মোহাম্মদ শামির বলটিতে ফ্লিক করে রানের জন্য ছুটতেই উচ্ছ্বাসে লাফিয়ে উঠলেন, ঘুষি মারলেন বাতাসে। ক্যারিয়ারের ১৪ তম আর ভারতের বিপক্ষে প্রথম সেঞ্চুরিটা এভাবেই উদ্যাপন করলেন উসমান খাজা।
শুধু খাজারই নয়, চলমান বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে এটি অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানদেরই প্রথম সেঞ্চুরি।
খাজা শামিকে স্কয়ার লেগ দিয়ে চার মেরে তিন অংক স্পর্শ করেন দিনের শেষ ওভারের প্রথম বলে। বাঁহাতি এ ওপেনারের ব্যাটে অস্ট্রেলিয়া আহমেদাবাদ টেস্টের প্রথম দিন শেষ করেছে ৪ উইকেটে ২৫৫ রান নিয়ে। ১০৪ রান করা খাজার সঙ্গে ৪৯ রান নিয়ে অপরাজিত ক্যামেরন গ্রিন।
প্রথম দুই টেস্ট তিন দিনের মধ্যে হেরে যাওয়া অস্ট্রেলিয়া তৃতীয় টেস্ট জিতে সিরিজে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ইন্দোর টেস্টের সেই ছন্দ ধরে রেখে সিরিজের শেষ টেস্টের শুরুটাও হয়েছে স্বস্তির। টস জিতে ব্যাট করতে নামার পর খাজা-ট্রাভিস হেডের উদ্বোধনী জুটি এনে দেয় ৬২ রান।
এর মধ্যে হেড ছিলেন আক্রমণাত্মক। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে জাদেজার ক্যাচ হওয়ার আগে ৪৪ বলে ৩২ রান করে যান তিনি। তিনে নামা লাবুশেন অবশ্য ৩ রান করে শামির বলে আউট হন।
৭২ রানে দুই উইকেট হারিয়ে ফেলার পর খাজার সঙ্গে যোগ দেন অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। এ দুজন মিলে চা-বিরতি পর্যন্ত কোনো বিপদ হতে দেননি। তবে শেষ সেশনের শুরুতেই দুজনের ৭৯ রানের জুটি ভেঙে দেন জাদেজা, বোল্ড হওয়ার আগে ১৩৫ বলে ৩৮ রান করেন স্মিথ। কিছুক্ষণ পর শামি পিটার হ্যান্ডসকম্বকে (২৭ বলে ১৭) বোল্ড করলে আবারও জোড়া ধাক্কা খায় অস্ট্রেলিয়া।
তবে শেষবেলায় কোনো বিপদ হতে দেননি খাজা-গ্রিন। তিন অংকের দিকে ছোটা খাজা কিছুটা ধীরে খেললেও ভারতের নেওয়া নতুন বলে চালিয়ে খেলতে শুরু করেন গ্রিন। দিনের শেষ ওভারের প্রথম বলে শামিকে চার মেরে বহু কাঙ্ক্ষিত সেঞ্চুরি তুলে নেন খাজা।
২০২২ সালের জানুয়ারির পর এটি তাঁর ষষ্ঠ সেঞ্চুরি, ভারতের মাটিতে কোনো অস্ট্রেলিয়ানের ছয় বছর পর প্রথম। আগের সেঞ্চুরিটি ছিল ২০১৭ সালে স্মিথের (১১১), ধর্মশালা টেস্টে।
দিনের খেলা শেষে মাঠ ছেড়ে যাওয়ার আগে সম্প্রচার প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন খাজা। ৩৬ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান আগের সফরগুলোয় একাদশে সুযোগ না পাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘ (সেঞ্চুরির মুহূর্তটা) খুবই আবেগপ্রবণ ছিল। এর আগেও দুবার ভারত সফরে এসেছিলাম। ৮টা টেস্ট আমাকে পানি টানতে হয়েছে।’
সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচের তুলনায় আহমেদাবাদের উইকেট তুলনামূলক ভালো উল্লেখ করে খাজার মন্তব্য, ‘আমার লক্ষ্য ছিল উইকেট যেন না দিই। সবকিছুর চেয়ে মানসিক লড়াইটাই এ ক্ষেত্রে বেশি ছিল। এসব ক্ষেত্রে ইগো সরিয়ে রাখতে হয়।’