দক্ষিণ আফ্রিকার কম ম্যাচ খেলা নিয়ে আক্ষেপ করেছেন দলটির মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হাইনরিখ ক্লাসেন। ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মতো দলগুলোর তুলনায় বছরজুড়ে কম ম্যাচই খেলে প্রোটিয়ারা। এমন অবস্থায় দলের আরও ভালো ফল পেতে বেশি ম্যাচ খেলার আকুতি শোনা গেছে ক্লাসেনের কণ্ঠে। ক্লাসেনের মতে, কম ম্যাচ খেলাটা ‘হাস্যকর’ এবং ‘বিরক্তিকর’।
বুধবার রাতে সেঞ্চুরিয়নে ভারতের বিপক্ষে চার ম্যাচ টি–টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয়টি খেলে দক্ষিণ আফ্রিকা। খেলা শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ সংখ্যাসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন ক্লাসেন।
সেঞ্চুরিয়নের ম্যাচটিতে ভারতের কাছে ১১ রানে হেরে সিরিজে ২–১ ব্যবধানে পিছিয়ে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আগামীকাল সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে হারলে সিরিজও হারবে দলটি। সে ক্ষেত্রে প্রোটিয়াদের দুই বছর ধরে দ্বিপাক্ষীয় সিরিজ জিততে না পারার হতাশাটা আরও দীর্ঘায়িত হবে।
২০২২ সালের আগস্টে আয়ারল্যান্ডকে ২–০ ব্যবধানে হারানোর পর টি–টোয়েন্টিতে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ জেতেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। ক্লাসেনের কথায় উঠে এসেছে সিরিজে কম ম্যাচ থাকার প্রসঙ্গও, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট কোথায় দাঁড়িয়ে আছে, সেটাই ফুটে উঠছে এতে। আমরা এখন আর ৫ ম্যাচের সিরিজ খেলি না। কী দারুণ ব্যাপারই–না হবে যদি শুক্রবার আমরা জিতে ২–২ সমতা আনতে পারি এবং এরপর রোববার আরেকটি ম্যাচ থাকত।’
আগামীকালের ম্যাচটি জিতলে ভারত ৩–১ ব্যবধানে সিরিজও জিতে নেবে। তবে ক্লাসেন সে দিকটি নিয়ে ভাবছেন না। তিনি অখুশি মূলত দক্ষিণ আফ্রিকা কত কম ম্যাচ খেলছে, তা নিয়ে, ‘আমাদের দলের টেস্ট সিরিজগুলো হয় দুই ম্যাচের, যা হাস্যকর। এটা খেলোয়াড়েরা ভালোভাবে নিতে পারছে না। কারণ, তারা আরও বেশি ক্রিকেট খেলতে চায়। অন্য দেশগুলোর মতো করেই তারা খেলতে চায়। কিন্তু আমরা সব সময় দেখি দুই বা তিন ম্যাচের সিরিজ। এটা বিরক্তিকর।’
ক্লাসেন নিজে অবশ্য এই বছর জানুয়ারিতে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন। তবে অন্য দুই সংস্করণে তিনি নিয়মিত, দলের অন্যতম নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যানও। দক্ষিণ আফ্রিকা অবশ্য ওয়ানডে আর টি–টোয়েন্টিও খুব বেশি খেলার সুযোগ পায় না। দক্ষিণ আফ্রিকা এখন পর্যন্ত ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছে মাত্র দুবার, ভারতের বিপক্ষে ২০২২ সালে এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০২১ সালে। এ ছাড়া ৪ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছে একবার, ২০২১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে।
ওয়ানডেতেও পরিস্থিতি প্রায় একই। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগে ঘরের মাঠে ৫ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলার বিষয়টি বাদ দিলে, ২০১৯ সালের মার্চের পর তাদের ওয়ানডে সিরিজগুলো ৩ ম্যাচেই সীমাবদ্ধ। আর টেস্টে ২০২২-২৩ মৌসুমের পর তিন ম্যাচের আর কোনো সিরিজ খেলতে দেখা যায়নি দক্ষিণ আফ্রিকাকে। এমনকি ২০২৬ সালের ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া সিরিজের আগপর্যন্ত তাদের আর কোনো তিন টেস্টের সিরিজও সূচিতে নেই।
অন্যদের সঙ্গে তুলনা করলে দক্ষিণ আফ্রিকার পিছিয়ে থাকার চিত্রটা আরও স্পষ্ট হয়। গত বছরের আগস্ট থেকে ভারত তিনটি ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছে (ওয়েস্ট ইন্ডিজ, অস্ট্রেলিয়া ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে)। টেস্টেও তাদের সূচি বেশ ব্যস্ততাময়। যেমন আগামী ৮ মাসের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতের ৫ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ আছে দুটি।
এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বোর্ডার–গাভাস্কার ট্রফি শুরু হবে ২২ নভেম্বর। ভারতের টানা ম্যাচ খেলার বিষয়টি সামনে এনে ক্লাসেন বলেছেন, ‘আপনারা দেখেন ভারত এই শুক্রবারে খেলছে, আবার পরের শুক্রবারেও খেলবে। এটা অবিশ্বাস্য।’