ঠিক এক সপ্তাহ আগে গুয়াহাটিতে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ, সেটি ছিল প্রস্তুতি ম্যাচ। এবার ধর্মশালায় বিশ্বকাপের মূল পর্বে মুখোমুখি দুই দল। এই ম্যাচের আগে অন্তত দুটি জায়গায় খানিকটা হলেও এগিয়ে সাকিব আল হাসানের দল।
প্রথমত, প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানকে সহজে হারিয়ে বাংলাদেশ এখন আত্মবিশ্বাসী। বিপরীতে ইংল্যান্ড উদ্বোধনী ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে ৯ উইকেটে হেরে কিছুটা পিছিয়ে। দ্বিতীয় দিক হচ্ছে কন্ডিশনের সঙ্গে অপেক্ষাকৃত বেশি পরিচিতি। ইংল্যান্ড প্রথম ম্যাচ খেলেছে আহমেদাবাদে। আর আফগানদের বিপক্ষে ধর্মশালাতেই খেলার কারণে বাংলাদেশ কন্ডিশন সম্পর্কে একটু হলেও ভালো জানে। সাকিবরা এখন বাটলারদের মুখোমুখি হওয়ার আগে একটি ‘সুসংবাদ’ও পেতে পারেন। সেটা কী?
বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে বেন স্টোকসকে না–ও খেলাতে পারে ইংল্যান্ড। ৩২ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও খেলেননি। বেশ আগে থেকেই হাঁটুর চোটে ভুগছেন স্টোকস, তা নিয়ে অস্বস্তিও আছে। স্টোকস গত ১০ দিনের মধ্যে প্রথমবার নেট অনুশীলনে নেমেছেন রোববার। লম্বা সময়ের বিশ্বকাপে স্টোকসকে শেষ দিকে শতভাগ ফিট পেতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতেই পারে ইংল্যান্ড।
তবে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে স্টোকসকে বাংলাদেশের বিপক্ষে না খেলানোর আরেকটি কারণও বলা হয়েছে। ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামের আউটফিল্ডের অবস্থা মোটেও ভালো নয়। বাংলাদেশ–আফগানিস্তান ম্যাচে বাউন্ডারি সীমানায় ফিল্ডারদের পা পিছলে যেতে দেখা গেছে। আফগানিস্তানের মুজিব উর রহমান একটি বাউন্ডারি বাঁচাতে ডাইভ দিয়ে গুরুতর চোট ঝুঁকিতে ছিলেন বলে জানিয়েছেন দলটির কোচ জোনাথন ট্রট। আফগানদের এই কোচ ইংল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার। ট্রট সেদিন ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে ধর্মশালার আউটফিল্ডের সমালোচনা তো করেছেনই, পরে ইংল্যান্ড দলকে এ নিয়ে সতর্ক থাকতেও বলেছেন।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, স্টোকস এখনো অস্বস্তিবোধ করছেন এবং বাজে আউটফিল্ডও (তাঁকে না খেলানোর) এই সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে একটি কারণ হবে। ইংল্যান্ড দল যে এ নিয়ে সতর্কতা অবলম্বন করছে, সেটি ফুটে উঠেছে রোববার জনি বেয়ারস্টোর কথায়ও। বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে ১০০তম ওয়ানডে খেলতে যাওয়া এই উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান ধর্মশালার আউটফিল্ড নিয়ে বলেন, ‘এটা নিয়ে আমাদের কৌশলী এবং স্মার্ট হতে হবে। দেখা গেল দুজন হাঁটুর চোটে বা এ রকম কিছু নিয়ে মাঠের বাইরে চলে গেল। ডাইভিং দিতে গেলে কাঁধেও আঘাত পেতে পারে। মাটিতে কনুই আটকে যেতে পারে। কেউ একজন ছুটে যাওয়া বল থামাতে গেলে তাঁকে টেনে ধরা খুব কঠিন। বলের জন্য ছুটে যাওয়া একজন ফিল্ডারের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া।’
ধর্মশালার আউটফিল্ড নিয়ে সমালোচনা ও শঙ্কা অবশ্য নতুন কিছু নয়। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ক্রিকেট অনুপযোগী আউটফিল্ডের কারণে ভারত–অস্ট্রেলিয়া বোর্ডার–গাভাস্কার ট্রফির তৃতীয় টেস্ট ধর্মশালা থেকে শেষ মুহূর্তে ইন্দোরে স্থানান্তর করা হয়েছিল।
এবারের বিশ্বকাপে ধর্মশালায় পাঁচটি ম্যাচ রাখা হয়েছে। যার প্রথমটি ছিল শনিবার বাংলাদেশ–আফগানিস্তানের ম্যাচে। ম্যাচশেষে আইসিসির কাছে দেওয়া প্রতিবেদনে ম্যাচ অফিশিয়ালসরা আউটফিল্ডকে ‘গড়পড়তা’ রেট করেছেন। রোববার মাঠে গিয়ে আউটফিল্ড পরিদর্শন করেন আইসিসির হেড অব ইভেন্টস ক্রিস টেটলি এবং স্বাধীন পিচ পরামর্শক অ্যান্ডি অ্যাটকিনসন। বাংলাদেশ–ইংল্যান্ড ম্যাচ চলতে পারে বলে তাঁরা মত দিয়েছেন।