প্রথম ওভারে রান খরচ করলেন ১৫। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম ৩ বলে দিলেন আরও ১০। রোহিত শর্মা সাকিব আল হাসানের বলে রান তুলতে চাইলেন আরও। তাতেই নিজের বিপদ ডেকে এনেছেন।
সাকিব পরের বলটির লেংথ কমিয়ে আনেন। জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন রোহিত। রোহিতকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে ব্রেকথ্রু এনে দেওয়ার সঙ্গে অনন্য এক রেকর্ডও গড়েছেন সাকিব। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম বোলার হিসেবে নিয়েছেন ৫০ উইকেট।
সাকিব টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু করেছিলেন ৪৭ উইকেট নিয়ে। ৫০ উইকেটের মাইলফলক আরও আগেই ছোঁয়ার কথা তাঁর। তবে বল হাতে সময়টা এবারের বিশ্বকাপে মোটেই ভালো কাটেনি তাঁর। বিশ্বকাপে নিজের প্রথম তিন ম্যাচেই ছিলেন উইকেটশূন্য। উইকেটের দেখা পেয়েছিলেন গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে।
সেটাও ইনিংসের ২০তম ওভারে। পরপর দুই বলে আউট করেন দুই পেসার—সোমপাল কামি ও অবিনাশ বোহরাকে। এরপর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে বল করার সুযোগ পাননি সাকিব। সেই অর্থে বলা যায়, এবারের বিশ্বকাপে এই প্রথম বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যানের উইকেট পেয়েছেন সাকিব।
সাকিবের ৫০ উইকেট রেকর্ড আপাতত কেউ ছুঁতেও পারছেন না। কারণ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শীর্ষ ৫ উইকেটশিকারির মধ্যে একমাত্র ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ছাড়া বাকি সবাই অবসর নিয়েছেন। বিশ্বকাপে তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হাসারাঙ্গার উইকেট ৩৭টি। তবে এবারের বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেছে শ্রীলঙ্কা। বিশ্বকাপে টিকে আছেন, এমন ক্রিকেটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ উইকেট অস্ট্রেলিয়ার লেগ স্পিনার অ্যাডাম জাম্পার, ৩৪টি। অর্থাৎ এবারের বিশ্বকাপে কেউ সাকিবকে ছুতে পারছেন না, সেটা নিশ্চিত।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সাকিবের প্রথম উইকেট দিনেশ রামদিন, ২০০৭ সালে। বিশ্বকাপে সাকিব সবচেয়ে বেশি উইকেট নিয়েছেন ওমানের বিপক্ষে। ২ ম্যাচে ওমানের বিপক্ষে সাকিব উইকেট পেয়েছেন ৭টি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫টি করে উইকেট অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ৪টি করে উইকেট আছে পাকিস্তান ও পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে।
তাঁর সেরা বোলিংও এই পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষেই। ২০২১ বিশ্বকাপে তাদের বিপক্ষে মাত্র ৯ রান খরচায় ৪ উইকেট নিয়েছিলেন সাকিব। সব মিলিয়ে বিশ্বকাপে নিজের ইকোনমি রেট নিয়েও গর্ব করতে পারেন সাকিব—৬.৮৯।
টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে বিশ্বকাপ মিলিয়ে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির তালিকায় তিন নম্বরে আছেন সাকিব। ৭৮ ম্যাচে সাকিবের উইকেট ৯৩। দুই নম্বর অবস্থানে থাকা লঙ্কান পেসার লাসিথ মালিঙ্গার চেয়ে মাত্র ১ উইকেটে পিছিয়ে আছেন সাকিব। মালিঙ্গার উইকেট ৬০ ম্যাচে ৯৪টি। বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি উইকেট মিচেল স্টার্কের। ৫২ ম্যাচে তাঁর উইকেট ৯৫টি।
৯৩ উইকেটের মালিক সাকিব বিশ্বকাপে উইকেটের সেঞ্চুরি করতে পারবেন কি না, সেটা একটা প্রশ্ন। কারণ, সাকিব আছেন ক্যারিয়ারের শেষ পর্যায়ে। এরপর আর কোনো বিশ্বকাপে তাঁকে না দেখার সম্ভাবনাই বেশি। পরের ওয়ানডে বিশ্বকাপ ২০২৭ সালে, আর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২৬ সালে। চলতি বিশ্বকাপেই পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন ওঠা সাকিব কি তত দিন খেলবেন?