চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের মাঠে নেট বোলারদের ভিড়ে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদেরই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। অথচ নেট বোলাররা এসেছেন তাঁদের জন্যই। তবে আজ অনুশীলনে ওয়ানডে দলের ক্রিকেটারদের অনেকেই আসেননি। কাল আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে হারের পর তাঁরা আজ বিশ্রামে ছিলেন। আজ মাঠে এসেছিলেন শুধু টি–টোয়েন্টি দলের ক্রিকেটাররা। ১৪ জুলাই সিলেটে শুরু হবে টি–টোয়েন্টি সিরিজ।
নাসুম আহমেদ, রনি তালুকদার, শামীম হোসেন, রিশাদ হোসেনকে নিয়ে আজ মাঠে এসেছিলেন কোচিং স্টাফের সদস্যরা। চট্টগ্রামের ঘরের ছেলে অফ স্পিনার নাঈম ইসলামেরও অনুশীলনে আমন্ত্রণ ছিল। জাতীয় দলে না থাকলেও টিম ম্যানেজমেন্টের ভাবনায় আছেন তিনি। এই অফ স্পিনার তাই আফগানিস্তান সিরিজের শুরু থেকেই দলের সঙ্গে অনুশীলন করছেন।
আজ যাঁরা মাঠে এসেছেন, তাঁদের নিয়ে ক্রিকেটারদের অনুশীলনটা টি-টোয়েন্টি মেজাজেই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আফগানদের বিপক্ষে সর্বশেষ দুটি ওয়ানডে ম্যাচে যা হয়েছে, সেটার ছাপ ছিল আজকের অনুশীলনে। বারবার ওয়ানডে দলের ব্যাটসম্যানদের ভুলগুলো উদাহরণ হিসেবে আসছিল রনি তালুকদার ও শামীম হোসেন পাটোয়ারির ব্যাটিং অনুশীলনের সময়।
সহকারী কোচ নিক পোথাসকে এ নিয়ে খুব ব্যস্ত মনে হচ্ছিল। নাসুমের একটি আর্ম বলে রনির ড্রাইভ দেখে অনেকটা দৌড়ে গেলেন এই দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ। এরপর রনিকে নিজেই ব্যাটিং করে কৌশল দেখিয়ে দিলেন। সেটা কেমন? স্পিনারদের ভেতরে আসা বল সামনের পা খোলা রেখে খেলতে বলছিলেন তিনি। যেন ভেতরে আসা বলগুলো খেলতে সমস্যা না হয়।
রনিকে বোঝানোর জন্য পোথাসকে বলছিলেন, ‘রশিদ, মুজিব, জাদেজা…ওরা তো সোজা সোজা বল করে। ওদের ভেতরে আসা বলটাই ভয়ংকর। তুমি সামনের পা সরিয়ে রাখ। পুরো ব্যাট নিয়ে খেল। তাহলে ব্যাটের কানায় লাগলেও বল যাবে লেগের দিকে। তাতে তুমি এলবিডব্লু থেকেও রক্ষা পাবে, ১-২ রানও আসবে।’
পোথাসের এই কৌশল মনে করিয়ে দেয় গতকালের ম্যাচে তাওহিদ হৃদয় ও সাকিব আল হাসানের আউট দুটি। রশিদের গুগলিতে সম্পূর্ণ পরাস্ত হন তাওহিদ। সাকিবকে ভেতরে আসা বলে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন আরেক অভিজ্ঞ নবী। আরেক স্পিনার মুজিবের ভেতরে আসা ক্যারম বলে রিভিউ নিয়ে অবশ্য রক্ষা পান লিটন।
এই তিন স্পিনারের মূল শক্তি এটি। তিনজনের কেউই বিশাল টার্নার নন। ছোট ছোট টার্নের সঙ্গে গতিতে বৈচিত্র্য এনে ব্যাটসম্যানের মনে বিভ্রান্তির জন্ম দেন। তিনজনই জোরের ওপর বল করেন। সে কারণে ভেতরে আসা বলের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চ্যালেঞ্জটাই বেশি। কারণ এক বলেই বোল্ড, এলবিডব্লু ও কট বিহাইন্ডের সম্ভাবনা জাগে। এই চ্যালেঞ্জ সামলানোর উপায়টাই রনিকে দেখিয়ে দিচ্ছিলেন পোথাস।
একই কৌশল রিশাদকেও ধরিয়ে দিচ্ছিলেন বাংলাদেশ দলের সহকারী কোচ। লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানদের জন্য রশিদ-মুজিবের বোলিং তো দুঃস্বপ্নের মতো। সামনের পা সরিয়ে সোজা ব্যাটে ঠেলে খেলার কৌশলটা তাঁদেরও দেখিয়ে দিচ্ছিলেন পোথাস।