চার রানের আক্ষেপ! কাল নিউইয়র্কে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আইসিসির ‘ডেড বল’-এর নিয়মের মারপ্যাচে ৪ রান পায়নি বাংলাদেশ। ১৭তম ওভারে সেই চারটি পেয়ে গেলে কী হতো, সেটা নিশ্চিত করে বলার উপায় নেই। তবে কাজটা যে সহজ হয়ে যেত, তা বলাই যায়। সেই বলটির আগে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ২৩ বলে ২৬ রান।
বাউন্ডারি পেয়ে গেলে বাংলাদেশের দরকার হতো ২২ বলে ২২ রান। শেষ পর্যন্ত সেটা আর হয়নি, বাংলাদেশও হেরেছে ৪ রানে। এমন হারের পর এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন ব্যাটসম্যান তাওহিদ হৃদয়। এ নিয়ে কথা বলেছেন তামিম ইকবাল, সঞ্জয় মাঞ্জরেকার ও মরনে মরকেল।
ঠিক কী ঘটেছিল তখন? পেসার ওটনিল বার্টম্যানের বল মাহমুদউল্লাহর পায়ে লেগে চলে যায় বাউন্ডারির বাইরে। এর আগেই অবশ্য এলবিডব্লুর আবেদনে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার। এরপর মাহমুদউল্লাহ রিভিউ নিলে দেখা যায়, বল স্টাম্পে আঘাত করেনি। আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত তাই পাল্টে যায়। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী, আম্পায়ার আউট দেওয়ার পর বল ডেড হয়ে যাওয়ায় লেগ বাই হিসেবে ৪ রান পায়নি বাংলাদেশ। যে নিয়ম নিয়ে এত কথা হচ্ছে, সেই নিয়ম কী বলছে?
এমসিসির আইনের ২০.১.১.৩ ধারায় বলা আছে, কোনো খেলোয়াড়ের রিভিউ নেওয়ার ফলে যদি আম্পায়ারের দেওয়া আউটের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়ে নট আউট হয়, তাহলে প্রথম সিদ্ধান্ত দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বল ডেড হয়ে যাবে। অন ফিল্ড আম্পায়ারের আসল সিদ্ধান্ত নট আউট থাকলে ব্যাটিং পক্ষ যে রানের সুবিধা পেত, রিভিউ পরিবর্তনের সুফল পেলেও ব্যাটিং পক্ষ এ ক্ষেত্রে সেটা পাবে না, যদি না সেটা নো বল হয়।
সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে কথা বলেছিলেন হৃদয়। আম্পায়ারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আক্ষেপ শোনা গেছে হৃদয়ের কণ্ঠে, ‘সত্যি বলতে, সেটি ভালো সিদ্ধান্ত ছিল না। টাইট ম্যাচে আমাদের জন্য ভালো কিছু ছিল না সেটি। আমার মতে, আম্পায়ার আউট দিয়েছেন, কিন্তু আমাদের জন্য বিষয়টা কঠিন ছিল। ওই চারটি রান পেলে ম্যাচের চেহারা ভিন্ন হতে পারত। আমার আর কিছু বলার নেই। নিয়ম তো আইসিসি করেছে, এটা তো আসলে আমাদের হাতে নেই। কিন্তু ওই সময় ওই চারটি রান খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল আমাদের জন্য।’
গতকাল এই আইনের ভুক্তভোগী হয়েছে বাংলাদেশ দল। এ নিয়ে ইএসপিএনক্রিকইনফোর আলাপচারিতায় তামিম ইকবাল নিজের মতামত জানিয়েছেন এভাবে, ‘যদি ব্যাটসম্যান আউট না হয়, আর বল যদি তার থাইপ্যাডে বা অন্য কোথাও লেগে বাউন্ডারির বাইরে চলে যায়, তবে সে ক্ষেত্রে রান দেওয়া উচিত। যদি সে আউট না হয় আরকি। এটা আমি কঠিনভাবে বিশ্বাস করি।’
সঞ্জয় মাঞ্জরেকার বলেন, ‘এটা নিয়ে সমর্থকেরা অনেক কথা বলছেন। আমরাও এটা নিয়ে আলাপ করতে পারি। আম্পায়ার কি সবকিছু শেষ হয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারেন না? আম্পায়ার চাইলে বলটা বাউন্ডারি লাইন অতিক্রম করা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারেন এবং তারপর তাঁর আঙুল তুলতে পারেন বা বলতে পারেন যে আউট হয়নি। এরপর সেটা আপনি রেকর্ড করলেন এবং রিভিউর পর যা হওয়ার, তা–ই হবে।’
এই আইন বদলানো জরুরি বলে মনে করেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক পেসার মরনে মরকেল, ‘কোনো সন্দেহ নেই। এটা বদলানো জরুরি। আশা করি, বিশ্বকাপের পর তেমন কিছু হবে।’