বেন স্টোকসকে ফিরিয়ে দেওয়ার পর আইরিশ বোলার ফিওন হ্যান্ডের উল্লাস
বেন স্টোকসকে ফিরিয়ে দেওয়ার পর আইরিশ বোলার ফিওন হ্যান্ডের উল্লাস

বৃষ্টি ও আয়ারল্যান্ডের কাছে হার ইংল্যান্ডের

বৃষ্টিতেই রক্ষা, বৃষ্টিতেই হার!

টি-টোয়েন্টিতে আজকের আগে একবারই মুখোমুখি হয়েছিল ইংল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ড। ২০১০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সে ম্যাচে ইংল্যান্ডকে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন আইরিশ বোলাররা। ইংল্যান্ডকে বেঁধে ফেলেছিল ১২০ রানে, তবে বৃষ্টির বাধায় ম্যাচ বাতিল হওয়ায় সে ম্যাচে সহজ লক্ষ্য পেয়েও জেতা হয়নি আয়ারল্যান্ডের।

কিন্তু আজ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেই বৃষ্টির জন্যই রান তাড়ায় সুবিধাজনক স্থানে থেকেও ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে আয়ারল্যান্ডের কাছে ৫ রানে হারল ইংল্যান্ড।

আয়ারল্যান্ডের ১৫৭ রান তাড়া করতে নেমে ইংল্যান্ড ১৪.৩ ওভারে তোলে ১০৫ রান। ডিএল নিয়মে ইংল্যান্ডের তখন প্রয়োজন ছিল ১১০ রান। যেহেতু দুই দলই অন্তত ৫ ওভার করে ব্যাট করেছে, তাই নিয়ম অনুযায়ী ম্যাচে ফল হবে। খেলা এরপর আর শুরু করতে না পারায় ডিএলএস নিয়মে ৫ রানের জয় পায় আইরিশরা।

টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে আয়ারল্যান্ডের শুরুটা হয় দুর্দান্ত। পল স্টার্লিং দলীয় ২১ রানে ফিরে গেলেও চাপে পড়েনি আয়ারল্যান্ড। অ্যান্ড্রু বলবার্নি ও লোরকান টাকারের ৫৭ বলে ৮২ রানের জুটিতে উল্টো চাপ পড়ে ইংল্যান্ড। পাওয়ারপ্লেতে আইরিশদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫৯ রান। অ্যান্ড্রু বলবার্নির দল ১০০ রানে পৌঁছায় ১১.২ ওভারে। তখনো হাতে ছিল ৯ উইকেট। অর্থাৎ আইরিশদের চোখ তখন ছিল ২০০ রানের বড় স্কোরের দিকে।

মেলবোর্নে বলবার্নিদের জয় উপভোগ করেন আইরিশ সমর্থকেরা

সে স্বপ্নে প্রথম ধাক্কাটা লাগে টাকারের রানআউটে। ২৭ বলে ৩৪ রানে রানআউট হন টাকার। জুটি ভাঙার পর আইরিশদের আরও চাপে ফেলতে মিডল ওভারেই অধিনায়ক বাটলার বল তুলে দেন দলের সেরা বোলার মার্ক উডের হাতে।

দারুণ ছন্দে থাকা উড হতাশ করেননি। ০ রানেই ফেরান হ্যারি টেক্টরকে। পরপর ২ উইকেট হারানোর পরও দলকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন অধিনায়ক বলবার্নি। তবে এখানেও অধিনায়ক বাটলারের করা ‘গ্যাম্বল’ কাজে লেগে যায়। অনিয়মিত স্পিনার লিয়াম লিভিংস্টোনের হাতে বল তুলে দিলে তিনি ফেরান ক্রিজে থিতু থাকা বলবার্নিকে। পরের বলেই বোল্ড করেন জর্জ ডকরেলকে। শেষ দিকে আয়ারল্যান্ডের কেউই ক্রিজে এসে থিতু হতে পারেননি। তাই বড় স্কোর গড়ার সম্ভাবনা জাগিয়েই তাদের থেমে যেতে হয় ১৫৭ রানে। বলবার্নি করেন ৪৭ বলে ৬২ রান। ইংল্যান্ডের হয়ে উড ও লিভিংস্টোন নেন ৩টি করে উইকেট।

ব্যাটিং ইনিংসের মতো বল হাতেও দারুণ শুরু করে বলবার্নির দল। জশ লিটলের করা ইনিংসের দ্বিতীয় বলে কাভার ড্রাইভ খেলতে গিয়ে কিপারের হাত ক্যাচ দেন বাটলার। অ্যালেক্স হেলসকেও ফেরান লিটল। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিজেকে হারিয়ে খোঁজা বেন স্টোকসও দলকে উদ্ধার করতে পারেননি। ব্যক্তিগত ৬ রানে ফিওনা হ্যান্ডের বলে বোল্ড হয়ে দলকে আরও বিপদে ফেলেন।

জস বাটলার টিকতে পারেননি উইকেটে

সেখান থেকে ইংল্যান্ডকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন হ্যারি ব্রুক ও ডেভিড ম্যালান। প্রথম ১০ ওভারে ইংল্যান্ড তোলে ৩ উইকেটে ৬৩ রান। শেষ ১০ ওভারে ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ৯৫ রান। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে শেষ ১০ ওভারে ৯৫ রান, ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনআপের জন্য খুব কঠিন কিছু ছিল না। তবে দিনটাই ছিল আয়ারল্যান্ডের।

এমন সময়ে ডকরেলের বলে টানা ২ বলে ব্রুক ও ম্যালানের ক্যাচ ফেলে দেয় আয়ারল্যান্ড। তবে দিনটাই ছিল আয়ারল্যান্ডের। তাই ক্যাচ মিসের মাশুল গুনতে হয়নি তাদের। ডকরেলের করা ওভারের প্রথম বলে ব্রুক একবার জীবন পেলেও সেটা কাজে লাগাতে পারেননি। ওভারের চতুর্থ বলে মিড উইকেটে গ্যারেথ ডেলানির হাতে ধরা পড়েন ব্রুক। ম্যাচে আরও অনেকটা পিছিয়ে পড়ে ইংল্যান্ড। ইনিংসের ১৪তম ওভারে ফেরেন ম্যালানও।

জয়ে এগিয়ে গেল আয়ারল্যান্ড

ইংল্যান্ডের শেষ ৬ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৬৫ রান। ক্রিজে ছিলেন মঈন আলী ও লিয়াম লিভিংস্টোন। এমন সমীকরণে দাঁড়িয়ে ম্যাচ জেতাতে ইংল্যান্ডের মিডল অর্ডার ভালোভাবেই জানে। মঈন ১৫তম ওভারের শুরুটাও করেছিলেন এমন। প্রথম ৩ বলেই মঈন তুলে নেন ১২ রান। তখনই বাদ সাধে বৃষ্টি। ১৪.৩ ওভারে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১০৫ রান।

কিন্তু ডাকওয়ার্থ–লুইস পদ্ধতিতে ইংল্যান্ডের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১১০ রান। তাই অনেকটা এগিয়ে থাকার পরও ৫ রানে হারতে হয় ইংল্যান্ডকে।