আইপিএলের ১৭তম আসর শুরু হতে বাকি এক সপ্তাহ। তবে বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়ের জন্য শুরুর আগেই শেষ হয়ে গেছে এবারের আসর। কেউ চোটের কারণে ছিটকে পড়েছেন, কেউবা আবার নিজেই ব্যক্তিগত কারণে সরে গেছেন। টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই বিদায় নিশ্চিত হয়ে যাওয়া এমন ক্রিকেটারের সংখ্যা কিন্তু কম নয়।
দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার লুঙ্গি এনগিডি এই ছিটকে যাওয়াদের তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন। এর আগে ভারতের দুই পেসার, ইংল্যান্ডের তিন ক্রিকেটারেরও আইপিএল শেষ হয়ে গেছে। এ ক্ষেত্রে দলগতভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স ও দিল্লি ক্যাপিটালসের। দুই দলকেই দুজন করে খেলোয়াড় বদলাতে হয়েছে।
হ্যারি ব্রুক (দিল্লি ক্যাপিটালস)
হ্যারি ব্রুককে নিলাম থেকে ৪ কোটি ইউরোয় কিনেছিল দিল্লি ক্যাপিটালস। তবে ইংল্যান্ডের এই ব্যাটসম্যানকে পাচ্ছে না দিল্লি। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে আইপিএল থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন তিনি। পরে জানা গেছে দাদির মৃত্যুতে শোকাহত পরিবারের পাশে থাকতে ভারতে যাবেন না ব্রুক।
মোহাম্মদ শামি (গুজরাট টাইটানস)
গত আসরে গুজরাটের ফাইনাল খেলার পেছনে অন্যতম নায়ক ছিলেন মোহাম্মদ শামি। ডানহাতি এ পেসার ১৭ ম্যাচে নিয়েছিলেন টুর্নামেন্ট–সর্বোচ্চ ২৮ উইকেট। তবে চোটের কারণে শামিকে এবার দলে পাচ্ছে না গুজরাট। গত বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনালের পর থেকে মাঠের বাইরে থাকা শামি ডান গোড়ালিতে অস্ত্রোপচার করিয়েছেন। এখন আছেন পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্যে।
প্রসিধ কৃষ্ণা (রাজস্থান রয়্যালস)
শামির মতো প্রসিধ কৃষ্ণাও অস্ত্রোপচার–পরবর্তী পুনর্বাসনে আছেন। গত মাসে উরুর চোটে অস্ত্রোপচার করা এই পেসার ছিটকে পড়েছেন রাজস্থান রয়্যালস থেকে। নিলামে ১০ কোটি রুপি পাওয়া প্রসিধ রয়্যালসের হয়ে প্রথম মৌসুমেই ১৭ ম্যাচে নিয়েছিলেন ১৯ উইকেট। এবার তাঁর বদলি কে হবেন, তা এখনো জানায়নি রাজস্থান।
মার্ক উড (লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস)
ইংলিশ পেসার মার্ক উড আইপিএল থেকে সরে গেছেন চাপ–ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে। টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও সামনের গ্রীষ্ম মৌসুম কেন্দ্র করে বিশ্রামে থাকবেন তিনি। ২০২২ সালে উডকে সাড়ে সাত কোটি রুপিতে কিনেছিল লক্ষ্ণৌ। যদিও প্রথম মৌসুমে চোটের কারণে এক ম্যাচও খেলতে পারেননি। গত আসরে ৪ ম্যাচ খেলে নিয়েছেন ১১ উইকেট। উডের জায়গায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের নতুন পেস তারকা শামার জোসেফকে দলে ভিড়িয়েছে লক্ষ্ণৌ।
গাস অ্যাটকিনসন (কলকাতা নাইট রাইডার্স)
উডের মতো অ্যাটকিনসনকেও আইপিএল থেকে সরিয়ে নিয়েছে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)। ২৬ বছর বয়সী এই পেসারকে এবারের নিলামে ১ কোটি রুপিতে কিনেছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। অ্যাটকিনসন নাম সরিয়ে নেওয়ার পর তাঁর জায়গায় দুশমন্থ চামিরাকে নিয়েছে কলকাতা। শ্রীলঙ্কার এই পেসার নিলামে অবিক্রিত ছিলেন।
জেসন রয় (কলকাতা নাইট রাইডার্স)
গত মৌসুমে কলকাতার হয়ে আট ম্যাচে ১৫১.৬০ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করেছিলেন জেসন রয়। এবারও তেমন কিছুরই আশা ছিল দলটির। কিন্তু ইংল্যান্ডের এই ওপেনার ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে আইপিএল থেকে নাম সরিয়ে নিয়েছেন। এর আগে ২০২০ ও ২০২২ আসরেও নিজেকে প্রত্যাহার করেছিলেন রয়। কলকাতা রয়ের জায়গায় নিয়েছে আরেক ইংলিশ ওপেনার ফিল সল্টকে। গত বছর দিল্লি ক্যাপিটালসে খেলা সল্ট সর্বশেষ নিলামে অবিক্রিত ছিলেন। তাঁকে দেড় কোটি রুপির ভিত্তিমূল্যেই পেয়েছে কলকাতা।
ডেভন কনওয়ে (চেন্নাই সুপার কিংস)
গত বছর চেন্নাইয়ের শিরোপাজয়ের পথে সবচেয়ে বেশি ৬৭২ রান করেছিলেন ডেভন কনওয়ে। তবে নিউজিল্যান্ডের বাঁহাতি এ ব্যাটসম্যানকে এবার মাঠে পাচ্ছে না এমএস ধোনির দল। আঙুলের চোটে আট সপ্তাহের জন্য ছিটকে গেছেন তিনি। চেন্নাই এখনো কনওয়ের বদলির নাম ঘোষণা করেনি।
লুঙ্গি এনগিডি (দিল্লি ক্যাপিটালস)
ব্যক্তিগত কারণে হ্যারি ব্রুক নাম সরিয়ে নেওয়ার এক দিন পরই দিল্লি জানিয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকার লুঙ্গি এনগিডিকেও পাচ্ছে না তারা। এক্ষেত্রে কারণটা চোটের। ২০২২ সালে দিল্লিতে যোগ দেওয়ার পর দুই মৌসুমে একটি ম্যাচও খেলতে পারেননি এনগিডি। তাঁর ছিটকে যাওয়ার দিনে অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান ফ্রেজার-ম্যাগারকে দলভুক্ত করার খবর জানিয়েছে দিল্লি।