প্রশ্নটার জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হলো না। পুরস্কার বিতরণের মঞ্চে সঞ্চালক মার্ক নিকোলাস বাংলাদেশের ব্যাটিং প্রসঙ্গে প্রশ্নটা করলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে। দলের ব্যাটিংয়ের যখন ভঙ্গুর অবস্থা, তখন ফর্মে থাকা মাহমুদউল্লাহকে টপ অর্ডারে খেলানোর কথা উঠছিল। এই বিশ্বকাপে মাহমুদউল্লাহই বাংলাদেশ দলের একমাত্র ধারাবাহিক ব্যাটসম্যান। চার ম্যাচ খেলে তিনটিতে ব্যাটিং করে রান করেছেন ৪১*, ৪৬ ও ১১১।
টপ অর্ডারের বাকিরা যখন রান করছেন না, তখন মাহমুদউল্লাহকে টপ অর্ডারে নিয়ে এলেই তো হয়! অবশ্য এ নিয়ে সাকিব ও টিম ম্যানেজমেন্টের ভাবনা একটু অন্য রকমই। সাকিবের মুখেই শুনুন সেটি, ‘মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহকে ওপরে খেলানো নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। কিন্তু তাঁদের যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সেই দায়িত্বে তাঁরা খুব ভালো করছেন।’ এরপর সাকিব আরও একবার ওপরের সারির ব্যাটসম্যানদের ধারাবাহিক ব্যর্থতার বিষয়টি সামনে নিয়ে এলেন, ‘আমাদের ওপরের দিকের চার-পাঁচজন ব্যাটসম্যান রান করছে না। তাদের রান করতে হবে। আমরা যদি তাদের কাছ থেকে রান বের করতে পারি, তাহলে ভালো হবে।’
আজকের ম্যাচে অবশ্য শুধু ব্যাটিং–ব্যর্থতাকেই বাংলাদেশের হারের কারণ বলা যাবে না। দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ব্যাটসম্যান কুইন্টন ডি কক ও হাইনরিখ ক্লাসেনের ইনিংসের প্রশংসা করতে গিয়ে সাকিব সে প্রসঙ্গও টেনে আনলেন, ‘আমার মনে হয়, আমরা প্রথম ২৫ ওভারে ভালো বোলিং করেছি। আমরা ৩ উইকেট নিয়েছি, ওভারপ্রতি ৫ রান দিচ্ছিলাম। সেখান থেকে ওরা দ্রুত রান নিতে থাকে। বিশেষ করে কুইন্টন যেভাবে খেলেছে, আমার মনে হয়, সেটা এককথায় দুর্দান্ত। আর যেভাবে ক্লাসেন খেলাটা শেষ করেছে, আমাদের কাছে এটার কোনো জবাব ছিল না।’
দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের শেষ ১০ ওভারের বোলিংয়ের কথা আলাদা করেই বললেন সাকিব, ‘শেষ ১০ ওভারে আমরা ১৪৫ (১৪৪) রান দিয়েছি। হয়তো গত ১০-১৫ বছরে ইনিংসের শেষের দিকে আমাদের বিপক্ষে সর্বোচ্চ রান। এই মাঠে এটা হতেই পারে। তবে আমাদের আরও ভালো বোলিং করা উচিত ছিল। আমরা শেষ ১০ ওভারে পরিকল্পনা থেকে সরে গিয়েছি। আমার মনে হয়, আমরা শেষ ১০ ওভারেই হেরে গিয়েছি।’
বিশ্বকাপে ৫টি ম্যাচ খেলা হয়ে গেছে বাংলাদেশের। বাকি আছে আরও ৪টি। সেখান থেকে কী অর্জন করতে চান, এমন এক প্রশ্নের উত্তরে সাকিব বলেছেন, ‘বিশ্বকাপ থেকে অনেক কিছু শিখতে হবে। অর্জনের আছে অনেক কিছু। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আছে, আমাদের সেরা আটে থাকতে হবে সেখানে খেলতে হলে। এটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সেমিফাইনাল না হলেও পাঁচে অথবা ছয়ে জায়গা করে নেওয়া…। এখনো আমাদের সেমিফাইনালে জায়গা করে নেওয়ার সুযোগ আছে। আমরা হয়তো ওই রকম দলের মতো খেলছি না, যারা সেমিফাইনালে যেতে পারে। তবে আমি এখনো আশাবাদী, ঘুরে দাঁড়িয়ে ভালোভাবে টুর্নামেন্ট শেষ করতে পারব।’