টেস্ট ক্রিকেট থেকে সাকিব আল হাসানের বিদায়টা তাহলে তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী ঘরের মাঠে খেলেই হচ্ছে! বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ আজ পরিচালনা পর্ষদের সভা শেষে সংবাদ মাধ্যমকে সেরকম ইঙ্গিতই দিয়েছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে ঘরের মাঠে সাকিবের শেষ টেস্ট খেলা নিয়ে ফারুক আজ বলেছেন, ‘সাকিবের সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়েছে। সাকিবের খুব ভালো সম্ভাবনা আছে বাংলাদেশ থেকে অবসর নেওয়ার।’
এর আগে ভারতের বিপক্ষে কানপুর টেস্ট শুরুর আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে সাকিব জানিয়ে দেন, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হোম সিরিজে মিরপুর টেস্ট দিয়ে বিদায় নিতে চান টেস্ট ক্রিকেট থেকে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তাঁর দেশে এসে খেলার এবং খেলা শেষে প্রয়োজনে নির্বিঘ্নে দেশ ছাড়ার ব্যবস্থা করবে বিসিবি। টি–টোয়েন্টি থেকেও অবসর নেওয়ায় ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শেষেই যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান তিনি।
আমাদের যতটুকু ক্ষমতা...ও ইনডোরে যাবে, মাঠে খেলবে, প্র্যাকটিস মাঠে যাবে। এই দায়িত্বটা (স্টেডিয়ামে নিরাপত্তা) নেওয়া আমাদের জন্য খুব সহজ। এটা আমরা নিতে পারব।বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ, মিরপুরে সাকিবকে নিরাপত্তা দেওয়া নিয়ে
সাকিবের ঘরের মাঠে খেলে অবসর নেওয়া নিয়ে এরপর থেকেই নানা রকম আলোচনা চলছে। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিসিবি সভাপতি তখন বলেছিলেন, সাকিবের নিরাপত্তার দায়িত্ব সরকারের। এ ব্যাপারে বিসিবির কিছু করার নেই। পরে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়াও এ নিয়ে একাধিকবার সংবাদমাধ্যমে কথা বলেন। সর্বশেষ নারী টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ উপলক্ষে শারজায় গিয়ে উপদেষ্টা বলেছেন, তিনিও চান সাকিবের মতো একজন ক্রিকেটার দেশের মাটিতে খেলে অবসর নিন। সাকিবের নিরাপত্তার ব্যাপারেও আশ্বাস দেন আসিফ মাহমুদ।
সাকিবের নিরাপত্তার প্রশ্নে ফারুক আহমেদ আজও বলেছেন, দায়িত্বটা সরকারের, ‘আমি তো একটা ছোট মানুষ, বোর্ড প্রেসিডেন্ট। আমার হাতে ক্ষমতা খুব কম। সাকিবের ব্যাপারটা পুরোপুরি সরকারি পর্যায় থেকে আসতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আছে, উপদেষ্টা আছেন, প্রধান উপদেষ্টা আছেন। তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন।’
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে নিজের নিরাপত্তা নিয়ে অবশ্য সাকিবও খুব একটা চিন্তিত নন বলে জানা গেছে। তাঁর মূল দুশ্চিন্তা দেশে খেলতে এসে পরে আবার দেশ ছাড়তে পারবেন কি না, সেটা নিয়ে। এই দুশ্চিন্তার যৌক্তিক কারণও আছে। সরকার পরিবর্তনের পর ঢাকার আদাবর থানায় হওয়া এক হত্যা মামলায় আসামী করা হয়েছে মাগুরা–১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাকিবকেও। তা ছাড়া ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তারকৃতরা ছাড়া আওয়ামী লীগের কোনো সংসদ সদস্য বা নেতাকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। দেশে ফিরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট খেললে সাকিবই হবেন প্রথম সেরকম কেউ।
সবাই সব রকম নিরাপত্তার কথা বললেও খেলা শেষে সাকিবের দেশ ছাড়তে পারা নিয়ে প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলছেন না। তবে বিসিবি সভাপতি আশ্বস্ত করেছেন, মিরপুরে সাকিবের নিরাপত্তার বিষয়টি তারা দেখবেন, ‘আমাদের যতটুকু ক্ষমতা...ও ইনডোরে যাবে, মাঠে খেলবে, প্র্যাকটিস মাঠে যাবে। এই দায়িত্বটা (স্টেডিয়ামে নিরাপত্তা) নেওয়া আমাদের জন্য খুব সহজ। এটা আমরা নিতে পারব।’