি।
তবে এমন একটা সুযোগের অপেক্ষাতেই তিনি ছিলেন, ‘যেভাবে আমি ওয়ানডে ক্রিকেটটা খেলেছি, তাতে আমি হতাশ। সবশেষ ১০ থেকে ১২ ম্যাচে, মনে হয়েছে আমার তাড়না ও সাহস যতটুকু দেখাতে চেয়েছি, ততটুকু দেখাতে পারিনি। তাই যখন বাদ পড়েছি, খুব বেশি অবাক হইনি। আমি নির্বাচকদের বলেছি, আমি বুঝেছি, আমি যথেষ্ট রান করিনি। তবে আমি এখনো অস্ট্রেলিয়ার মিডল অর্ডারে ব্যাটিং করতে চাই, সে কথাও বলেছি। এরপর আপনার সুযোগের অপেক্ষায় থাকতে হবে। যখন সুযোগ আসবে, কাজে লাগানোর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’