২৭২ রান তোলার পর দিল্লিকে ১০৬ রানে হারিয়েছে কলকাতা
২৭২ রান তোলার পর দিল্লিকে ১০৬ রানে হারিয়েছে কলকাতা

১০৬ রানে দিল্লিকে গুঁড়িয়ে কলকাতার হ্যাটট্রিক

আইপিএলের ইতিহাসের দ্বিতীয় ও টি-টোয়েন্টিতে সপ্তম সর্বোচ্চ ২৭২ রানের স্কোর গড়ার পর বিশাখাপট্টনমে দিল্লি ক্যাপিটালসকে ১০৬ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। টানা দুটি ম্যাচ জেতা চেন্নাই সুপার কিংসের জয়ের ধারা ঠিক আগের ম্যাচেই থামিয়েছিল দিল্লি, তবে কলকাতাকে আটকাতে পারল না তারা। এ নিয়ে টানা তিন জয়ে শীর্ষে উঠে এসেছে শ্রেয়াস আইয়ারের কলকাতা, এ ম্যাচের নেট রানরেটের সৌজন্য রাজস্থান রয়্যালসকে (১.২৪৯) টপকে গেছে তারা (২.৫১৮)। এবারই প্রথম আইপিএলের কোনো মৌসুম টানা তিন জয়ে শুরু করল কলকাতা।

গত ২৭ মার্চ আইপিএলের রেকর্ড ২৭৭ রানের স্কোর গড়েছিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। সপ্তাহখানেক পর সেটি ভাঙার খুব কাছে গিয়ে থেমেছে কলকাতা। অবশ্য সে ম্যাচে হায়দরাবাদের রেকর্ড স্কোর তাড়া করার একটা আভাস মুম্বাই ইন্ডিয়ানস দিলেও এবার দিল্লি তেমন কিছু করতে পারেনি। ৩৩ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর পঞ্চম উইকেটে ৪৭ বলে ৯৩ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক ঋষভ পন্ত ও ট্রিস্টান স্টাবস। ২৫ বলে ৫৫ রানের ইনিংস খেলেন পন্ত, স্টাবস করেন ৩২ বলে ৫৪। তবে তাঁদের ইনিংস পার্থক্য গড়তে পারেনি কোনো। ওই দুজনের পর আর কেউ দুই অঙ্কও ছুঁতে পারেননি দিল্লির।

পন্তের এ হতাশাই দিল্লির অবস্থাটা ফুটিয়ে তোলে

এমন জয়ের দিনে কলকাতার জন্য স্বস্তি হয়ে এসেছে মিচেল স্টার্কের বোলিংও। আগের দুই ম্যাচ মিলিয়ে ১০০ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকা আইপিএলের ইতিহাসের সবচেয়ে দামি খেলোয়াড় আজ ২৫ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট। এই পেসার ফেরান অস্ট্রেলিয়া সতীর্থ ডেভিড ওয়ার্নার ও মিচেল মার্শকে। বৈভব অরোরা ও বরুণ চক্রবর্তী নেন ৩টি করে উইকেট। দিল্লি থামে ১৭.২ ওভারে।

৩৯ বলে ৮৫ রানের ইনিংস খেলে ফেরার পথে সতীর্থদের অভিনন্দন পান নারাইন

এর আগে ওপেনিংয়ে আসা সুনীল নারাইনের ক্যারিয়ার-সর্বোচ্চ ৩৯ বলে ৮৫ রানের সঙ্গে অংক্রিশ রঘুবংশীর ২৭ বলে ৫৪, আন্দ্রে রাসেলের ১৯ বলে ৪১ ও রিংকু সিংয়ের ৮ বলে ২৬ রানের ইনিংসে নিজেদের সর্বোচ্চ স্কোর গড়ে কলকাতা। টসে জিতে ব্যাটিং নিয়েছিল তারা। ইশান্ত শর্মার করা দ্বিতীয় ওভারের শেষ ২ বলে দুটি চার মেরেছিলেন ফিল সল্ট, সেটি অবশ্য ছিল কলকাতার ঝড়ের আভাস। চতুর্থ ওভারে ইশান্তের ওপর চড়াও হন নারাইন, সে ওভারে ৩ ছক্কা ও ২ চারে আসে ২৬ রান। পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারে কলকাতা তোলে ৮৮ রান, তাদের ইতিহাসে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। প্রথম ১০ ওভারে আসে ১৩৫ রান, আইপিএলে যা তৃতীয় সর্বোচ্চ।

পঞ্চম ওভারে সল্টকে ফেরার পর রঘুবংশী ও নারাইনের দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৪৮ বলেই ওঠে ১০৪ রান। ১৩তম ওভারে মিচেল মার্শের বলে কট বিহাইন্ড হয়ে থামেন নারাইন, ইনিংসে মারেন ৭টি করে চার ও ছক্কা। রঘুবংশীও বেশিক্ষণ টেকেননি, আনরিখ নর্কিয়ার বলে থামে তাঁর ২৭ বলে ৫৪ রানের ইনিংস। কিন্তু ফেরার আগে রাসেলদের হাতে ব্যাটনটা তুলে দিয়ে যান। শ্রেয়াস আইয়ার ও রিংকু সিংয়ের সঙ্গে রাসেলের দুটি জুটিতে ৩৫ বলে ওঠে ৮৮ রান। ১৭ থেকে ১৯—এই ৩ ওভারেই কলকাতা তোলে ৫৯ রান। কলকাতার ব্যাটসম্যানরা এদিন মেরেছেন ১৮টি ছক্কা, আইপিএলের ইতিহাসে যৌথভাবে যা পঞ্চম সর্বোচ্চ। তবে কলকাতা এবারই এতগুলো ছক্কা মারল এক ইনিংসে।

হায়দরাবাদের রেকর্ড অবশ্য শেষ ওভারে নাগালেই ছিল কলকাতার। ২৬৪ রানে সে ওভার শুরু করেছিল কলকাতা। কিন্তু ইশান্ত শর্মা প্রথম ৩ বলের মধ্যে রাসেল ও রমনদিপ সিংকে ফেরান, ওভারে দেন মাত্র ৮ রান। শেষ পর্যন্ত দিল্লির সান্ত্বনা হয়ে থেকেছে হয়তো সেটিই—কলকাতাকে ২৭৭ পর্যন্ত যেতে না দেওয়া!