এক বছর ধরে ক্রিকেটে টালমাটাল সময় গেছে বিরাট কোহলির। টি-টোয়েন্টি ও টেস্ট দলের নেতৃত্ব ছেড়েছেন নিজে, এর মধ্যে ওয়ানডের নেতৃত্ব থেকে তাঁকে সরিয়ে দিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। এর সঙ্গে যোগ হয়েছিল লম্বা রানখরা।
সব মিলিয়ে মানসিকভাবে এত বিপর্যস্ত হয়ে পড়া কোহলি কিছুদিনের জন্য জাতীয় দল থেকে বিশ্রাম নেন। টানা এক মাস হাতে ব্যাটই নেননি।
অস্বস্তিকর সেই সময় পার করে কোহলি খেলতে এসেছেন এশিয়া কাপে। তিনটি ম্যাচ খেলে ফেলেছেন। ব্যাটে আবার ফিরে পেয়েছেন রান। সব মিলিয়ে এখন আবার খেলাটা উপভোগ করছেন কোহলি। কথা বলেছেন পেছনে কাটিয়ে আসা দুঃসময়টা নিয়েও। সেই সময় কাকে পাশে পেয়েছেন আর কাকে পাননি, সেসবও বলেছেন তিনি।
বিশ্রাম কাটিয়ে ফেরা কোহলি প্রথম ম্যাচটি খেলেছেন পাকিস্তানের বিপক্ষে। সেই ম্যাচে ৩৪ বলে করেছেন ৩৫ রান। হংকংয়ের বিপক্ষে পরের ম্যাচে পেয়েছেন ফিফটি। ৪৪ বলে অপরাজিত ৫৯ রানের ইনিংসে ছিল তাঁর স্বরূপে ফেরার ইঙ্গিত। আর কাল সুপার ফোরের ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে হেরে যাওয়া ম্যাচে তো স্বমহিমায়ই দেখা দিয়েছেন কোহলি। ৪টি চার ও ১টি ছয়ে ৪৪ বলে করেছেন ৬০ রান।
দুবাইয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে আসেন কোহলি। সেখানে তিনি নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন।
রানখরা নিয়ে কোহলির কথা ছিল এ রকম, ‘ব্যাট স্পর্শ না করে এক মাস কাটিয়ে দেব—এমনটা কখনো ভাবিনি। তবে পরিস্থিতিটা ও রকম হয়ে গিয়েছিল। আমাকে বিরতি নিতে হয়েছে। এই বিরতি আসলে শারীরিকের চেয়ে মানসিকই বেশি ছিল। আমার খারাপ থাকা নিজের বা দলের, কারও জন্যই ভালো নয়। তবে এই মুহূর্তে আমি খুশি। আবার ক্রিকেট খেলতে উদ্দীপনা বোধ করছি, ভালো লাগছে।’
এ বছরের জানুয়ারিতে টেস্ট অধিনায়কত্ব ছেড়েছিলেন কোহলি। ওই সময় একজন ছাড়া কেউই তাঁর পাশে থাকেননি বলে মন্তব্য করেছেন ‘আমি যখন টেস্টের অধিনায়কত্ব ছাড়লাম, মাত্র একজন মানুষের কাছ থেকে আমি বার্তা পেয়েছিলাম, যাঁর সঙ্গে আমি আগে খেলেছি—এম এস ধোনি।’
সমালোচকদের উদ্দেশে কোহলি এরপর বলেন, ‘অনেকে টিভিতে অনেক পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁদের অনেকের কাছেই আমার ফোন নম্বর আছে। কেউই একটা বার্তাও দেয়নি।’
সাবেক ক্রিকেটার ও ক্রিকেট–বিশ্লেষকদের মধ্যে যাঁরা গত এক বছরে তাঁর ফর্ম নিয়ে কথা বলেছেন, তাঁদের ইঙ্গিত করে কোহলির মন্তব্য, ‘আপনি যদি সারা দুনিয়াকে সামনে রেখে পরামর্শ দেন, আমার কাছে সেটার কোনো মূল্য নেই। আমার উন্নতির জন্য কিছু বলতে চাইলে আলাদাভাবে আমার সঙ্গে কথা বলুন, এমনটাই আমি চাই।’
২০০৮ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখার পর ১৪ বছর পেরিয়ে গেছে কোহলির।
এখন আর সমালোচকদের মন্তব্য খুব একটা গায়ে মাখেন না বলে জানান তিনি, ‘আমার কাজ হচ্ছে পরিশ্রম করা, দলের জন্য ১২০ শতাংশ দেওয়া। যত দিন দল আমার ওপর আস্থা রাখবে, তত দিন দলের বাইরে কী হচ্ছে, এটা নিয়ে আমি ভাবি না। সবারই নিজের মতামত আছে। নিজের ওপর আমি প্রত্যাশার চাপও দিতে চাই না। আমার খেলাটা উপভোগ করা দরকার।’