ভেন্যু আলাদা। সংস্করণ ও প্রতিপক্ষও আলাদা। বোলার একই। শেষ ওভারে জিততে প্রয়োজনীয় রানসংখ্যাও ছিল একই। ফলও আলাদা হয়নি। বাংলাদেশ জিতেছে দুবারই।
প্রথমবারেরটা আগে বলা যাক। গত বছর মে মাসে চেমসফোর্ডে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডে। জয়ের জন্য শেষ ওভারে ১০ রান দরকার ছিল আইরিশদের। বোলার ছিলেন হাসান মাহমুদ। ২টি উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি মাত্র ৪ রান দিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচটা ৫ রানে জিতিয়ে সিরিজও জিতিয়ে দেন এই পেসার।
দ্বিতীয় ঘটনাটি একদমই নিকট অতীত। কিংসটাউনে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি, যেটা অনুষ্ঠিত হলো আজ বাংলাদেশ সময় সকালে। বাংলাদেশের ১৪৭ রান তাড়া করতে নেমে জয়ের জন্য শেষ ওভারে ১০ রান দরকার ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। এবারও বোলার সেই হাসান। এবারও নিলেন ২টি উইকেট। রান দিলেন মাত্র ২। বাংলাদেশ ৭ রানে জিতে এগিয়ে গেল তিন ম্যাচের সিরিজে।
বাংলাদেশের জয়ের পর ম্যাচসেরা মেহেদী হাসানের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, শেষ ওভারে হাসানের বোলিংয়ের আগে নিজেদের মধ্যে কী আলোচনা হচ্ছিল? হাসানের বোলিং নিয়েই–বা তিনি কী বলবেন?
ব্যাটে ২৪ বলে ২৬ রানে অপরাজিত থাকার পর বোলিংয়ে ৪ ওভারে ১৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়া মেহেদী তখন আয়ারল্যান্ড ম্যাচের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘হাসান আবারও প্রমাণ করেছে। আমার মনে আছে, আয়ারল্যান্ড সিরিজে হাসান ডেথ ওভারে একটি ম্যাচ জিতিয়েছিল। আমার ওই অনুভূতিটা আবার চলে আসছিল—হাসান হয়তোবা পারবে। হাসানের বিশ্বাস ছিল কি না, আমি জানি না, কিন্তু আমার নিজের ওই বিশ্বাস ছিল যে হাসান হয়তোবা এই ম্যাচটা শেষ করবে। আলহামদুলিল্লাহ, হাসান শেষ ওভারে অসাধারণ বল করেছে।’
১১.৪ ওভারে ৬১ রানে ৭ উইকেট হারিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু অষ্টম উইকেটে রোমারিও শেফার্ড ও রোভম্যান পাওয়েলের ৩৩ বলে ৬৭ রানের জুটিতে আবারও ঘুরে দাঁড়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তখন জয়ের সুবাস পাচ্ছিল স্বাগতিকেরাই। জয়ের জন্য শেষ ৩ ওভারে দরকার ছিল মাত্র ২০ রান। ক্রিজে সেট পাওয়েল ও শেফার্ড। তাসকিন ১৮তম ওভারে মাত্র ২ রানে ১ উইকেট নিয়ে ম্যাচের পাল্লা আবারও হেলিয়ে ফেলেন বাংলাদেশের দিকে। তাসকিনের সেই ওভারের আগে নিজেদের মধ্যে কী আলোচনা করেছেন খেলোয়াড়েরা, ড্রেসিংরুম থেকে বার্তাটাই–বা কী দেওয়া হয়েছিল—জানতে চাওয়া হয়েছিল মেহেদীর কাছে।
মেহেদীর উত্তর, ‘আমি তো মাঠে ছিলাম। ড্রেসিংরুম থেকে কী বার্তা গিয়েছে, এটা আসলে অধিনায়ক (লিটন দাস) বলতে পারবে। আমি ফিল্ডিংয়ে মনোযোগী ছিলাম। ওই পরিস্থিতিটা লিটন আপনাকে বলতে পারবে।’
এই প্রসঙ্গেই বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাসের অধিনায়কত্বের ভূয়সী প্রশংসা করলেন মেহেদী, ‘সব মিলিয়ে যে পরিকল্পনা করেছে, লিটনের অধিনায়কত্ব অসাধারণ ছিল। অনেক সাহসিকতার অধিনায়কত্বটা দেখিয়েছে। যে সময়ে যেটা দরকার, সেটা করার চেষ্টা করেছে।’
মেহেদীকে টি-টোয়েন্টি ম্যাচেই বেশি দেখা যায়। তাঁর ৬ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ওয়ানডে ম্যাচ ১১টি, টি-টোয়েন্টি ৫২টি। সংক্ষিপ্ততম সংস্করণের ম্যাচে যেহেতু এই স্পিন অলরাউন্ডারকে বেশি দেখা যায়, ওয়ানডে দলে থিতু হতে না পারার কোনো আক্ষেপ আছে কি না তাঁর—মেহেদীর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেছেন, ‘যদি দেখেন, আমি টি-টোয়েন্টিতেও থিতু না। আমি নিয়মিত টি-টোয়েন্টি খেলি না। পরিস্থিতি কিংবা দলের সমন্বয় অনুযায়ী খেলতে হয়। আমার ক্ষেত্রে আসলে ধৈর্যই ধরতে হবে। দেখা যাক, সামনে কী হয়। ধৈর্য ধরা ছাড়া কোনো উপায় নেই।’