মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে একাডেমি মাঠে বোলিংয়ের এক ফাঁকে ইংল্যান্ডের পেসার জফরা আর্চার
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে একাডেমি মাঠে বোলিংয়ের এক ফাঁকে ইংল্যান্ডের পেসার জফরা আর্চার

মিরপুরে গানের তালে তালে বাউন্স তুললেন আর্চাররা

সকাল সকাল মিরপুর ২ নম্বরে ব্যস্ততা। ইংল্যান্ড দল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আসবে। সে জন্য স্টেডিয়ামের চারপাশে নিরাপত্তাকর্মীরা তৎপর। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের ক্যামেরাবন্দী করতে সংবাদকর্মীরাও ভিড় করেন। মাঠে এসে ড্রেসিংরুমের সামনে কিছুক্ষণ ফুটবল খেলে ও ফিটনেসের কাজ সেরে ব্যাটিং ও বোলিং অনুশীলনের জন্য একাডেমি মাঠের পথ ধরেন ইংল্যান্ড দলের ক্রিকেটাররা

এ পথটা ভালোই চেনা ইংল্যান্ডের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান ডেভিড ম্যালানের। এই বাঁহাতি বিপিএল খেলছেন ২০১৬ সাল থেকে। বরিশাল বুলস, কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স, খুলনা টাইটানসের হয়ে খেলার অভিজ্ঞতা আছে ম্যালানের। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) খেলেছেন তারও আগে। ২০১৩–১৪ মৌসুমে তাঁর দল ছিল প্রাইম দোলেশ্বর।

বাংলাদেশ ক্রিকেট যে ম্যালানের ভালোই চেনা, সেটা তাঁর হাঁটাচলায় বোঝা যাচ্ছিল। দলের বাকিদের আগেই একাডেমির নেটে চলে যান। ম্যালানের মতো ইংল্যান্ড দলে আরও অনেকেই বিপিএল ও ডিপিএলের কারণে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে পরিচিত। সহ-অধিনায়ক মঈন আলী তো কদিন আগেই বিপিএল শিরোপা জিতে গেলেন। অধিনায়ক জস বাটলার, জফরা আর্চারেরও আছে বিপিএল খেলার অভিজ্ঞতা।

নেট অনুশীলনে ডেভিড ম্যালান

সাংবাদিকদের মধ্যেও ছিল এ নিয়ে আলোচনা। কে কবে কোন দলের হয়ে খেলেছেন, সেটা নিয়ে ইতিহাস ঘাঁটাঘাঁটি শুরু হয়ে গেল সবার মধ্যে। মঈনকে প্রথম কবে দেখেছেন, তা নিয়ে হয়ে গেল একপ্রস্থ আলোচনা। এমন সময় সবার কান খাড়া হয়ে গেল সাউন্ডবক্সের শব্দে।

গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেরা ক্রিকেটার স্যাম কারেনের হাতে লাল এক সাউন্ডবক্স, সেখান থেকে ভেসে আসছিল সত্তর দশকের ব্যান্ড ‘ইগলস’–এর জনপ্রিয় গান ‘হোটেল ক্যালিফোর্নিয়া’র সুর। ব্যাট–গ্লাভসের সঙ্গে যত্ন করে সাউন্ডবক্সও বয়ে বেড়াচ্ছিলেন এই অলরাউন্ডার।

একাডেমি মাঠে ইংল্যান্ডের অনুশীলন চলল ‘হোটেল ক্যালিফোর্নিয়া’র সুরে মজে। শুধু ইগলস নয়, আইরিশ রক ব্যান্ড ইউ টু–র ‘উইথ অর উইথআউট ইউ’ গানও বেজেছে। নেটে স্পট বোলিংয়ের ফাঁকে ফাঁকে ক্রিস ওকসকে সে গানের সঙ্গে ঠোঁট মেলাতে দেখা যাচ্ছিল। কিছুক্ষণ পর কানে এল আমেরিকান রক ব্যান্ডের ‘ডোন্ট স্টপ বিলিভিং’ গানটি।

ইংল্যান্ড দলের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি কোচ ম্যাথু মট ও ক্রিকেট ডিরেক্টর রব কির প্রিয় গান হয়তো এটি। ক্রিকেটারদের অনুশীলন দেখতে দেখতে দুজনকে সে গানটা বেশ উপভোগ করতে দেখা গেল। প্লে লিস্টে ছিল রেড হট চিলি পেপার্সের ‘ক্যালিফর্নিকেশন’ গানও। দ্য ব্ল্যাক আইড পিয়ার্সের ‘আই গট আ ফিলিং’ও শুনছিলেন ওকস–মঈনরা।

নেট অনুশীলনে জস বাটলার

অনুশীলনে অনেকটাই গানের তালে তালে উঠেছে আর্চার–টপলিদের বাউন্স। একাডেমি মাঠে যে তিনটি উইকেটে ব্যাটিং করছিলেন ইংলিশরা, সেখানে ছিল সবুজ ঘাস। ভালো লেংথ থেকে বল লাফিয়ে উঠছিল। আর্চার, উড, রিচ টপলিদের বলগুলো বাটলার, মালানদের মাথা বরাবর যাচ্ছিল। উড তো সিম মুভমেন্টের সঙ্গে সুইংও পাচ্ছিলেন।

তবে ১ মার্চ শুরু হতে যাওয়া তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের উইকেট যে এমন হবে না, সেটি প্রায় নিশ্চিত। সেটি হয়তো ইংল্যান্ড দলেরও জানা। সে জন্যই ইংল্যান্ডের নেট বোলারের চাহিদাপত্রে কোনো স্থানীয় পেসার ছিলেন না। আজ যাঁরা ইংল্যান্ডের নেটে বোলিং করেছেন, সবাই ছিলেন স্পিনার।