বিপিএলে আগামীকাল ফাইনালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের মুখোমুখি হবে ফরচুন বরিশাল। বরিশালের প্রথম নাকি কুমিল্লার পঞ্চম শিরোপা—ফাইনালের আগে এ প্রশ্ন নিয়েই কথা হচ্ছে বেশি। এর পাশাপাশি আরও একটি ব্যাপারে নজর আছে অনেকেরই—এবারের বিপিএলে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হবেন কে? লড়াইটা এখন দুজনের মধ্যে।
বরিশালের তামিম ইকবাল এবং কুমিল্লার তাওহিদ হৃদয়। এই দুই ক্রিকেটার ফাইনালে নিজেদের রানসংখ্যা বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগও পাচ্ছেন। আপাতত দুজনের পার্থক্যটা মাত্র ৬ রানের।
এবারের বিপিএলে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তামিমের রান ১৪ ইনিংসে ৪৫৩। এক ইনিংস কম খেলে হৃদয়ের সংগ্রহ ৪৪৭ রান। গতকাল দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে ১০ রান করার পথে হৃদয়কে টপকে যান তামিম। তবে এবারের বিপিএলে ব্যাটসম্যানদের গল্প বলতে গেলে হৃদয়কেই প্রধান চরিত্রে রাখতে হয়। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের হয়ে ১৩ ইনিংসে হৃদয়ের রান ৪৪৭, গড় ৪০.৬৩, স্ট্রাইক রেট ১৪৯.৪৯। হৃদয় এমন উচ্চতায় পৌঁছেছেন, যেখানে এর আগে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যান যেতে পারেননি।
বিপিএলের ইতিহাসে ১৪০-এর বেশি স্ট্রাইক রেটে ৪০০-এর বেশি রান করা একমাত্র বাংলাদেশি হৃদয়। এর আগে যাঁরা এই কীর্তি গড়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকেই বিদেশি। ছক্কা মারাতেও হৃদয় ছাড়িয়ে গেছেন স্থানীয় সবাইকে। এবারের টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ ২৪টি ছক্কা মেরেছেন। বিপিএলের এক আসরে যা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ। সোমবার প্রথম কোয়ালিফায়ারে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ৪টি ছক্কা মেরে রেকর্ডটি নিজের করে নেন ২৩ বছর বয়সী হৃদয়। অর্থাৎ চলতি বিপিএলে হৃদয় রান করেছেন নিজেকে ভেঙেচুড়ে, ‘বাংলাদেশি মান’কে অতিক্রম করে।
তামিম খেলেছেন নিজের চিরায়ত কৌশলেই। শুরুর দিকে বড় ইনিংস খেলতে না পারলেও গত ১৪ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামে দুর্দান্ত ঢাকার বিপক্ষে ৭১ রানের ইনিংস খেলার পর টুর্নামেন্টে আরও দুটি ফিফটি পেয়েছেন। এলিমিনেটরে চট্টগ্রামের বিপক্ষে খেলেছিলেন ৪৩ বলে ৫২ রানের অপরাজিত ইনিংস। ৪৫৩ রান তামিম করেছেন ১২৫. ৪৮ স্ট্রাইক রেটে। আছে ১৫টি ছক্কার মার। তাঁদের পাশাপাশি ফাইনালে আছেন লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিমও।
লিটন ১৩ ইনিংসে রান করেছেন ৩৭৫। গড় ২৮.৮৪, স্ট্রাইক রেট ১৩০.৬৬। সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় চারে থাকা লিটনের এবারের বিপিএলকে দুই ভাগে ভাগ করতে হবে। শুরুটা ভালো ছিল না মোটেও। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস অধিনায়ক প্রথম ৫ ম্যাচে একবারও ২০ রানের ঘরে যেতে পারেননি, ৭৫ স্ট্রাইক রেটে করেছিলেন মাত্র ৩৭ রান!
তবে এরপর লিটন স্বরূপে ফেরেন। পরের ৮ ইনিংসে ফিফটি আছে ৩টি, যার মধ্যে দুটিতেই ৮০ রানের বেশি করেছেন। সর্বশেষ ম্যাচে খেলেছেন ৫৭ বলে ৮৩ রানের ইনিংস। তাই আরেকটি বড় ইনিংস খেললে লিটনের সামনে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের সুযোগ থাকছে।
মুশফিক ৩৬৭ রান নিয়ে পঞ্চম। গড় ৩৩.৩৬ হলেও স্ট্রাইক রেটে মুশফিক আলাদা নজর কাড়তে পারেননি। ব্যাট করেছেন ১২৩.৫৬ স্ট্রাইক রেটে, যেখানে সব মৌসুম মিলিয়ে বিপিএলে তাঁর স্ট্রাইক রেট ১৩২.১৮।
স্থানীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে এই স্ট্রাইক রেট তৃতীয় সর্বোচ্চ। তাঁর ওপরে আছেন শুধু সাকিব আল হাসান (১৩৯.৩৬) ও তাওহিদ হৃদয় (১৩২.৭১)। মিডল অর্ডারে ব্যাটিং করে বড় ইনিংস খেলাও তাঁর জন্য কঠিন। তবে প্রথমবারের মতো বিপিএল চ্যাম্পিয়ন হতে একটা বড় ইনিংস নিশ্চয়ই খেলতে চাইবেন মুশফিক। ৩৮৪ রান নিয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় তিনে থাকা তানজিদ হাসানের দল চট্টগ্রাম এলিমিনেটর থেকে বিদায় নিয়েছে।