এক পঞ্জিকাবর্ষে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান (১৯২১) তাঁর। ভেঙেছেন মুশফিকুর রহিমের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এই পঞ্জিকাবর্ষে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় শীর্ষে থাকা বাবর আজমের পরই তাঁর অবস্থান। তিনি লিটন দাস। আইসিসি টেস্ট ব্যাটসম্যানদের র্যাঙ্কিংয়ে ১২তম স্থানে উঠে এসেছেন লিটন। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে যা ব্যাটসম্যানদের র্যাঙ্কিংয়ে সর্বোচ্চ।
লিটন সম্প্রতি ডাক পেয়েছেন আইপিএলেও। ২০২১ সালেও তিন সংস্করণ মিলিয়ে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন লিটন। তবে এ বছরের মতো ধারাবাহিক ছিলেন না। লিটনের এই সফলতায় তাঁকে যাঁরা কাছ থেকে দেখেছেন, সম্ভবত কেউ–ই অবাক হননি। তাঁর ওপর ভরসা ছিল বলেই ক্যারিয়ারের প্রথম চার বছরে সেভাবে ভালো করতে না পারার পরও জাতীয় দলের বাইরে ছিটকে পড়েননি।
মজার ব্যাপার, লিটনের প্রতি ভরসা কিন্তু এ দেশের বাইরের অনেকেরও ছিল। যেমন ধরুন, ভারতের তারকা অলরাউন্ডার রবিচন্দ্রন অশ্বিন। লিটনের প্রতিভা অশ্বিন আগেই আঁচ করতে পেরেছিলেন। ২০১৫-১৬ মৌসুমে লিটনের শুরুর দিনগুলো দেখেই তাঁর মধ্যে বিরাট কোহলি, জো রুটদের মতো ব্যাটসম্যান হওয়ার সম্ভাবনাই দেখেছিলেন অশ্বিন। কথাটা লিটনকেই বলেছেন তিনি।
ভারত–বাংলাদেশ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট হয়েছে মিরপুরে। তখন একই হোটেলে ছিলেন ভারত ও বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে হোটেলের সুইমিংপুলে লিটনের সঙ্গে সময় কাটান অশ্বিন। সেখানেই লিটনকে এই কথা বলেছেন। এই কথোপকথন নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ভক্তদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন অশ্বিন।
ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা এই স্পিনার লিটনকে বলেছেন, ‘তোমাকে ২০১৫-১৬ সালের দিকে টেস্ট খেলতে দেখেছিলাম। তোমার ব্যাটিং স্টাইল দেখেই আমার মনে হয়েছিল তুমি বাংলাদেশ ক্রিকেটের গতিপথ বদলে দেবে। কিন্তু এরপর তোমার পারফরম্যান্সে আমি কিছুটা হতাশ হয়েছি। ভেবেছিলাম তুমি বিরাট কোহলি, কেইন উইলিমাসন, জো রুটদের পর্যায়ে যেতে পারবে।’
লিটনের জবাবে হতাশা ও আক্ষেপের সঙ্গে আত্মবিশ্বাসও মেশানো ছিল, ‘আপনার সঙ্গে আমি একমত, অ্যাশ ভাই। কিন্তু আমাদের এখানে ক্রিকেট সংস্কৃতি অন্য রকম। শুধু এখানে খেলি বলে আমরা ততটা আলোচনায় আসতে পারি না। অন্য কোনো পিচে খেলতে গেলেই নতুন করে মানিয়ে নিতে সময় লাগে।’
এই ব্যাখ্যার পাশাপাশি আত্মবিশ্বাসও ফুটল লিটনের কথায়, ‘দুর্দান্ত কিছু করার পথ আমি অনেকটা বুঝে গিয়েছি। রান করার নিজস্ব একটা ফর্মুলা পেয়ে গেছি।’ লিটনে মুগ্ধ অশ্বিন শুভকামনাও জানালেন, ‘লিটন তুমি ভালো করলে সবচেয়ে বেশি খুশি হব আমি।’
টেস্টে ২-০ ব্যবধানে জিতলেও ওয়ানডে সিরিজে ২-১ এ সিরিজ জেতে বাংলাদেশ। অশ্বিন কথা বলেছেন ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই সাফল্য নিয়ে, ‘ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশ খুবই সফল। ঘরের মাঠে শেষ ১০ সিরিজের ৯টিতেই জিতেছে তারা। এটা মোটেই ছোট অর্জন নয়।’