টম ল্যাথামের ক্যারিয়ার-সর্বোচ্চ ১৪৫, কেইন উইলিয়ামসনের ৯৪ রানের অপরাজিত দুটি ইনিংস, দুজনের রেকর্ড অবিচ্ছিন্ন ২২১ রানের জুটিতে অকল্যান্ডে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ভারতের ৩০৬ রান ৭ উইকেট ও ১৭ বল বাকি থাকতেই টপকে গেছে নিউজিল্যান্ড। এর আগে শিখর ধাওয়ান, শুবমান গিল ও শ্রেয়াস আইয়ারের তিন ফিফটিতে ৩০০ পেরোয় ভারত।
রান তাড়ায় ১৯.৫ ওভারে ৮৮ রান তুলতে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল নিউজিল্যান্ড। শার্দুল ঠাকুরের বলে ফিন অ্যালেন উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেওয়ার পর অভিষিক্ত উমরান মালিকের বলে ফেরেন ডেভন কনওয়ে ও ড্যারিল মিচেল। দুই ওপেনার অ্যালেন ও কনওয়ে শুরু পেলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি।
ল্যাথাম ও উইলিয়ামসন এরপর অবিচ্ছিন্ন থেকেছেন, যদিও প্রয়োজনীয় রানরেট বাড়ছিল। শেষ ৬৬ বলে প্রয়োজন ছিল ৯১ রান। শার্দুলের করা ৪০তম ওভারে এরপর চড়াও হন ল্যাথাম, প্রথম বলে শর্ট লেংথ থেকে পুল করে ছক্কা মারার পর পরের বৈধ চারটি ডেলিভারিতে মারেন চারটি চার। শেষ বলে সিঙ্গেল নিয়ে ল্যাথাম পূর্ণ করেন ক্যারিয়ারের সপ্তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। শার্দুলের ওই ওভারে আসে ২৫ রান। এরপর ভারত ল্যাথাম-উইলিয়ামসনের জুটি ভাঙতে পারেনি, ম্যাচেও ফিরতে পারেনি আর।
ল্যাথাম ফিফটি পূর্ণ করেছিলেন ৫১ বলে, সেঞ্চুরি করতে লাগে মাত্র ৭৬ বল। ১৪৫ রানের ইনিংসে এই বাঁহাতি ১৯টি চারের সঙ্গে মারেন ৫টি ছক্কা। দেশের মাটিতে কোনো নিউজিল্যান্ড ব্যাটসম্যানের এক ইনিংসে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চার। অন্যদিকে ৫৪ বলে ফিফটি পূর্ণ করা উইলিয়ামসনকে ব্যাটিংয়ের গতি বাড়াতে হয়নি আর মূলত ল্যাথামের ঝড়ের কারণেই। নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক অপরাজিত ছিলেন ৯৮ বলে ৯৪ রানে, ৭টি চারের সঙ্গে মেরেছেন ১টি ছক্কা।
চতুর্থ উইকেটে ল্যাথাম ও উইলিয়ামসনের ২২১ রানই এখন নিউজিল্যান্ডের সর্বোচ্চ। শুধু তা–ই নয়, ভারতের বিপক্ষেও চতুর্থ উইকেটে এটিই এখন সর্বোচ্চ জুটি। চতুর্থ উইকেটে এর আগে নিউজিল্যান্ডের সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ডেও ছিলেন ল্যাথাম, ভারতের বিপক্ষেই ২০১৭ সালে ওয়াংখেড়েতে রস টেলরের সঙ্গে তুলেছিলেন ২০০ রান। আর ভারতের বিপক্ষে এ উইকেটে এর আগের সর্বোচ্চ রান ছিল পাকিস্তানের মোহাম্মদ ইউসুফ ও শোয়েব মালিকের ২০০৯ সালে সেঞ্চুরিয়নে।
ইডেন পার্কে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ভারতকে এর আগে দারুণ শুরু এনে দেন ধাওয়ান ও গিল। ওপেনিং জুটিতে দুজন মিলে তোলেন ১২৪ রান। ওয়ানডেতে নবম ম্যাচ একসঙ্গে ওপেন করতে নেমে এ নিয়ে চতুর্থবার শতরানের জুটি গড়লেন দুজন।
অবশ্য বড় জুটি হলেও সেঞ্চুরি পাননি দুজনের কেউই। ২৪তম ওভারে ৫০ রান করে লকি ফার্গুসনের বলে আলগা ক্যাচ দিয়ে ফেরেন শুবমান গিল। ঠিক পরের ওভারেই টিম সাউদিকে ড্রাইভ করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দেন ৭৭ বলে ৭২ রান করা ধাওয়ানও।
পরপর দুই উইকেটের চাপ সামাল দিতে না দিতেই আবার জোড়া আঘাত আসে ভারত ইনিংসে। ৩৩তম ওভারে ৪ বলের মধ্যে ঋষভ পন্ত ও সূর্যকুমার যাদব ফেরেন ফার্গুসনের বলে—পন্ত বোল্ড হওয়ার পর সূর্যকুমার দেন ক্যাচ। ভারতকে এরপর টানেন শ্রেয়াস। পঞ্চম উইকেটে সঞ্জু স্যামসনের সঙ্গে ৭৭ বলে ৯৪ রানের পর ষষ্ঠ উইকেটে ওয়াশিংটন সুন্দরের সঙ্গে তাঁর জুটিতে আসে মাত্র ২২ বলে ৪৬ রান। যদিও পরের জুটিতে শ্রেয়াস দর্শকের ভূমিকাই পালন করেছেন। ওয়াশিংটন শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ১৬ বলে ৩৭ রান করে। শেষ ১০ ওভারে ভারত তোলে ৯৬ রান।
শেষ পর্যন্ত তো ল্যাথাম ও উইলিয়ামসনের কাছে যথেষ্ট হলো না সেটিও।