আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন তামিম ইকবাল। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে ধবলধোলাই করার পর নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজের এক পোস্টে এ ঘোষণা দেন তিনি। ছয় মাসের স্বেচ্ছা বিরতি শেষ হওয়ার আগেই সরে দাঁড়ালেন তিনি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে এ প্রসঙ্গে কোনো কিছু বলেননি তামিম। তবে সংবাদ সম্মেলন শেষ হওয়ার কয়েক মিনিট পরই নিজের ফেসবুক পেজ থেকে আসে অবসরের ঘোষণা। ফেসবুকের ওই পোস্টে তামিম লিখেছেন, ‘আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে আজকে থেকে আমাকে অবসরপ্রাপ্ত হিসেবে বিবেচনা করুন। ধন্যবাদ সবাইকে।’
২০২০ সালের মার্চে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলেছিলেন এ বাঁহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। চোটের কারণে এরপর বেশ কিছু দিন বাইরে থাকতে হয় তাঁকে। এরপর তরুণদের সুযোগ করে দিতে ও প্রস্তুতির ঘাটতির কারণ জানিয়ে গত বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন তিনি।
গত জানুয়ারিতে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান বলেছিলেন, তামিম টি-টোয়েন্টি খেলতে চান না বলে তাঁকে জানিয়েছেন। এরপরই টেস্ট ও ওয়ানডেতে মনযোগ দেওয়ার কথা বলে এ সংস্করণ থেকে ছয় মাসের বিরতি নিয়েছিলেন তামিম।
অবশ্য গত এপ্রিলে প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে আর না ফেরার আভাস দিয়েছিলেন তামিম। তিনি বলেছিলেন, ‘কমবেশি তো আপনারাও বুঝতে পারছেন বিষয়টা কোন দিকে যাচ্ছে। নিশ্চয়ই কিছু কারণ ছিল বলেই আমি ছয় মাসের বিশ্রামের কথা বলেছি। কিন্তু এটা তো রকেটবিজ্ঞান নয় যে কেউ বুঝবে না কী হতে যাচ্ছে। ...বিশেষ করে, টি–টোয়েন্টি নিয়ে আমার ভাবনা কী, সে ব্যাপারে বোর্ড এবং নির্বাচকেরা এখন পুরোপুরি পরিষ্কার, তাঁরা জানেন আমি কী চাই, না চাই। তারপরও সামনে আমি আবারও ক্রিকেট বোর্ডকে জানিয়ে দেব, আমি আসলে কী চিন্তা করছি। তারপর আনুষ্ঠানিকভাবে আপনাদের জানাব।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের আগে তামিমের টি-টোয়েন্টি ভবিষ্যত নিয়ে শুরু হয় নতুন বিতর্ক। এরপর এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তামিম বলেন, ‘বোর্ডের সঙ্গে আমার যোগাযোগ নিয়মিতই আছে এবং তারা খুব ভালোভাবেই জানে, টি-টোয়েন্টি নিয়ে আমার ভাবনা কোনটি। আমি স্রেফ নিজে সেই কথাটুকু বলতে চাই, সেই সময়টুকু চাই। সময় হলে আমার সিদ্ধান্ত নিশ্চয়ই আমি জানাব। ৬ মাস হতে তো এখনও দেড় মাসের বেশি বাকি। কিন্তু সেই সময়টার অপেক্ষা কেউ করছে না। এটাই দুঃখজনক।’
অবশ্য সেই ছয় মাসের বিরতি শেষ হয়নি এখনো। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টেস্ট সিরিজে খেলার পর তামিম সেখানে থাকলেও টি-টোয়েন্টিতে স্বাভাবিকভাবেই খেলেননি। এবার অবসরের ঘোষণাই দিলেন।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে তামিমের অভিষেক ২০০৭ সালে, কেনিয়ার বিপক্ষে। এ সংস্করণে ৭৮ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশের হয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৭৫৮ রান করেছেন তিনি ২৪.০৮ গড় ও ১১৬.৯৬ স্ট্রাইক রেটে। ৭টি অর্ধশতকের সঙ্গে ১টি শতকও আছে তাঁর। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ধর্মশালায় ওমানের বিপক্ষে তামিম খেলেছিলেন অপরাজিত ১০৩ রানের ইনিংস। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে কোনো বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানের একমাত্র শতক হয়ে আছে সেটি।
সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে সবকটি আসরেই খেলেছিলেন তামিম। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ (৫১৪) রান তাঁর।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের পর জিম্বাবুয়ে সফর, এশিয়া কাপ, নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ। এরপর আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ায় হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।