রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে চতুর্থ দিনে স্বাগতম। গতকাল ৯২ ওভারে ৫ উইকেটে ৩১৬ রানে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছিল বাংলাদেশ। ফিফটি তুলে নিয়ে ক্রিজে অপরাজিত ছিলেন লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম। পাকিস্তানের প্রথম ইনিংস থেকে ১৩২ রানে পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ।
আজ কতদূর যেতে পারবে বাংলাদেশ? জানতে হলে চোখ রাখুন রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট নিয়ে প্রথম আলোর এই লাইভ বিবরণী ও বিশ্লেষণে।
রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে গত তিনদিনের লাইভ বিবরণী ও বিশ্লেষণ জানুন এখানে।
৯৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে গতকাল তৃতীয় দিন শেষ করেছিলেন মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস। আজ চতুর্থ দিনের শুরুতেই শতরান পেরিয়েছে তাঁদের জুটি। ৯৪ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৩১৯ রান। কাল ২১৮ রানে সাকিব আল হাসান আউট হলে মুশফিকের সঙ্গে জুটি বাঁধেন লিটন।
কাল নাসিম শাহকে বড্ড ভুগিয়েছেন লিটন দাস। পাকিস্তানি পেসারের এক ওভারে ১৮ রান নিয়ে ফিফটি পূরণ করেছিলেন লিটন। সেই নাসিমই আজ লিটনকে ফেরালেন। এই আউটে ভাঙল মুশফিক–লিটনের ১১৪ রানের জুটি।
আজ চতুর্থ দিনের প্রথম ৮ ওভার করেছেন শাহিন আফ্রিদি ও মোহাম্মদ আলী। এ দুজনকে দারুণভাবে সামলেছেন মুশফিক–লিটন। তবে দিনের নবম ওভারে প্রথমবার বল হাতে তুলে নিয়েই পাকিস্তানকে ব্রেক থ্রু এনে দিলেন নাসিম। অফ স্টাম্পের বাইরে করা তাঁর শট লেংথের পঞ্চম বলটা কিছুটা লাফিয়ে উঠেছিল। সেই বলে লিটন কাট করতে গেলে ব্যাটের কিনারা লেগে বল জমা পড়ে উইকেটকিপার মোহাম্মদ রিজওয়ানের হাতে।
যেভাবে পিচ আঁকড়ে ধরে ছিলেন, তাতেই মনে হচ্ছিল সেঞ্চুরি না করে ছাড়বেন না মুশফিকুর রহিম। সেঞ্চুরিটা তিনি পেয়ে গেলেন মধ্যাহ্ন বিরতির আগেই। আগা সালমানের বলটিকে ফাইন লেগে খেলে ২ রান নিতেই মুষ্টিবদ্ধ হাতে ব্যাট উঁচিয়ে ধরলেন মুশফিক, করলেন গর্জনও। টেস্ট ক্যারিয়ারে এটি তাঁর ১১তম সেঞ্চুরি আর পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম। সব মিলিয়ে পাকিস্তানের মাটিতে তৃতীয় বাংলাদেশি হিসেবে টেস্টে তিন অঙ্ক স্পর্শ করলেন মুশফিক। অন্য দুজন হাবিবুল বাশার ও জাভেদ ওমর। এই সেঞ্চুরিতে মুশফিক ছাড়িয়ে গেলেন তামিম ইকবালকে (১০টি টেস্ট সেঞ্চুরি)।
মুশফিকের সেঞ্চুরির পরপরই মধ্যাহ্ন বিরতিতে গেছে দুই দল। চতুর্থ দিনের প্রথম সেশন শেষে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১১৭ ওভারে ৬ উইকেটে ৩৮৯ রান। পাকিস্তানের প্রথম ইনিংস থেকে ৫৯ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ।
চতুর্থ দিনে আজ প্রথম সেশনে ২৫ ওভারে লিটনের উইকেট হারিয়ে ৭৩ রান তুলেছে বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় সেশনের খেলা শুরুর পর চার শ রান পেরিয়ে গেছে বাংলাদেশ। ১২১ ওভার শেষে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ৪০০।
