সাকিব আল হাসান এখন থেকে জাতীয় দলের হয়ে খেলায় বেশি মনোযোগ দেবেন—সাকিবের মুখ থেকেই কথাটা শুনে দারুন খুশি বিসিবি। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আজ সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সেই খুশির অনুভূতি প্রকাশ করেছেন বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা প্রধান জালাল ইউনুস। একই সঙ্গে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, তিন সংস্করণের ক্রিকেটে এখনো সাকিবই বিসিবির অধিনায়ক।
ভারত বিশ্বকাপের আগে একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাকিব বলেছিলেন, বিশ্বকাপের পর তিনি আর অধিনায়কত্ব করবেন না। তবে এখন পর্যন্ত বিষয়টা ওই পর্যন্তই। অধিনায়কত্ব না করার ব্যাপারে তিনি বিসিবিকে কিছু জানাননি। আঙুলের চোটের কারণে বিশ্বকাপের মাঝপথে দেশে ফিরে আসা সাকিব পরে খেলতে পারেননি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে, যাননি ওয়ানডে ও টি–টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে নিউজিল্যান্ড সফরেও। এই দুই সিরিজেই বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব দেওয়া হয়েছে নাজমুল হোসেনকে।
তাতে ভবিষ্যৎ অধিনায়ক হিসেবে নাজমুলের পরীক্ষাটা হয়তো হয়ে যাচ্ছে। তবে জালাল ইউনুস বলেছেন, ‘সাকিব এখনো আমাদের অধিনায়ক। এখন আমরা শান্তকে (নাজমুল) দায়িত্ব দিয়েছি। তাকে বলেছি শুধু দুইটা সিরিজ, নিউজিল্যান্ড সিরিজের জন্য তাকে অধিনায়কত্ব দিয়েছি। আপনারা জানেন সাকিবকে লম্বা সময়ের জন্য অধিনায়কত্ব দেওয়া হয়েছে। সব সংস্করণে এখনো সে অধিনায়ক। সাকিব ফিরে এলে আমরা ধরে নিচ্ছি সাকিবই অধিনায়ক থাকবে।’
আসলে সাকিব অধিনায়ক আছেন কি নেই, সেই প্রশ্নেরই কোনো যুক্তি দেখেন না জালাল ইউনুস। তিনি বলেছেন, ‘সামনে সে অধিনায়ক থাকবে কি থাকবে না, এ রকম প্রশ্ন কিন্তু ওঠে না। আমরা জানি, সে–ই এখনো অধিনায়ক। আমরা যেহেতু তাকে অলরেডি ম্যান্ডেড দিয়েছি, আমরা চাই সে বাকিগুলোতে নিজেই ক্যাপ্টেন থাকুক।’
সাকিব খেললে এবং অধিনায়কত্ব করতে রাজি থাকলে তাঁর কাঁধে নেতৃত্ব তুলে দিতে বিসিবি সব সময়ই আগ্রহী। সাকিব যেহেতু বিদেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে আর না খেলার ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, জাতীয় দলেই এখন থেকে বেশি মনোযোগ দেবেন, স্বাভাবিকভাবে বিসিবিও চাইবে তিনিই তিন সংস্করণের নেতৃত্ব দিন।
কাল যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের এক সভায় বলা সাকিবের ওই কথাকে ‘আনন্দের ব্যাপার’ বলে মন্তব্য করেছেন জালাল ইউনুস, ‘আমি তার বক্তব্য মিডিয়াতে দেখেছি। অবশ্যই এটা আনন্দের ব্যাপার যে এখন সে বাইরের ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের চেয়ে দেশের ক্রিকেটে বেশি মনোযোগ দেবে। এটা আমাদের জন্য বড় একটা স্বস্তিদায়ক খবর। আমরা চাই, সাকিব যতগুলো সংস্করণ আছে, আমাদের দেশের জন্য খেলুক।’
সাকিব অবশ্য এটাও জানিয়ে রেখেছেন যে ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পর হয়তো আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলবেন না। সে ক্ষেত্রে বিসিবি এখনো সাকিবকে অধিনায়ক ভাবলেও ভবিষ্যতের চিন্তাটাও মাথায় রাখতে হচ্ছে। নাজমুল হোসেন আর মেহেদী হাসান মিরাজই যে সেই সম্ভাব্য, তা আগেও বিসিবি থেকে বলা হয়েছে।
আজ ক্রিকেট পরিচালনা প্রধান আবার বললেন, ‘একটা সময় তো আসবে সাকিব আর খেলা চালিয়ে যাবে না। হয়তো কোনো সংস্করণ কমিয়ে দেবে। আমাদের হাতে শান্ত (নাজমুল) আছে, মিরাজ আছে; আমরা যাদের সম্ভাবনাময় অধিনায়ক বলি। বোর্ড মনে করে বাংলাদেশ দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো সামর্থ্য তাদের দুজনেরই আছে।’