নেদারল্যান্ডসের জয়ের জন্য তখন দরকার ৩৬ বলে ৫৬ রান। হাতে ৭ উইকেট। ওভারপ্রতি দরকারি রান খুব একটা বেশি নয়। আবার ক্রিজে আছেন দুই সেট ব্যাটসম্যান সিব্রান্ড এঙ্গেলব্রেখট ও স্কট এডওয়ার্ডস। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন এমন পরিস্থিতিতে ভরসা রাখলেন প্রথম দুই ওভারে ১৯ রান দেওয়া লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনের ওপর। রিশাদও প্রতিদান দিয়েছেন।
রিশাদ ম্যাচ শেষে বলেছেন, তিনি জানতেন একটি-দুটি উইকেট নিলেই ম্যাচে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। বল হাতে তিনি সেটাই করেছেন। আর অধিনায়ক নাজমুলেরও ভরসা ছিল উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরাতে এই রিশাদই পারবেন।
ইনিংসের ১৫তম ওভারের প্রথম ৩ বলে রিশাদ দিয়েছিলেন ৭ রান। তবে এর পরের তিন বলের মধ্যে ফিরিয়েছেন এঙ্গেলব্রেখট ও বাস ডি লিডিকে। কাল তাতেই মূলত ঘুরে যায় ম্যাচের ভাগ্য। রিশাদ এর পরের ওভারে আবার ফেরান ফন বিককে। সব মিলিয়ে ৪ ওভারে ৩৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন রিশাদ।
বিশ্বকাপে ৩ ম্যাচে রিশাদ এখন পর্যন্ত নিয়েছেন ৭ উইকেট। প্রতি ম্যাচেই দলের চাহিদা মিটিয়েছেন। তবু আরও উন্নতি করতে চান রিশাদ। ম্যাচ শেষে মিক্সড জোনে রিশাদ জানিয়েছেন, ‘সব জয়ের মধ্যেই ভালো লাগা কাজ করে। অবদান রাখতে পেরে ভালো লাগছে। সবার শরীরী ভাষা, সবার যে চেষ্টা ছিল, সেটা অনেক ভালো লেগেছে। ইনশা আল্লাহ চেষ্টা করব আরও কীভাবে উন্নতি করা যায়। নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করেছি। ভেবেছি, এখান থেকে একটা-দুইটা উইকেট নিলে খেলাটা আবার আমাদের দিকে চলে আসবে। আমি এটা করার চেষ্টা করেছি।’
এবারের বিশ্বকাপে রিশাদের ওপর সবচেয়ে বেশি আস্থা রেখেছেন নাজমুল। যখনই উইকেটের প্রয়োজন হয়েছে, রিশাদকে ডেকেছেন। ডেথ ওভারেও রিশাদকে ব্যবহার করেছেন। কালকেও রিশাদের প্রতি নাজমুলের সেই ভরসা ছিল, ‘শান্ত ভাই আমাকে বলেছেন, তুই পারবি, চেষ্টা কর, বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা। যখনই বোলিংয়ে আসি, চিন্তা করি দলকে কী দেওয়া যায়। উইকেট দিয়ে হোক কিংবা ডট বল দিয়ে হোক; চেষ্টা করেছি শুধু। বাকিটা আল্লাহ দিয়েছেন।’
সেন্ট ভিনসেন্টের উইকেট নিয়ে রিশাদ বলেছেন, ‘উইকেট ভালোই ছিল। আমরা চেষ্টা করেছি নিজেদের সামর্থ্য দিয়ে খেলার জন্য। মাঠে যারা ছিলাম, কখনোই মনে হয়নি হারার জন্য নেমেছি বা হেরে যাচ্ছি। সব সময় চিন্তা করেছি ফলাফল শেষ বলে দেখা যাবে। আমার মনে হয় ৫-১০ রান কম হয়েছে, তবে ঠিক আছে।’
কাল ২০ ইনিংস পর টি-টোয়েন্টিতে ফিফটি পেয়েছেন সাকিব। ২০২১ সালের পর প্রথমবার হয়েছেন ম্যাচসেরা। এই ম্যাচের আগে চারপাশে ‘সাকিব শেষ, সাকিব শেষ’ রবও উঠেছিল। সে কানাঘুষা নিশ্চয়ই দল পর্যন্তও পৌঁছেছিল। রিশাদ অবশ্য জানিয়েছেন, এসবের ছোঁয়া দলে লাগেনি, ‘সাকিব ভাইয়ের প্রতি আমরা মোটেই আস্থা হারাইনি। আমরা জানি, বিগত দিনগুলোতে সাকিব ভাই কী করে আসছেন। সাকিব ভাইয়ের প্রতি সবার বিশ্বাস আছে। ইনশা আল্লাহ, (সেটা) আজকে দেখেছেন। আলহামদুলিল্লাহ।’
ব্যাটসম্যানদের ব্যাট থেকে রান না আসা বোলারদের জন্য চাপ কি না, এই প্রশ্নে রিশাদ বলেছেন, ‘ চাপ কিছু না, আমরা যখন ১১ জন মাঠে নামি, চেষ্টা করি সবাই এক হয়ে থাকার জন্য। প্রতিদিন তো একজন ভালো খেলে না। দিনে দিনে উন্নতি হচ্ছে। সামনে যতগুলো ম্যাচ আছে, অবশ্যই সবাই ভালো খেলার চেষ্টা করব।’