কয়েকটা ব্যাপার প্রত্যাশিতই ছিল। বৃষ্টির শঙ্কা আছে বলে যে দলই টসে জিতবে, তারাই পরে ব্যাটিং করতে চাইবে। সেপ্টেম্বরের স্যাঁতসেঁতে উইকেটে বল থেমে আসবে, স্পিনও ধরবে। ফলে রান হবে কম। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে এ সবই দেখা গেল।
কিন্তু বৃষ্টি নিয়ে যে শঙ্কাটা ছিল, সেটাই শেষ পর্যন্ত হয়ে গেল সবচেয়ে বড়। কয়েক দফা বৃষ্টির পর শেষ পর্যন্ত দুই দলের প্রথম ম্যাচটা পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।
বাংলাদেশের আমন্ত্রণে আগে ব্যাটিং করতে নামা নিউজিল্যান্ডের ইনিংসের শুরুতেই (৪.৩ ওভারে) বৃষ্টি নামে। তাতে দুই ঘণ্টা আট মিনিট খেলা বন্ধ ছিল। ম্যাচের দৈর্ঘ্যও নেমে আসে ৪২ ওভারে। এরপর যখন খেলা শুরু হয়, তখন মিরপুরের মেঘলা আকাশের নিচে বোলিংয়ে আলো ফুটিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান (৩ উইকেট) ও নাসুম আহমেদ (২ উইকেট)। এ দুই বাঁহাতির সৌজন্যে নিউজিল্যান্ডকে ইনিংসজুড়ে চাপে রাখতে পেরেছে বাংলাদেশ। বৃষ্টিতে খেলা পরিত্যক্ত হওয়ার আগে ৩৩.৪ ওভারে নিউজিল্যান্ড ৫ উইকেটে ১৩৬ রান করে।
শুরুটা হয় মোস্তাফিজের হাত ধরেই। বৃষ্টি বিরতির পর প্রথম ওভারেই তিনি কিউই ওপেনার ফিন অ্যালেনকে আউট করেন। ফুল লেংথ থেকে প্রথাগত সুইং খোঁজার চেষ্টা করে যখন কাজ হচ্ছিল না, তখন ব্যাক অব দ্য লেংথ থেকে স্লোয়ার বলে অ্যালেনকে কট বিহাইন্ডের ফাঁদে ফেলেন মোস্তাফিজ। ২০ বল খেলা অ্যালেনের ইনিংস থামে ৯ রানে।
দ্বিতীয় উইকেটের জন্য জন্য মোস্তাফিজকে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। ‘ওয়ান ব্রিংস টু’ - ক্রিকেটের এই কথাটা মেনে ঠিক পরের ওভারেই আরেকটি উইকেটের দেখা পান মোস্তাফিজ। তিনে নামা চ্যাড বস (৩ বলে ১ রান) ৬ মিটার লেংথ থেকে লাফিয়ে ওঠা একটি বলে ধরাশায়ী হন। তবে এতে বড় কৃতিত্ব উইকেটকিপার নুরুল হাসানের। অ্যাঙ্গেল করে বেরিয়ে যাওয়া বলটা গ্লাভস বন্দী করেছেন ঝাঁপিয়ে পড়ে।
সেই নুরুল আরেক ওপেনার উইল ইয়াংয়ের ক্যাচ ছেড়েছেন। ব্যক্তিগত ৪ রানের সময় নাসুম আহমেদের বলে খেলা ইয়াংয়ের কাট শটটা ধরতে পারেননি নুরুল, যদিও ক্যাচটি বেশ কঠিনই ছিল। ব্যক্তিগত ১৮ রানের সময়ও ইয়াংকে আউট করার সুযোগ ছিল। কিন্তু তানজিম হাসানের বলে এলবিডব্লিউ হয়েও বাংলাদেশ রিভিউ না নেওয়ার বেঁচে যান তিনি।
সুযোগটা অবশ্য তিনি দারুণভাবে কাজে লাগিয়েছে। জোড়া উইকেট হারানোর পর হেনরি নিকোলসকে নিয়ে গড়েছেন ৯৭ রানের দারুণ এক জুটি। সুযোগও ছিল রান করার। বাংলাদেশ আজ ম্যাচটা খেলছে চার বিশেষজ্ঞ বোলার নিয়ে। পঞ্চম বোলারের কাজটা করেছেন মাহমুদউল্লাহ ও সৌম্য সরকার। মাঝের ওভারে এই দুজনের ওভারে কোনো ঝুঁকি না নিয়েই রান বের করেছেন তাঁরা।
জুটি ভাঙতে তখন পর্যন্ত দিনের একমাত্র উইকেটশিকারি মোস্তাফিজকেই বোলিংয়ে আনতে হয়। ২৮তম ওভারে ফিরেই নিকোলসকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন মোস্তাফিজ। আউট হওয়ার আগে ৫৭ বলে ৪৪ রান করেন এই বাঁহাতি। ৩ ওভার পর নাসুমের স্পিনে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন আরেক থিতু ব্যাটসম্যান ইয়াং। ৯১ বলে ৫৮ রান করার পর নাসুমের ফ্লাইট দেওয়া বলে ক্রিজে ছেড়ে খেলতে গিয়ে স্টাম্পিং হন তিনি।
একই ওভারে নাসুমের ফুল লেংথের বলে সুইপ খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন রাচিন রবীন্দ্র (০)। বাংলাদেশ সে উইকেট পায় রিভিউ নিয়ে। নিউজিল্যান্ডের সামনে তখন আবার ইনিংস মেরামতের কঠিন কাজটি এসে পড়ে।
এরপর আরও ৩ ওভার খেলা হয়েছে। এরপর সন্ধ্যা ৭টার দিকে খেলা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এর কিছুক্ষণ আগে আবার ফেরে বৃষ্টি। সেটি থামেনি আর, খেলাও মাঠে গড়ায়নি।