হাস্যোজ্জ্বল দুই অধিনায়ক রোহিত শর্মা (বাঁয়ে) ও বাবর আজম। গত ওয়ানডে বিশ্বকাপ ভারত–পাকিস্তান ম্যাচে টসের আগমুহূর্তে
হাস্যোজ্জ্বল দুই অধিনায়ক রোহিত শর্মা (বাঁয়ে) ও বাবর আজম। গত ওয়ানডে বিশ্বকাপ ভারত–পাকিস্তান ম্যাচে টসের আগমুহূর্তে

পাকিস্তানের বিপক্ষে নিয়মিত সিরিজ খেলতে চান রোহিত

রাজনৈতিক বৈরিতায় ভারত ও পাকিস্তান ক্রিকেট দল এক যুগের বেশি সময় ধরে দ্বিপক্ষীয় সিরিজে মুখোমুখি হয় না। তাই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলের লড়াই দেখতে ক্রিকেটপ্রেমীদের বিশ্বকাপ কিংবা এশিয়া কাপের দিকে চাতক পাখির মতো চেয়ে থাকতে হয়।

টেস্টে ভারত–পাকিস্তানকে মুখোমুখি হতে দেখা গেছে আরও আগে, ২০০৭  সালে। দুই দেশের সরকার নমনীয় না হলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দল দুটিকে আবার কবে দ্বিপক্ষীয় সিরিজে খেলতে দেখা যাবে, কে জানে!

তবে রোহিত শর্মার চাওয়া, শুধু আইসিসি বা এসিসির টুর্নামেন্ট নয়; টেস্ট ক্রিকেটের স্বার্থে ভারত-পাকিস্তান নিয়মিত দ্বিপক্ষীয় সিরিজে মুখোমুখি হোক। গত রাতে ‘ক্লাব প্রেইরি ফায়ার’ নামের পডকাস্টে নিজের অভিমত তুলে ধরেন ভারতের অধিনায়ক।

‘ক্লাব প্রেইরি ফায়ার’ পডকাস্টে ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা

পডকাস্টে ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভন রোহিতকে জিজ্ঞেস করেন, ‘তোমার কি মনে হয় না, ভারত–পাকিস্তান নিয়মিত মুখোমুখি হলে তা টেস্ট ক্রিকেটের জন্য চমৎকার ব্যাপার হবে?’

উত্তরে রোহিত বলেন, ‘আমি পুরোপুরি তা বিশ্বাস করি। ওরা (পাকিস্তান) দল হিসেবে দারুণ। ওদের বোলিং লাইন আপ অসাধারণ। আমি মনে করি দারুণ এক প্রতিযোগিতা হবে, বিশেষ করে খেলাটা যদি বিদেশের কন্ডিশনে হয়। সর্বশেষ ভারত–পাকিস্তান ২০০৬ বা ২০০৮ সালে (আসলে ২০০৭ সালে) টেস্টে মুখোমুখি হয়েছে। কলকাতায় হওয়া ম্যাচটিতে ওয়াসিম জাফর ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন।’

২০০৭ সালে অনুষ্ঠিত ৩ ম্যাচের সেই টেস্টে সিরিজে ভারত ১–০ ব্যবধানে পাকিস্তানকে হারিয়েছিল। দিল্লিতে প্রথম টেস্ট ৬ উইকেটে জিতে নেয় অনিল কুম্বলের নেতৃত্বাধীন ভারত। কলকাতা ও বেঙ্গালুরুতে পরের দুই টেস্ট হয় ড্র। ওই সিরিজে পাকিস্তানকে নেতৃত্ব দেন দুজন—শোয়েব মালিক ও ইউনিস খান।

সর্বশেষ ২০০৭ সালে টেস্টে মুখোমুখি হয়েছে ভারত–পাকিস্তান

ভন এরপর রোহিতকে জিজ্ঞেস করেন, তিনি নিয়মতি পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ খেলতে চান কি না। রোহিতের উত্তর, ‘আমি চাই। সেটা হলে ভালোই হবে। দিন শেষে আমরা প্রতিযোগিতার মধ্যে থাকতে পারব। আমার মনে হয় দুই দলের লড়াইটা হাড্ডাহাড্ডি হবে। যাই হোক, আমরা এখন আইসিসির টুর্নামেন্টে খেলছি। তাই অন্য কোনো সিরিজে খেলা ব্যাপার না। আমার সব আগ্রহ নির্ভেজাল ক্রিকেট নিয়ে। এটা হবে নির্ভেজাল ক্রিকেট। এটাও ব্যাট–বলেরই লড়াই। তাহলে এমন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সিরিজ খেলতে আপত্তি কোথায়?’

সর্বশেষ গত বছরের অক্টোবরে ওয়ানডে বিশ্বকাপে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত–পাকিস্তান। ম্যাচটি হয়েছিল বিশ্বের সর্ববৃহৎ ক্রীড়া ভেন্যু আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে। স্টেডিয়ামের দর্শক ধারণক্ষমতা ১ লাখ ৩২ লাখ হলেও ক্রিকেটপ্রেমীদের তুমুল আগ্রহের কারণে প্রায় দেড় লাখের মতো টিকিট বিক্রি করতে বাধ্য হয় আয়োজকেরা। এর আগে ২০২২ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দুই দল মুখোমুখি হয়েছিল মেলবোর্নে। সে ম্যাচে দর্শক হয়েছিল ৯০ হাজারেরও বেশি।

২০২২ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মেলবোর্নে ভারত–পাকিস্তান ম্যাচে ৯০ হাজারের বেশি দর্শক হয়েছিল

২০২৪ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আবারও মুখোমুখি হতে চলেছে ভারত–পাকিস্তান। আগামী ৯ জুন নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামে ম্যাচটি হবে। স্টেডিয়ামের দর্শক ধারণক্ষমতা ৩৪ হাজার হলেও টিকিটের জন্য এর চেয়ে ২০০ গুণ বেশি আবেদন জমা পড়েছে বলে জানিয়েছে আইসিসি।

ভারত–পাকিস্তান ম্যাচ ঘিরে ক্রিকেটপ্রেমীদের উন্মাদনা এমনই।