সাকিবের এভাবে আউট হওয়া কোনোভাবেই কাম্য নয়, মুশফিকের ক্ষেত্রেও তাই

এশিয়া কাপে বাংলাদেশ দলের একটা ভাগ্যই ভালো। সেটা হলো টস–ভাগ্য। সাকিব আল হাসান প্রতি ম্যাচেই টসে জিতেছেন এবং দলের যে পরিকল্পনা ছিল, সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গতকালও তা–ই হয়েছে। টসে জিতে ফিল্ডিং নিয়েছেন কার্টেল ওভারের কথা মাথায় রেখে। কিন্তু এরপর যা হয়েছে, নিশ্চয়ই পরিকল্পনায় ছিল না। বোলিংটা ভালো হলেও আরও একটি ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটিং হতাশ করল। ব্যাটসম্যানদের দৈন্য আরও একবার ফুটে উঠল এ ম্যাচের মধ্য দিয়ে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এ হারের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলার সম্ভাবনাও অনেকটাই ক্ষীণ হয়ে এল।

কালকের ম্যাচের কথায় যদি আসি, আগে বোলিং করার সুযোগ পেয়ে বাংলাদেশের তিন পেসারই দারুণ বোলিং করেছেন। শ্রীলঙ্কার ৯টি উইকেটের ৮টিই দেখলাম পেসারদের দখলে গেছে। তবে শেষের ওভারে তাঁরা কেমন করেন, সেটা দেখতে চাইছিলাম। সেখানে একটু বেশি রান হয়ে গেছে। বাংলাদেশ আরেকটু ভালো বোলিং করলে শ্রীলঙ্কার রানটাকে ২৩০-এর মধ্যে থামাতে পারত।

এখানে সামারাবিক্রমাকে বাহবা দিতেই হয়। তিনি চাপের মুখে খুব পরিণত ব্যাটিং করেছেন এবং খুব ভালো স্ট্রাইক রেটে। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের জন্য যা শিক্ষণীয় ছিল। ফিল্ডিংয়ের সময় নিশ্চয়ই তাঁরা দেখেছেন, সামারাবিক্রমা প্রেমাদাসার উইকেটে কীভাবে ইনিংস গড়েছেন, বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সেই প্রয়োগ দেখলাম না। শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক দাসুন শানাকাকে দেখলাম কাল ৯ ওভার বোলিং করতে। রান কম দিয়েছেন, বাংলাদেশের ৩টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নিয়েছেন। এটা মেনে নেওয়া খুবই কঠিন। তাঁর বলে উল্টো বাংলাদেশ দলের দ্রুত রান করা উচিত ছিল। কেন বলি, শানাকার বোলিং অনেকটা ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটের কোনো দলের থার্ড সিমারের মতো। তাঁকেই আমরা খেলতে পারিনি! ওপেনার নাঈমকে তো দেখলাম শানাকার বাউন্সারে বাজেভাবে আউট হলেন। ওই বলটা তো ছক্কা মারার বল, সেটা লঙ্কানদের বাউন্ডারি থেকে কুড়িয়ে আনার কথা।

হতাশ করেছেন সাকিব

যা–ই হোক, ব্যাটিংয়ের এই বাজে হাল আমরা এশিয়া কাপের শুরু থেকেই দেখছিলাম। কিন্তু কাল অভিজ্ঞদের ব্যর্থতায় বেশি হতাশ হয়েছি। সাকিব যেভাবে আউট হলেন, তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। রানের পেছনে ছুটতে হবে ঠিকই, কিন্তু এভাবে কেন? তিনি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার, ওই পরিস্থিতিতে এত আলগা শট খেলে আউট হলেন।

সেখানেই যদি একটা জুটি হয়ে যেত, তাহলে রান তাড়ার কাজটা সহজ হয়ে যেত। কিন্তু সেটা না হওয়ায় বাংলাদেশ অনেকটাই পিছিয়ে যায়। মুশফিকের ক্ষেত্রেও একই কথা বলব। প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানের এই ব্যর্থতার পরও যে আমরা ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত টানতে পেরেছি, সেটা তাওহিদ হৃদয়ের জন্য। একমাত্র তাঁকেই দেখলাম ম্যাচের অবস্থা বুঝে খেলছেন, সফলও হয়েছেন। গতকালের ম্যাচে এ ছাড়া আর ইতিবাচক কিছু খুঁজে পাচ্ছি না।