পাকিস্তানের প্রথম ইনিংস থেকে ৪৮ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ। ১০৮ রানে ব্যাট করছেন মুশফিক। ২১ রানে অপরাজিত মেহেদী হাসান মিরাজ।
দ্বিতীয় সেশনে (১৩৭তম ওভার) লিড নিল বাংলাদেশ। ১৩৭ ওভার শেষে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ৪৫০ রান। পাকিস্তান ৬ উইকেটে ৪৪৮ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে। অর্থাৎ, নিজেদের প্রথম ইনিংসে ২ রানের লিড নিয়েছে বাংলাদেশ।
আজ চতুর্থ দিনে মুশফিক–মিরাজের অবিচ্ছিন্ন ১১৮ রানের জুটিতে লিড নিতে পারল বাংলাদেশ। ১৩৯ রানে ব্যাট করছেন মুশফিক। অন্য প্রান্তে ৩৯ রানে অপরাজিত মিরাজ।
দারুণ এক ইনিংসই খেলছেন মুশফিকুর রহিম। দ্বিতীয় সেশনে (১৪২তম ওভার) ব্যক্তিগত ইনিংসে দেড় শ রান পেরিয়ে গেলেন। টেস্ট ক্যারিয়ারে এ নিয়ে পঞ্চমবার দেড় শ রান (২৮৬ বলে ১৫০*) টপকে গেলেন মুশফিক। এর মধ্যে ডাবল সেঞ্চুরি আছে তিনটি। ২০২২ সালে মিরপুরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলেছেন অপরাজিত ১৭৫ রানের ইনিংস।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ১৪২ ওভারে ৬ উইকেটে ৪৭২। এরই মধ্যে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ২৩ রানের লিড নিয়েছে বাংলাদেশ।
২৮৮ বলে ১৫২ রানে অপরাজিত মুশফিক। ১১৪ বলে ৪৮ রানে অপরাজিত মিরাজ। ১৪০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েছেন দুজন।
মুশফিককে দারুণ সঙ্গ দিচ্ছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ১২০ বলে ফিফটি তুলে নিলেন এই অলরাউন্ডার। টেস্টে এটি মিরাজের ৭ম ফিফটি।
মুশফিকের সঙ্গে তাঁর অবিচ্ছিন্ন জুটিও ১৫০ রান পেরিয়ে গেল।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ১৪৬ ওভার শেষে ৬ উইকেটে ৪৮৩। পাকিস্তানের প্রথম ইনিংস থেকে ৩৪ রানের লিড নিয়েছে বাংলাদেশ।
প্রথম ইনিংসে লিড নেওয়ার পর এখন ৫০০ পেরোনোর অপেক্ষায় বাংলাদেশ। মুশফিকুর রহিম ও মেহেদী হাসান মিরাজের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ৬ উইকেটে ৪৯৫ রান তুলেছে সফরকারীরা। এখন চলছে চা বিরতি।
আজ চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনে লিটন দাসের উইকেট হারালেও দ্বিতীয় সেশনে পাকিস্তানের বোলাররা আর কোনো ব্রেক থ্রু এনে দিতে পারেননি। এই সেশনে বাংলাদেশ বিনা উইকেটে যোগ করেছে আরও ১০৬ রান।
১৭৩ রানে অপাজিত মুশফিক আছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ ডাবল সেঞ্চুরির অপেক্ষায়। ৫০ রান নিয়ে তাঁকে দারুণ সঙ্গে দিচ্ছেন মিরাজ। ২২ গজের জমে যাওয়া এই জুটিটা এখন ১৬৩ রানের।
চতুর্থ ডাবল সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়েও পারলেন না মুশফিকুর রহিম। ১৯১ রান করে মোহাম্মদ আলীর বলে ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটকিপারের কাছে।
৩৪১ বলের ইনিংসে ২২ চার ও ১ ছয় মেরেছেন মুশফিক।
বাংলাদেশ দলের প্রথম ইনিংসের রান ১৫৭ ওভারে ৭ উইকেটে ৫২৮। মেহেদী হাসান মিরাজ অপরাজিত ৬৪ রানে। বাংলাদেশ দল পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে ৮০ রানে।
