মাহমুদউল্লাহ এ সিরিজের দলে থাকবেন, সেটি অনুমিতই ছিল; বিশেষ করে একাধিক নিয়মিত ক্রিকেটার বিশ্রামে যাওয়ার পর। তবে বেশ চমক হয়েই এসেছিল সৌম্য সরকারের নাম। বিশ্বকাপের আগে এমন সিরিজে কারও দলে থাকা মানে কোনো একটা নির্দিষ্ট ভূমিকায় তাঁরা কেমন করেন—সেটি বাজিয়ে দেখা।
স্বাভাবিকভাবেই তাই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আগামীকাল থেকে শুরু তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের দলে এই দুজনের ভূমিকা কী হবে, তা নিয়ে আগ্রহ ছিল। ম্যাচের আগের সংবাদ সম্মেলনে আজ লিটন দাস ঠিক সরাসরি সেটির ব্যাখ্যা না করলেও মনে করিয়ে দিয়েছেন পুরোনো কথাই।
তামিম ইকবালের সঙ্গে লিটনেরও অনুপস্থিতিতে এশিয়া কাপে ওপেনিং নিয়ে কিছুটা যেন চাপেই পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। মেহেদী হাসান মিরাজকে ওপেনিংয়ে আনা হয়েছিল, লিটন ফেরার পরও রাখা হয়েছিল সেখানে। ২০২১ সালের মার্চে যখন বাংলাদেশের হয়ে সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেন সৌম্য, নেমেছিলেন তিন নম্বরে। তবে ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদউল্লাহ-সৌম্যর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে অবশ্য সরাসরি জবাব দেননি লিটন। বলেছেন, ‘রোল (ভূমিকা) জিনিসটা নিয়ে আমি আসলে বলতে চাই না। এটা আসলে পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে।’
অন্যদিকে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিজের সর্বশেষ ওয়ানডেতে ছয়ে খেলেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। তবে সম্প্রতি সেখানে এসেছেন তাওহিদ হৃদয়। নিউজিল্যান্ড সিরিজে মাহমুদউল্লাহর ভূমিকার কথাও সরাসরি বলেননি লিটন। এ প্রসঙ্গে তাঁর কথা, ‘এখন যদি ম্যাচে দ্রুত উইকেট পড়ে যায়, এরপর যদি রিয়াদ (মাহমুদউল্লাহ) ভাই ব্যাটিংয়ে যায়, ৩০-৩৫ ওভারের খেলা থাকে, তাহলে উনি ওনার মতো করেই খেলবেন। ওটা বলার দরকার নেই, উনি অনেক ম্যাচিউরড।’
লিটন এরপর যোগ করেছেন, ‘এটা সৌম্যর ক্ষেত্রেও। যেখানে সুযোগ পাবে তারা রান করার চেষ্টা করবে। আসলে শুধু তারা দুজন না, প্রত্যেকটা ব্যাটসম্যানের কাজ রান করা।’
ব্যাটসম্যানের কাজ যে রান করা, সেটি অবশ্য লিটনের আলাদা করে মনে না করিয়ে দিলেও হতো। সৌম্যর রানখরা শুধু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে না, আলোচনায় ছিল ঘরোয়া ক্রিকেটেও। সর্বশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগেও দল থেকে বাদ পড়েছিলেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁর সর্বশেষ ফিফটিটি এসেছিল ২০২১ সালের জুলাইয়ে। এরপর ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে ১৭ ইনিংস সেটির দেখা পাননি তিনি। সর্বশেষ ইমার্জিং এশিয়া কাপের দলেও রাখা হয়েছিল, কিন্তু সেখানেও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি।
মাহমুদউল্লাহর অবশ্য ৪ ইনিংস আগেই ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডেতে একটা ৭৭ রানের ইনিংস ছিল। তবে হৃদয়কে নিচের দিকে খেলানোতেই কাজটা কঠিন হয়ে গেছে তাঁর। আছে মিরাজের উপস্থিতিও। তবে লিটনের কথা অনুযায়ী, ভূমিকা বা পজিশন যেটিই হোক, দিন শেষে করতে হবে রান।
এ সিরিজে শুধু মাহমুদউল্লাহ-সৌম্য নয়, সুযোগ পাচ্ছেন নিয়মিত এ সংস্করণের বাইরে থাকা আরও কয়েকজন। তাঁদের জন্যও এ সিরিজটা যে বড় সুযোগ, লিটন মনে করিয়ে দিয়েছেন সেটিও, ‘এ দলে যে কজন আছে, হৃদয়ই সম্ভবত টানা খেলছে। আমিও মাঝে দুটি ম্যাচ খেলিনি অসুস্থতার কারণে। আচ্ছা, দুঃখিত, নাসুম (আহমেদ) ও মেহেদীও (হাসান) খেলেছে এশিয়া কাপে। এটা একটা সুযোগ সবাইকে দেখার। সামনে বিশ্বকাপ। সবার সমান সুযোগ আছে।’
মাহমুদউল্লাহ-সৌম্যর মতো না হলেও এ সিরিজ দিয়ে ফিরছেন তামিম ইকবালও। তামিম-মাহমুদউল্লাহর মতো অভিজ্ঞ দুজনের কাছ থেকে প্রত্যাশা কী, তা নিয়ে লিটন বলেছেন, ‘দুজন সিনিয়র প্লেয়ার থাকলে সব সময়ই সহায়তা হয়। তাঁরা অনেক দিন পর এসেছেন। আমি চাই না কোনো কিছু নিয়ে চাপ দিতে। ওনারা খেলাটা উপভোগ করুন। আমার মনে হয়, বাংলাদেশের প্রতিটি খেলোয়াড় যদি উপভোগ করে, তাহলে সফল হওয়ার সুযোগটা বেশি থাকে।’