দুর্দান্ত এক থ্রোয়ে শন উইলিয়ামসকে রানআউট করেন সাকিব
দুর্দান্ত এক থ্রোয়ে শন উইলিয়ামসকে রানআউট করেন সাকিব

‘শেষ দিকে সাকিবের দারুণ ফিল্ডিং খেলাটা ঘুরিয়ে দিল’

ক্রেগ আরভিনের চোখেমুখে তখন হতাশার ছাপ। খুব কাছে গিয়েও জয় হাতছাড়া। ততক্ষণে ডাগআউট থেকে বেরিয়ে সবার সঙ্গে সৌজন্য করমর্দন শেষ করে ফেলেছেন। কিন্তু আচমকাই যেন দৃশ্যপট পাল্টে গেল। আক্ষরিক অর্থেই পাল্টাল।

গ্যাবার বড় স্ক্রিনে ভেসে উঠল ব্লেসিং মুজারাবানি ‘নট আউট’। স্টাম্প ভাঙার আগে নুরুল হাসান বল ধরেছেন স্টাম্পের সামনে থেকে। মুজারাবানি আউট তো হনইনি, ‘নো’ বলে বাড়তি এক রান পাওয়ার পাশাপাশি দলকে জেতানোর জন্য পান আরেকটি বল। জিম্বাবুয়ের জন্য ‘মরে যাওয়া’ ম্যাচটা জীবিত হয়ে উঠল আচমকাই। শেষ পর্যন্ত জিম্বাবুয়ে পারেনি, হেরেছে ৩ রানে।

শেষের নাটকের আগেও অবশ্য জিম্বাবুয়ে ম্যাচে ছিল বেশ ভালোভাবেই। শন উইলিয়ামস ও রায়ান বার্লের জুটিতে এগোচ্ছিল জিম্বাবুয়ে। ওই সময়ে সাকিবের সরাসরি থ্রোয়ে রানআউট হন উইলিয়ামস। ম্যাচশেষে আরভিন বলেছেন, ম্যাচের মোড় ঘুরে গেছে আসলে ওখানেই।

আজ বাংলাদেশের কাছে ম্যাচের শেষ বলে হারার আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ বলে জিতেছিল জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশকে ১৫০ রানে আটকে রেখে আজও জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন আরভিনরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা না হওয়ায় বাংলাদেশের বোলিং–ফিল্ডিংকেই কৃতিত্ব দিয়েছেন তিনি, ‘ম্যাচটা জেতার ভালো সুযোগ ছিল আমাদের। তবে বাংলাদেশ খুবই ভালো ফিল্ডিং করেছে। বোলিংটাও ভালো ছিল।’

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে স্বস্তির জয় পেয়েছে বাংলাদেশ

রানতাড়ায় ৩৫ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে জিম্বাবুয়ে। তাসকিন আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমান দুটি করে উইকেট নিয়ে জিম্বাবুয়েকে কোণঠাসা করে ফেলেছিলেন। তবে উইলিয়ামস ও বার্লের ৬৩ রানের জুটির সুবাদে আবারও ম্যাচে ফিরে আসে জিম্বাবুইয়ানরা। তবে ১৯তম ওভারের শেষ বলে সাকিব আল হাসানের দারুণ এক থ্রোতে রানআউট হয়ে যান উইলিয়ামস। ৪২ বলে ৬৪ রান করা উইলিয়ামসের বিদায়ে ম্যাচ আবার বাংলাদেশের দিকে ঘুরে যায়।

ম্যাচশেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ওই রানআউটের কথাই বলেছেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক, ‘প্রথমে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর ঘুরে দাঁড়ানোটা সহজ ছিল না। সেখান থেকে উইলিয়ামস খুব ভালো ব্যাটিং করেছে। রায়ানের সঙ্গে ওর জুটিটা আমাদের জয়ের আশাও জাগিয়ে তুলেছিল। কিন্তু শেষ দিকে সাকিবের দারুণ ফিল্ডিং খেলাটা ঘুরিয়ে দিল।’

অবশ্য শেষের ওই নাটক যেন ছাপিয়ে গেছে সবকিছুকেই। ম্যাচ–পরবর্তী পুরস্কার বিতরণীতে পেশাদার ক্রিকেটে ১১৫টি টেস্টসহ প্রায় ৮০০ ম্যাচ খেলা মাইকেল আথারটনও নিজের বিস্ময় লুকাতে পারছিলেন না। জিম্বাবুয়ে অধিনায়ককে জিজ্ঞাসা করেন, ‘এমন কিছু আমি আগে দেখিনি, আপনি দেখেছেন?’

৩৭ বছর বয়সী আরভিনও আর ভিন্ন কী বলবেন! একই কথার প্রতিধ্বনি করে জবাব দিলেন, ‘না, আমিও আমার ক্রিকেটজীবনে এমন কিছু কখনো দেখিনি। কোথাও শুনিওনি। মনে হচ্ছে, এবারের বিশ্বকাপ সবই দেখাচ্ছে।’