মুশফিকের আউটের পর বাংলাদেশ দল এগোচ্ছিল মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাটে। দলের নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে মিরাজ থামলেন ৭৭ রান করে। ১৭৯ বল খেলা ইনিংসটি থেমেছে শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে স্লিপে সালমান আগার হাতে ক্যাচ দিয়ে।
বাংলাদেশ দলের সংগ্রহ ১৬৭ ওভারে ৯ উইকেটে ৫৬৪ রান। বাংলাদেশ দল পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে ১১৬ রানে।
রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৫৬৫ রান তুলেছে বাংলাদেশ। যা পাকিস্তানের প্রথম ইনিংসের চেয়ে ১১৭ রান বেশি।
আজ ম্যাচের চতুর্থ দিনে বাংলাদেশকে লিডের দিকে নিয়ে গেছে মুশফিকুর রহিম–মেহেদী হাসান মিরাজের জুটি। সপ্তম উইকেটে ১৯৬ রানের জুটি গড়ার পথে ডাবল সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন মুশফিক, যদিও ১৯১ রানে থামতে হয়েছে তাঁকে। মিরাজের সম্ভাবনা ছিল সেঞ্চুরির, তিনি থেমেছেন ৭৭ রানে।
শেষ দিকে শরীফুল ইসলাম ১৪ বলে ২২ রানের ইনিংস খেললে বাংলাদেশের সংগ্রহ সাড়ে পাঁচ শ পার হয়। পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন নাসিম শাহ। আর ২টি করে উইকেট শাহিন আফ্রিদি, খুররম শাহজাদ ও মোহাম্মদ আলীর।
পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই উইকেট তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। বাঁহাতি পেসার শরীফুল ইসলাম ফিরিয়েছেন সাইম আইয়ুবকে। শরীফুলের বলে উইকেটকিপার লিটন দাসকে ক্যাচ দিয়েছেন সাইম। ব্যক্তিগত ১ রানে ফেরা সাইম দলকে ৫ রানে রেখে আউট হয়েছেন। পাকিস্তান ইনিংস শুরু করেছিল ১১৭ রানে পিছিয়ে থেকে।
দ্বিতীয় ইনিংসে ১ উইকেটে ২৩ রান তুলে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের চতুর্থ দিনটা শেষ করেছে পাকিস্তান। বাংলাদেশকে আবারও ব্যাট করাতে ৯৪ রান দরকা দলটির। শরীফুল ইসলামের বলে ওপেনার সাইম আইয়ুবকে হারানো দলটিকে এরপর দিন পাড় করেছেন আবদুল্লাহ শফিক (১২*) ও অধিনায়ক শান মাসুদ (৯*)।
এর আগে মুশফিকুর রহিমের ১৯১ রানের ইনিংসে ভর করে প্রথম ইনিংসে ৫৬৫ রান তোলে বাংলাদেশ। ১১৭ রানের লিড পায় বাংলাদেশ।
শেষ দিনের শুরুটা উইকেট দিয়ে করতে চেয়েছিল বাংলাদেশ। সেটা তারা করেছেও। দিনের দ্বিতীয় ওভারেই পাকিস্তান অধিনায়ক শান মাসুদকে লিটন দাসের ক্যাচে পরিণত করেন হাসান মাহমুদ। তবে মাসুদের ক্যাচ নেওয়া নেওয়া লিটনই পরের ওভারে শরীফুলের বলে বাবর আজমের সহজ ক্যাচ ছেড়েছেন।
ইনিংসের শুরু থেকেই বাবর ছিলেন নড়বড়ে। একবার জীবন পেয়েও স্বচ্ছন্দে খেলতে পারছিলেন না। শেষ পর্যন্ত নাহিদ রানার বলে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন। ঘণ্টায় ১৪৬.৪ কিলোমিটার গতির বলে ‘অলস’ ড্রাইভ খেলতে গিয়ে ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হন বাবর। ২২ রান করেছেন বাবর।
পরের ওভারেই সাকিবের বলে স্টাম্পড হয়েছেন প্রথম ইনিংসে ১৪১ রান করা সৌদি শাকিল। টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবার শূন্য রানে ফিরেছেন তিনি। পাকিস্তানের রান ৪ উইকেটে ৬৭। এখনো পিছিয়ে ৫০ রানে।
কী হলো শফিকের?
