নতুন টি–টোয়েন্টি লিগ চালু করতে হলে আইসিসির অনুমতি লাগবে সৌদি আরবের
নতুন টি–টোয়েন্টি লিগ চালু করতে হলে আইসিসির অনুমতি লাগবে সৌদি আরবের

আইপিএলকে টক্কর দিতে ৬ হাজার কোটি টাকার লিগ আনছে সৌদি আরব

বিশ্বজুড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক ক্রিকেট লিগগুলোর রমরমা অবস্থা। এতে সবচেয়ে বড় প্রভাব আইপিএলের, যেখানে খেলতে মুখিয়ে থাকেন ক্রিকেটাররা। থাকবেন নাই–বা কেন? আইপিএল মানেই তো অর্থের ঝনঝনানি।

অর্থের পাশাপাশি জনপ্রিয়তায়, তারকার সমাগমে আইপিএলের সমকক্ষ বা প্রায় কাছাকাছি কোনো লিগ এই মুহূর্তে নেই। ফলে ক্রিকেটে ভারতের দাপট দিন দিন বেড়েই চলেছে। আইসিসি থেকে তাদের আয়ও অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি। বড় কয়েকটি দল বাদে অন্যগুলো রীতিমতো ভুগছে।

এই সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক বোর্ড সদস্য নিল ম্যাক্সওয়েল। ৫৭ বছর বয়সী ম্যাক্সওয়েলের আরেক পরিচয় অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের ব্যবস্থাপক। যুক্তরাষ্ট্রে টি–টোয়েন্টি লিগ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও তাঁর বড় অবদান আছে।

মেয়েদের ক্রিকেট লিগও আয়োজন করতে চায় সৌদি আরব
ছবি: ফেসবুক

অস্ট্রেলিয়ান সংবাদমাধ্যম দ্য এজ জানিয়েছে, নিল ম্যাক্সওয়েল একটি পরিকল্পনা নিয়ে এক বছর ধরে গোপনে কাজ করছেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, টেনিসের গ্র্যান্ড স্লামের আদলে সৌদি আরবভিত্তিক একটি টি–টোয়েন্টি লিগ চালু করবেন তিনি। এতে ৫০ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬০৬৯ কোটি টাকা) বিনিয়োগ করবে সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত ক্রীড়া বিনিয়োগকারী সস্থা এসআরজে স্পোর্টস ইনভেস্টমেন্টস। এ ব্যাপারে আইসিসির সঙ্গে সৌদি ক্রিকেট কর্তৃপক্ষের আলোচনাও চলছে।

টেনিসে বছরে চারটি গ্র্যান্ড স্লাম হয়—অস্ট্রেলিয়ান ওপেন, ফ্রেঞ্চ ওপেন, উইম্বলডন ও ইউএস ওপেন। একইভাবে সৌদিও বছরের আলাদা সময়ে ভিন্ন চারটি দেশে ক্রিকেট লিগ আয়োজনের পরিকল্পনা করছে। ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদের টুর্নামেন্টও থাকবে। ফাইনাল হতে পারে সৌদিতে।

এসআরজে স্পোর্টস ইনভেস্টমেন্টস সৌদি আরবের সর্বজনীন বিনিয়োগ তহবিলের অংশ। ক্রীড়াঙ্গনের প্রসারে তারা ১ লাখ কোটি ডলার (১ কোটি ২১ লাখ ৩৯ হাজার কোটি টাকা) নিয়ে নেমেছে।

পরিকল্পিত টি–টোয়েন্টি লিগের মূল লক্ষ্য নতুন রাজস্ব উৎস সৃষ্টি করা এবং ক্রিকেটকে ছড়িয়ে দেওয়া। বিশেষ করে ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের বাইরে ক্রিকেটের অর্থনৈতিক স্থিতি নিশ্চিত করার মতো বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এটি ভূমিকা রাখতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, এর মধ্য দিয়ে আর্থিকভাবে দুর্বল ক্রিকেট বোর্ডগুলো সংকট কাটিয়ে উঠবে।  

আইসিসি সভাপতি জয় শাহর অনুমতির অপেক্ষায় আছে সৌদি আরব

এই লিগ কবে শুরু হবে, তা এখনো জানা যায়নি। তবে এটিকে আলোর মুখ দেখাতে চাইলে নিশ্চিতভাবেই কিছু বাধার সম্মুখীন হতে হবে। কারণ, এর জন্য আইসিসি ও ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) সবুজ সংকেতের প্রয়োজন হবে। ভারতীয় খেলোয়াড়দের অনাপত্তিপত্র দেওয়ার জন্য বিসিসিআইকেও রাজি করাতে হবে। শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য আইসিসির চেয়ারম্যান জয় শাহর ওপর নির্ভর করতে হবে।

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরা দাবি করে আসছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে বিশ্বজুড়ে সৌদি আরবের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। সুনাম ফেরাতেই সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ক্রীড়াঙ্গনে অঢেল অর্থ বিনিয়োগ করতে শুরু করেছেন, যেটিকে বলা হচ্ছে ‘স্পোর্টস ওয়াশিং’। ফুটবল, গলফ, বক্সিং, টেনিস, রেসিংসহ আরও অনেক খেলায় বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি।

আইপিএল মেগা নিলাম সৌদি আরবের জেদ্দায় অনুষ্ঠিত হয়েছে

এবারের আইপিএল মেগা নিলাম সৌদি আরবের জেদ্দায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০৩৪ ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজন স্বত্বও পেয়ে গেছে সৌদি। শোনা যাচ্ছে, দেশটি ২০৩৬ অলিম্পিকের আয়োজক হতেও বিড করবে।