সিরিজে ‘আনুষ্ঠানিক’ স্বাগতিক ছিল আয়ারল্যান্ডই। তবে চেমসফোর্ডের কাউন্টি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে তিন ম্যাচে বাংলাদেশ সমর্থকদের উপস্থিতি বলছিল একেবারেই ভিন্ন কথা। এর আগে সেখানকার সমর্থকদের কথা আলাদা করে বলেছেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। এবার বললেন সিরিজসেরা নাজমুল হোসেনও। নাজমুলের তো দেশের বাইরে খেলেছেন বলেই মনে হয়নি।
দেশের বাইরে বাংলাদেশ দলের এমন সমর্থন পাওয়া অবশ্য নতুন কিছু না হলেও দলের অনেক খেলোয়াড়ের কাছে হয়তো তা নতুন এক অভিজ্ঞতা। যে কারণে আজ বিকেলে দেশে ফেরার পর বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় নাজমুল চেমসফোর্ডের দর্শকদের প্রসঙ্গে বললেন, ‘খুব ভালো লেগেছে। আমার মনে হয়নি দেশের বাইরে খেলছি। অনেক দর্শক ছিল, তারা সব সময় সমর্থন দিয়েছে। এ রকম জিনিস সব সময়ই উপভোগ করি।’
শুধু সমর্থন পাওয়া নয়, মাঠের ক্রিকেটটাও বাংলাদেশ বেশ ভালোই উপভোগ করেছে। বিশ্বকাপের আগে দেশের বাইরে শেষ দ্বিপক্ষীয় সিরিজ ছিল এটি। প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ জেতে ৩১৯ রান তাড়া করে, শেষ ম্যাচে ৫ রানের রোমাঞ্চকর জয় পায় ২৭৪ রানের সম্বল নিয়েই।
ইংল্যান্ডে গ্রীষ্মের শুরুর দিকে খেলা বলে কন্ডিশন ব্যাটিংয়ের জন্য খুব একটা সহজ হবে না বলে ভাবা হয়েছিল। যদিও দ্বিতীয় ম্যাচের উইকেট একেবারেই অমন ছিল না। শুরুতে পেসাররা মুভমেন্ট পেলেও ব্যাটিং সহায়ক উইকেটই ছিল, ছোট মাঠের কারণে বাউন্ডারি পাওয়াও ছিল তুলনামূলক সহজ।
বিশ্বকাপে ভারতে ঠিক এমন কন্ডিশনের দেখা মিলবে না। তবে দুটি ম্যাচের ধরন বিশ্বকাপে দলকে সহায়তা করবে বলেই মনে করেন এই সিরিজেই প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরির দেখা পাওয়া নাজমুল, ‘আমরা যেটা ৩২০ তাড়া করলাম, আমার মনে হয় এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। (আবার) যে ম্যাচটা আমরা ডিফেন্ড করলাম। দুটি ম্যাচই বিশ্বকাপের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’
কেন গুরুত্বপূর্ণ, নাজমুল ব্যাখ্যা করেছেন সেটিও, ‘এ ধরনের পরিস্থিতি বিশ্বকাপে আসতেই পারে। (বিশেষ করে) বড় দলের বিপক্ষে। দুই ধরনের অনুভূতিই পেলাম—কীভাবে তাড়া করতে হয় বা ডিফেন্ড করতে হয়। এ জিনিস মাথায় রেখে সামনে ম্যাচ খেলতে পারলে দলের জন্য ভালো হবে।’
নিজে সিরিজসেরা হয়েছেন, তবে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে এমন জয়ে দলীয় পারফরম্যান্সই বড় মনে হচ্ছে নাজমুলের কাছে, ‘আমরা দল হিসেবে ভালো ক্রিকেট খেলেছি বলে আমার মনে হয়। পুরো সময়টা সবাই দলের জন্য অবদান রাখার চেষ্টা করেছে। খুব ভালো একটা অভিজ্ঞতা ছিল। এটা যদি ধরে রাখতে পারি, তাহলে সামনের দিকে আরও ভালো কিছু করতে পারব।’
শেষ ম্যাচে নাজমুলের বোলিংও ছিল ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া মুহূর্ত। পার্ট-টাইমার হিসেবে বোলিংয়ে এসে তিনি ভাঙেন লরকান টাকারের সঙ্গে হ্যারি টেক্টরের গুরুত্বপূর্ণ জুটি। এরপরই নাটকীয় ধস নামে আয়ারল্যান্ড ইনিংসে। ম্যাচের পর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে নিজের বোলিং নিয়ে মজাই করেছিলেন নাজমুল। আজ অবশ্য ‘সিরিয়াস’ কথাই বললেন, ‘বোলিংটা খুব ভালো হয়েছে বলব না। তিন ওভার বোলিং করেছি। অধিনায়ক বল দিলে চেষ্টা করব আবারও ভালো করার। এটা নিয়ে খুব মাতামাতি করার কিছু নেই যে, আমি একদিন তিন ওভার বোলিং করে অনেক কিছু করে ফেলেছি।’