দেখেশুনেই খেলছিলেন। লাঞ্চ বিরতিরও খুব বেশি সময় বাকি নেই। এমন সময়ে হুট করে বড় শট খেলতে গিয়ে সাকিবকে উইকেট দিয়েছেন এই ওপেনার।
মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগেই ধস নেমেছে পাকিস্তানের ইনিংসে। সাকিব ২ উইকেট নেওয়ার পর পাকিস্তানের ইনিংসে আঘাত হেনেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তাঁর বলে স্লিপে দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়ে আগা সালমানকে ফিরিয়েছেন সাদমান ইসলাম। ১০৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে এলোমেলো পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপ।
৬ উইকেটে ১০৮ রান নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে গেছে পাকিস্তান। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসের চেয়ে এখনো ৯ রানে পিছিয়ে তারা।
মিরাজের করা বলটি একদমই বাউন্স করেনি। নিচু হয়ে সেটি ঠেকাতে চেয়েছিলেন শাহিন আফ্রিদি। কিন্তু পারেননি, বল আঘাত করে তাঁর প্যাডে। এলবিডব্লু হয়ে ফিরেছেন শাহিন। ১১১ রানে সপ্তম উইকেট হারাল পাকিস্তান।
নাসিমের সামনে ফাঁদ পেতেছিলেন সাকিব। হাওয়ায় ভাসিয়ে একের পর এক বল করছিলেন। হাওয়ায় ভাসানো বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সাকিবের সেই ফাঁদে পড়েছেন নাসিম। মিডউইকেটে মুশফিকের হাতে সহজ ক্যাচ দিয়েছেন এই পেসার। ১১৮ রানে ৮ উইকেট হারিয়েছে পাকিস্তান। লিড মাত্র ১ রানের।
১১৮ রানে পড়েছিল পাকিস্তানের অষ্টম উইকেট। শাহজাদকে সঙ্গী করে লড়ে যাচ্ছেন রিজওয়ান। নিজে অপরাজিত ৪৮ রানে, পাকিস্তানের রান হয়ে গেছে ১৩৯। পাকিস্তান এগিয়ে ২২ রানে। দুই প্রান্ত থেকে স্পিন চলছিল এতক্ষণ। অধিনায়ক নাজমুল এই জুটি ভাঙতে আক্রমণে এনেছেন পেসার হাসান মাহমুদকে।
বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন রিজওয়ান। তাঁকে বোল্ড করে বাংলাদেশের পথের কাঁটা সরিয়ে দিয়েছেন মিরাজ। ৫১ রান করে বোল্ড হয়েছেন রিজওয়ান। পাকিস্তান হারিয়েছে নবম উইকেট। লিড মাত্র ২৫ রানের। বাংলাদেশ এখন পাকিস্তান ইনিংস শেষ করে ব্যাটিং করতে নামার অপেক্ষায়। ঐতিহাসিক এক জয়ের পথে যাত্রারও।
এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলে পাকিস্তানের শেষ ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ আলীকে ফিরিয়েছেন মিরাজ। পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংস থামল ১৪৬ রানে, যা বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বনিম্ন স্কোর। জয়ের জন্য বাংলাদেশকে করতে হবে মাত্র ৩০ রান। দেড় সেশনেরও বেশি সময় হাতে আছে। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়েছেন মিরাজ।
এর আগের সর্বনিম্ন ছিল ১৭৫ রান, ২০০৩ সালে মুলতানে। পাকিস্তান যে ম্যাচটি জিতেছিল ১ উইকেটে, বাংলাদেশকে যে টেস্ট জিততে না পারার আক্ষেপ পুড়িয়েছে অনেক দিন!
