টানা চার ম্যাচ হেরেছে মাশরাফির সিলেট স্ট্রাইকার্স
টানা চার ম্যাচ হেরেছে মাশরাফির সিলেট স্ট্রাইকার্স

বিপিএল

মাশরাফির সিলেটের টানা চতুর্থ হার, শীর্ষে চট্টগ্রাম

ঘরের মাঠেও ভাগ্য পাল্টাছে না সিলেট স্ট্রাইকার্সের। ঢাকায় প্রথম দুটি ম্যাচ হেরে সিলেটে যাওয়া স্ট্রাইকার্স ঘরের মাঠেও টানা দ্বিতীয় ম্যাচে হেরেছে। আজ সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে সিলেটকে টানা চতুর্থ হার উপহার দিয়ে আপাতত কয়েক ঘণ্টার জন্য হলেও বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে উঠে গেছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। রাতের ম্যাচে দুর্দান্ত ঢাকাকে হারালে আবারও পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে উঠে যেতে পারে খুলনা টাইগার্স।

আগে ব্যাট করে ৪ উইকেট হারালেও সিলেট তোলে মাত্র ১৩৭ রান। তাড়া করতে নেমে লক্ষ্যটা ১৪ বল ও ৮ উইকেট হাতে রেখেই টানা তৃতীয় জয় পেয়ে যায় চট্টগ্রাম।

টস জিতে সিলেট স্ট্রাইকার্স অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার ব্যাটিং নেওয়ার সিদ্ধান্তটা ঠিক হলো কি না, সেই প্রশ্ন উঠে যায় দ্বিতীয় ওভারের খেলা শেষ হতেই। ৮ রান তুলতেই ২ উইকেট নেই স্বাগতিকদের। ফিরে যান দুই ওপেনার মোহাম্মদ মিঠুন ও নাজমুল হোসেন। দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে মিঠুনকে বোল্ড করার পর শেষ বলে নাজমুলকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন ওমানের বাঁহাতি পেসার বিলাল খান। পরে যিনি হ্যারি টেক্টরকে ফিরিয়ে পেয়েছেন তৃতীয় উইকেট। ম্যাচে ৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেওয়া বিলালই এখন পর্যন্ত এবারের বিপিএলের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। ৫ ম্যাচে ৮ উইকেট নেওয়া বিলাল ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন ৭.৫৫।

৮ রানে ২ উইকেট হারানো সিলেটকে দ্বিতীয় উইকেটে ৮.১ ওভারে ৫৭ রান এনে দেন টেক্টর ও জাকির হাসান। রানের গতি অবশ্য বাড়াতে পারেননি তাঁরা। ২৬ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৩১ রান করে ফিরেছেন জাকির। ১৭তম ওভারে বিলালের তৃতীয় শিকার হওয়া আইরিশ অলরাউন্ডার টেক্টর ৪৫ রান করতে খেলেছেন ৪২ বল।

৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা চট্টগ্রামে ওমানি পেসার বিলাল খান

১১তম ওভারে জাকিরের বিদায়ের পর রায়ান বার্লকে নিয়ে ৪২ রান যোগ করেন টেক্টর। বার্ল শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ২৯ বলে ৩৪ রান করে। টেক্টরের বিদায়ের পর উইকেটে আসা আরিফুল হক ১২ বলে করেছেন ১৭ রান।

রান তাড়ায় তরতরিয়ে এগিয়েছে চট্টগ্রাম। তানজিদ হাসান ও আভিস্কা ফার্নান্ডোর উদ্বোধনী জুটিতে ৩.১ ওভারে আসে ২৩ রান। শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যান ফার্নান্ডো ১২ বলে ১৭ রান করে তানজিম হাসানের বলে জাকিরের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। এরপর তানজিদ এবারের বিপিএলে আজই প্রথম খেলতে নামা টম ব্রুসকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ৬৫ বলে যোগ করেন ৮৯ রান। তানজিদকে বোল্ড করে জুটি ভাঙেন টেক্টর। এর আগেই অবশ্য এবারের বিপিএলে নিজের প্রথম অর্ধশতক পেয়ে যান বাংলাদেশ জাতীয় দলের ওপেনার। ৪০ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ঠিক ৫০ রান তানজিদের।

শাহাদাত হোসেনকে নিয়ে চট্টগ্রামের বাকি কাজটা শেষ করেন নিউজিল্যান্ড থেকে আসা ব্রুস। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে ১১৩তম ম্যাচ খেলা ব্রুস বাংলাদেশে খেলতে এসে প্রথম ম্যাচেই পেয়ে গেছেন ‘৫০’–এর দেখা। ৪৪ বলে ৫১ রান করে অপরাজিত থাকা ৩২ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান মেরেছেন ৩টি চার ও ২টি ছক্কা। শাহাদাত অপরাজিত ছিলেন ১১ বলে ১৩ রান করে।

৫০ ছোাঁয়ার পর চট্টগ্রামে ওপেনার তানজিদ হাসান

চট্টগ্রামের ইনিংসে বল করেছেন সাতজন। তাঁদের মধ্যে ৪ ওভারের কোটা পূরণ করেছেন শুধু সামিত প্যাটেল। ইংলিশ বাঁহাতি স্পিনার ৪ ওভারে দিয়েছেন ২২ রান। অধিনায়ক মাশরাফি মাত্র ১ ওভার বল করে দিয়েছেন ১৪ রান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

সিলেট স্ট্রাইকার্স: ২০ ওভারে ১৩৭/৪ (নাজমুল ৫, মিঠুন ১, টেক্টর ৪৫, জাকির ৩১, বার্ল ৩৪*, আরিফুল ১৭*; আল আমিন ৪–০–২১–০, বিলাল ৪–০–২৪–৩, শহীদুল ৩–০–২৯–০, নিহাদউজ্জামান ৪–০–২৭–১, শাহাদাত ২–০–১৯–০, সৈকত ৩–০–১৭–০)।

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স: ১৭.৪ ওভারে ১৩৮/২ (তানজিদ ৫০, ফার্নান্ডো ১৭, ব্রুস ৫১*, শাহাদাত ১৩*; আরিফুল ২–০–১৬–০, টেক্টর ২–০–২১–১, রেজাউর ৩–০–২১–০, তানজিম ২–০–১৯–১, হেমন্ত ৩.৪–০–২১–০, মাশরাফি ১–০–১৪–০, প্যাটেল ৪–০–২২–০)।

ফল: চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ৮ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: বিলাল খান।