কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস ও রংপুর রাইডার্স—দুই দলই এ ম্যাচে নেমেছিল সমান ৪ পয়েন্ট করে নিয়ে। কুমিল্লা এসেছিল নিজেদের ঝুলিতে টানা দুই জয় নিয়ে। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আজমতউল্লাহ ওমরজাই ও নুরুল হাসানের শেষের ঝড়ে লাফ দেওয়া রংপুর টপকে গেল সেই কুমিল্লাকে। রংপুরের দেওয়া ১৬৬ রানের লক্ষ্যে কুমিল্লা আটকে গেছে ১৫৭ রানে। এ জয়ে পয়েন্ট তালিকায় তিনে উঠে এসেছে ৫ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট পাওয়া রংপুর।
টসে জিতে ব্যাটিং নেওয়া রংপুর প্রথম ৬ ওভারে ব্র্যান্ডন কিংয়ের উইকেট হারিয়ে তোলে ৪৭ রান। বাবর আজম ও ফজলে মাহমুদ দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৫৫ রান তুললেও লাগে ৪৬ বল। দুজনই ৩০ ছুঁয়েছেন, কিন্তু ৪০ পর্যন্ত যেতে পারেননি কেউ। ৩৬ বলে ৩৭ রান করে খুশদিল শাহর বলে বোল্ড হন বাবর, মোস্তাফিজুর রহমানের বলে জাকের আলীর হাতে ক্যাচ দেন ২১ বলে ৩০ রান করা মাহমুদ।
মাঝের ওভারে শামীম হোসেনের পর মোহাম্মদ নবীরও উইকেট নিয়ে নিয়ন্ত্রণ রেখেছিল কুমিল্লা। কিন্তু সব ওলটপালট করে দেন ওমরজাই। নবীকে নিয়ে ১৪ বলে ৩৫ রানের পর নুরুলের সঙ্গে ৯ বলে ২১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি তাঁর। শেষ ৩ ওভারে রংপুর তোলে ৫২ রান, এর মধ্যে মোস্তাফিজের শেষ ২ ওভারেই আসে ৩৯ রান। ৪ ওভারে ৪৮ রান দিয়ে বোলিং শেষ করেন তিনি, ক্যারিয়ারে এক ইনিংসে এর চেয়ে বেশি রান এ বাঁহাতি পেসার দিয়েছেন মাত্র চারবার। ২০ বলে ৩৬ রানের ইনিংসে ওমরজাই মারেন ৩টি চার ও ২টি ছক্কা, ১টি করে চার ও ছক্কায় ৬ বলে ১৫ রান নুরুলের।
রান তাড়ায় ইনিংসের তৃতীয় বলেই ওমরজাইয়ের শিকার অধিনায়ক লিটন পান ‘গোল্ডেন ডাক’। পাওয়ারপ্লেতে এরপর আর উইকেট না হারালেও ৩৬ রানের বেশি তুলতে পারেনি কুমিল্লা। মাহিদুল ইসলাম অবশ্য তাদের লড়াইয়ে রাখেন ঠিকই।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে মোহাম্মদ রিজওয়ানকে নিয়ে ৫৬ বলে ৬৫ রান তোলেন তিনি, তাতে রিজওয়ান ছিলেন সহকারীর ভূমিকাতেই। পাকিস্তানি তারকা অবশ্য থামেন অসময়ে, নবীকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ তোলেন ২১ বলে ১৭ রান করে। রিজওয়ানের পর মাহিদুলকে সঙ্গ দেন তাওহিদ হৃদয়। ৪০ বলে ৫৩ রানের সে জুটি ভাঙে মাহিদুলের উইকেটেই, হাসান মাহমুদকে তুলে মারতে গিয়ে মিড অনে তিনি ধরা পড়েন ৫৫ বলে ৪ ছক্কা ও ৩ চারে ৬৩ রান করে।
কুমিল্লার ইনিংস এগিয়েছে রংপুরের মতো করেই। ১৬ ওভার শেষে রংপুর তুলেছিল ১০৯ রান, কুমিল্লা তোলে ১১১ রান। ১৭ ওভার শেষে রংপুরের স্কোর ছিল ৪ উইকেটে ১১৩, কুমিল্লা সেখানে তোলে ৩ উইকেটে ১১৪ রান। কুমিল্লার এরপর দরকার ছিল ওমরজাই বা নুরুলের মতো ইনিংস। সেই ওমরজাইয়ের করা ১৮তম ওভারের প্রথম ৪ বলে আসে ১৪ রান, কিন্তু পঞ্চম বলে গিয়ে থামেন তখন পর্যন্ত দুটি ছক্কা মারা খুশদিল।
শেষ পর্যন্ত কুমিল্লার কেউ আর ওমরজাই বা নুরুল হয়ে উঠতে পারেননি। ২৮ বলে ৩৯ রানের ইনিংস খেলেছেন হৃদয়, শেষ ওভারে সাকিব আল হাসানকে টানা দুটি ছক্কা মেরেছিলেন জাকের আলী। কিন্তু ততক্ষণে যা দেরি হওয়ার, হয়ে গেছে কুমিল্লার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
রংপুর রাইডার্স: ২০ ওভারে ১৬৫/৫ (কিং ১৪, বাবর ৩৭, মাহমুদ ৩০, শামীম ১৪, ওমরজাই ৩৬*, নবী ১৩, নুরুল ১৫*; তানভীর ৩-০-১৯-১, আলিস ৩-০-২৭-০, মোস্তাফিজুর ৪-০-৪৮-১, জামাল ৩-০-২১-০, খুশদিল ৪-০-২৫-১, রিফার ৩-০-২০-২)
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস: ২০ ওভারে ১৫৭/৬ (রিজওয়ান ১৭, লিটন ০, মাহিদুল ৬৫, হৃদয় ৩৮, খুশদিল ১৩, রিফার ১*, জামাল ০, জাকের ১৮* ; ওমরজাই ৪-০-৩১-২, মুরাদ ৩-০-২৫-০, সাকিব ৪-০-৪১-০, হাসান ৪-০-২৩-১, নবী ৪-০-১৯-১, মেহেদী ১-০১৭-০)
ফল: রংপুর ৮ রানে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: আজমতউল্লাহ ওমরজাই (রংপুর)