প্রথম ওভারে এসেছে একটি বাউন্ডারি, শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে লিডিং-এজে সেটি পেয়েছেন জাকির হাসান। পরের ওভারে নাসিম শাহ করেছেন মেডেন, যদিও লেগবাই থেকে এসেছে আরও ২ রান। রান কীভাবে এল, আপাতত আর সেদিকে খেয়াল রাখার সময় নেই বাংলাদেশের। ৩ ওভার শেষে স্কোর ১০/০, জয়ের জন্য দরকার ২০ রান।
নাসিম শাহর ওভারে দুটি চার। প্রথমটি লেগ বাই থেকে, পরেরটি ফ্লিক করে মেরেছেন সাদমান ইসলাম। জয়ের জন্য বাংলাদেশের দরকার আর ১২ রান।
আগা সালমানকে সুইপ করে চার জাকির হাসানের। তাতেই জয় নিশ্চিত হলো বাংলাদেশের। রাওয়ালপিন্ডিতে স্বাগতিক পাকিস্তানকে বাংলাদেশ হারাল ১০ উইকেটে। টেস্টে বাংলাদেশের এটিই প্রথম ১০ উইকেটে জয়। এর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৩ টেস্ট খেলে বাংলাদেশের প্রাপ্তি ছিল ২০১৫ সালে খুলনা টেস্ট ড্র। ১৪তম টেস্টে এসে বাংলাদেশ পেল ঐতিহাসিক জয়। পাকিস্তান নবম প্রতিপক্ষ, যাদের টেস্টে হারাল বাংলাদেশ। বাকি থাকল শুধু ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা। দেশের বাইরে বাংলাদেশের এটি মাত্র সপ্তম জয়, সব মিলিয়ে ২০তম।
৬ উইকেটে ৪৪৮ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছিল পাকিস্তান, সেটি ছিল টেস্টের দ্বিতীয় দিন। শেষ বেলায় ১২ ওভার ব্যাটিংয়ের চ্যালেঞ্জ দারুণভাবে সামলেছিলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার জাকির ও সাদমান। এরপর থেকে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে দেখা গেছে বাংলাদেশ দলের দাপট—ব্যাটিংয়ের পর বোলিংয়েও। সাদমানের লড়াকু ৯৩ রানের পর মুশফিকের ১৯১ রানের দুর্দান্ত ইনিংসে বাংলাদেশ পায় ৫৬৫ রানের বড় সংগ্রহ। এরপর সাকিব ও মিরাজের ঘূর্ণিতে বিপাকে পড়ে পাকিস্তান, দ্বিতীয় ইনিংসে গুটিয়ে যায় ১৪৬ রানেই। তাতে বাংলাদেশে সামনে আসে ৩০ রানের লক্ষ্যের আনুষ্ঠানিকতা। যেটি বাংলাদেশ পেরিয়ে গেল কোনো উইকেট না হারিয়েই।
প্রথম ইনিংসে ১৯১ রানের ইনিংসের জন্য ম্যাচসেরা হয়েছেন মুশফিকুর রহিম। এটা তাঁর সবচেয়ে সুন্দর ইনিংসগুলোর একটি, বলেছেন মুশফিক। এ জয়ের জন্য সব খেলোয়াড়কেই কৃতিত্ব দিয়েছেন তিনি, বিশেষ করে এ সিরিজের জন্য তাঁরা যেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছেন সেজন্য। ম্যাচসেরার প্রাইজমানি বন্যার্তদের সহায়তায় দান করে দেবেন বলেও জানিয়েছেন বাংলাদেশের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান।
রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে উৎসর্গ করেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন।