এ বছরের শুরুতে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে মুমিনুল হক খেলেছিলেন ৮৮ রানের ইনিংস। এর পর থেকেই নিজেকে হারিয়ে খুঁজছিলেন, বাদও পড়েছিলেন দল থেকে। ফিরে এসে মিরপুরের কঠিন উইকেটে ফিফটির দেখা পেয়েছেন এ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
প্রথম দিন দ্বিতীয় সেশনে ১০২ রান তুললেও বাংলাদেশ অবশ্য হারিয়েছে সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিমের পর লিটন দাসকেও। চা-বিরতিতে স্বাগতিকেরা গেছে ৫ উইকেটে ১৮৪ রান নিয়ে, ৬৫ রানে ব্যাটিং করা মুমিনুলের সঙ্গী মেহেদী হাসান মিরাজ।
মধ্যাহ্নবিরতির পর বাংলাদেশের শুরুটা হয় বাজে, প্রথম বলেই উমেশ যাদবকে তুলে মারতে গিয়ে মিড-অফে ক্যাচ তোলেন সাকিব। বিরতির আগে আক্রমণাত্মক মেজাজ দেখিয়েছিলেন, অশ্বিনকে ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে গিয়ে চার মারার পর মিডউইকেট দিয়ে মেরেছিলেন ইনিংসের প্রথম ছক্কা। বিরতির ঠিক আগে স্টাম্পিংয়ের সুযোগ দিয়েও বেঁচে গিয়েছিলেন, তবে সে সুযোগ সেভাবে কাজে লাগাতে পারেননি আর। ২০১৮ সালের পর প্রথমবার চারে আসা বাংলাদেশ অধিনায়ক ফেরেন ১৬ রান করে।
মুমিনুল ও মুশফিকের জুটি এরপর এগিয়েছে কখনো ধীর লয়ে, কখনো র্যাপিড-ফায়ার গতিতে। মুশফিক মুখোমুখি অষ্টম বলে চার মেরেছিলেন, তবে এরপর নিজেকে রাখেন খোলসবন্দী করে। ৩৮তম ওভারে অবশ্য অশ্বিনকে মারেন টানা তিন চার, উনাদকাটের পরের ওভারে মুমিনুল মারেন আরও দুটি—সে সময়ে ১০ বলে আসে ৬টি বাউন্ডারি।
মুশফিককে ফিরতে হয় উনাদকাটের দ্বিতীয় শিকার হয়ে। অফস্টাম্পের বাইরে লাইন ধরে রাখা বলে শরীর থেকে দূরে দাঁড়িয়ে ডিফেন্ড করতে গিয়ে আউটসাইড-এজড হন মুশফিক। মুমিনুলের সঙ্গে তাঁর জুটিতে ওঠে ৪৮ রান।
মুশফিক ফেরার পর মুমিনুল পান ফিফটির দেখা। উনাদকাটকে আপার কাটে চার মেরে গিয়েছিলেন ৪৬ রানে, পরের বলে কাট করে মারা আরেকটি চারে পূর্ণ করেন ক্যারিয়ারের ১৬তম ফিফটি, যে মাইলফলকের দেখা সাবেক বাংলাদেশ অধিনায়ক পেলেন বছরের শুরুতে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টের পর প্রথমবার। মাঝে খেলেছেন ১১টি ইনিংস।
অন্য প্রান্তে মুমিনুলের সঙ্গে যোগ দেওয়া লিটন যে এমন উইকেটে শটই খেলবেন, তা অনুমিতই ছিল। সিরাজকে পাঞ্চ করে প্রথম চারটি মেরেছিলেন পয়েন্ট দিয়ে, ঠিক পরের বলে পুল করে মারেন ছক্কা। তবে বেশিক্ষণ টেকেননি তিনি। অশ্বিনকে ফ্লিক করতে গিয়ে শর্ট মিডউইকেটে ক্যাচ দেন ২৬ বলে ২৫ রান করেই।
এর আগে টসে জিতে অনুমিতভাবেই ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন সাকিব। মিরপুরে টার্ন ও বাউন্সময় চ্যালেঞ্জিং উইকেটে শুরুটা খুব একটা দৃঢ় হয়নি, তবে নাজমুল হোসেন-জাকির হাসানের ওপেনিং জুটি টেকে প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা। বাউন্ডারির দেখা দুজন পান, তবে ৪ বলের মধ্যে ফেরেন দুজন।
দ্বিতীয় ওভারেই উমেশের বলে সিরাজের হাতে ডিপ ফাইন লেগে জীবন পাওয়া জাকির ফেরেন প্রথমে। ১৫তম ওভারে উনাদকাটের বাড়তি বাউন্সের বলে আউটসাইড-এজড হয়ে গালিতে ধরা পড়েন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান জাকির। পরের ওভারে অশ্বিনকে প্যাড-আপ করতে গিয়ে এলবিডব্লু হন নাজমুল। রিভিউ নিয়েছিলেন, তবে উইকেটে ছিল আম্পায়ার্স কল। উইকেটের ধরনে নিজেকে অবশ্য দুর্ভাগা ভাবতেই পারেন বাংলাদেশ ওপেনার।
তিনে আসা মুমিনুলের প্রথম বাউন্ডারি শটটি ছিল দারুণ—অশ্বিনকে কাভার ড্রাইভ। পরের ওভারে উনাদকাটকে ক্লিপ করে মারেন আরেকটি। পরের চার দিয়ে দুই অঙ্কে পৌঁছান মুমিনুল, আগের ১০ ইনিংস যিনি ফিরেছিলেন এক অঙ্কেই। সে ইনিংসকেই দ্বিতীয় সেশনে ফিফটিতে পরিণত করে ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছেন মুমিনুল।