সুপার এইটে উঠতে বাংলাদেশকে ম্যাচটি জিততেই হবে। অন্যদিকে নেপালের হারানোর কিছু নেই। গ্রুপ পর্ব থেকে তাদের বাদ পড়া নিশ্চিত হয়েছে আগেই। সে কারণেই ম্যাচটি বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে বাংলাদেশের জন্য।
নেপালের কোচ মন্টি দেশাই গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, অন্য কারও উৎসব পণ্ড না করে তাঁরা নিজেদের গল্পটাকেই আরও এগিয়ে নিতে চান। অন্তত একটি জয় নিয়ে বাড়ি ফিরতে চায় নেপাল। আর সেই জয়ের খোঁজটা যে তাঁরা বাংলাদেশের বিপক্ষে করবেন, সেটি না বললেও চলে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এটাই নেপালের শেষ ম্যাচ।
তবে নেপাল জিতলে এই ম্যাচটা হয়ে যেতে পারে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের জন্যও শেষ ম্যাচ। অন্য ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নেদারল্যান্ডস জিতলে রান রেটের মারপ্যাঁচে পড়তে হবে বাংলাদেশকে। সে কারণেই নেপালের সঙ্গে ম্যাচ জয়টা জরুরি বাংলাদেশের জন্য। আর এই ম্যাচে বাংলাদেশের বড় ভরসা হয়ে উঠতে পারেন সাকিব আল হাসান।
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচে ৬৪ রানে অপরাজিত থেকে ফর্মে ফেরার আভাস দিয়েছেন সাকিব। কাজেই কাল সাকিবের জন্য নেপালের বিশেষ কৌশল থাকবে স্বাভাবিক। নেপাল কোচ মন্টি দেশাইও সংবাদ সম্মেলনে সে রকমই আভাস দিয়েছেন। কিন্তু কৌশলটা কী, স্বাভাবিকভাবেই সেটি জানাননি।
সংবাদ সম্মেলনে মন্টির কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, সাকিবকে নিয়ে আলাদা কোনো পরিকল্পনা আছে কি না? উত্তরে নেপাল কোচ শুরুতে সাধারণ কৌশলের কথাই বলেছেন, যেগুলো টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এমনিতেই থাকে, ‘এখন তো প্রচুর ফুটেজ ও তথ্য পাওয়া যায়, যার মাধ্যমে সবাই বিশেষ পরিকল্পনা করে থাকে। যেমন ধরুন, বাঁহাতির বিপক্ষে অফস্পিন নিয়ে আসা, একটি নির্দিষ্ট চ্যানেল ধরে বলা করা। তবে আমি মনে করি, সাকিবের বিশাল অভিজ্ঞতা এবং তাকে যে বল করবে, এ দুজনের মধ্যে (ভালো করার) ক্ষুধাটাই পার্থক্য গড়ে দেবে।’
মন্টি এরপর সাকিবের অভিজ্ঞতা সম্পর্কেও বললেন, ‘সব সংস্করণ যোগ করলে আমার মনে হয় ৩০০–এর বেশি ম্যাচ হবে তার। আর সে জাতির (দলের) নেতাও।’ সাকিবের বিপক্ষে ভালো করতে নেপালের সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের উদাহরণও টানলেন মন্টি, ‘আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিশ্চিত করতে চাই। গতকাল দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উইকেট আমরা নিয়েছি। এই (বাংলাদেশ ম্যাচ) চ্যালেঞ্জটাও একই রকম।’ তবে মন্টি এরপর বললেন আসল কথাটা, ‘সাকিবের বিপক্ষে আমরা কী পরিকল্পনা করছি, সেটি প্রকাশ করব না। তবে আমরা অনেক রকম পরিকল্পনা নিয়েই ভেবেছি।’
বাংলাদেশের জন্য জয়টা গুরুত্বপূর্ণ বলে এই ম্যাচে নাজমুল হোসেনের দলের ওপরই চাপ বেশি। আর নেপালেরও যেহেতু হারানোর কিছু নেই, শেষ ম্যাচে মরণকামড় দিতে চাইবে তারা। সংবাদ সম্মেলনে মন্টি বলেছেন, ‘আমরা নিজেদের গল্পটা তৈরি করছি। অন্য কারও উৎসব পণ্ড করার কথা ভাবছি না। তবে ড্রেসিংরুমে যে বার্তা দেওয়া হয়েছে, সেটা হলো আমরা এখনো সেই কল্পনার জগতে বসবাস করতে চাই, যেখানে বিশ্বাস করি, গতকাল (দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে) আমরা জিতেছি। এভাবে আমরা বাংলাদেশের বিপক্ষেও ৩ পয়েন্ট নিতে চাই, যারা সুপার এইটে ওঠার জন্য খেলবে। আগামীকাল এই মানসিকতায় মাঠে নেমে লড়াই করলে আমরা অন্তত গর্বের কিছু মুহূর্ত নিয়ে ফিরতে পারব...হ্যাঁ, আমরা কিছু করে দেখাতে চাই।’
কিংসটাউনে আগামীকাল বাংলাদেশ সময় ভোর সাড়ে পাঁচটায় শুরু হবে ম্যাচটি।