ভারতের সাবেক অধিনায়ক ও কিংবদন্তি স্পিনার অনিল কুম্বলের কথা শুনলে তাঁকে বেরসিক মনে হতে পারে
ভারতের সাবেক অধিনায়ক ও কিংবদন্তি স্পিনার অনিল কুম্বলের কথা শুনলে তাঁকে বেরসিক মনে হতে পারে

ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে ভালো করার যে উপায় বললেন কুম্বলে

আইসিসি ও এসিসির টুর্নামেন্ট ছাড়া ভারত–পাকিস্তানের ক্রিকেটীয় দ্বৈরথ এখন দেখা যায় না। রাজনৈতিক কারণে সেটি ঘটলেও আগামী দুই মাসের মধ্যে এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপ মিলিয়ে একাধিকবার দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর দ্বৈরথ দেখার সুযোগ পাবেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। স্বাভাবিকভাবেই দুই প্রতিবেশী দেশের ক্রিকেট ময়দানে মুখোমুখি হওয়া নিয়ে এখন থেকেই বিভিন্ন আলোচনা চলছে। নিশ্চিতভাবেই কেউ কাউকে এতটুকু ছাড় দেবে না মাঠের লড়াইয়ে। খেলোয়াড়দের ওপর চাপও থাকবে অনেক বেশি। কিন্তু ভারতের সাবেক অধিনায়ক ও কিংবদন্তি স্পিনার অনিল কুম্বলের কথা শুনলে তাঁকে বেরসিক মনে হতে পারে। কিন্তু কুম্বলের কথাটা ক্রিকেটীয় দৃষ্টিকোণ থেকে। তাঁর পরামর্শ, ভারত–পাকিস্তান ম্যাচকে অন্য সব সাধারণ ম্যাচের চোখেই দেখা উচিত।

গতকাল বেঙ্গালুরুতে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচনী অনুষ্ঠানে এই কথা বলেন ভারতের হয়ে টেস্টে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি (৬১৯) এ লেগ স্পিনার। পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বৈরথের চাপ না নিয়ে কোহলিদের নিজেদের খেলাটা খেলার পরামর্শও দিয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক কোচ। খেলোয়াড়ি জীবনে কুম্বলে নিজে পাকিস্তানের বিপক্ষে বরাবরই উজ্জ্বল ছিলেন। ১৫ টেস্টে নিয়েছেন ৮১ উইকেট। এর মধ্যে সবচেয়ে স্মরণীয় পারফরম্যান্স নিশ্চয়ই মনে আছে? ১৯৯৯ দিল্লি টেস্টে পাকিস্তানের এক ইনিংসে সবগুলো উইকেটই নিয়েছিলেন! ওয়ানডেতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে ৩৪ ম্যাচে নিয়েছেন ৫৪ উইকেট।

সেই মুহূর্ত! ১৯৯৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের বিপক্ষে দিল্লি টেস্টে অনিল কুম্বলে ইতিহাসের দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে পেয়েছিলেন ইনিংসে ১০ উইকেট।

ভারত–পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে কুম্বলে নিজের খেলোয়াড়ি জীবনের স্মৃতি টেনে আনেন, ‘আমাদের সময়ে বলা হতো, কেনিয়ার কাছে হারো, সমস্যা নেই কিন্তু পাকিস্তানের কাছে হারা যাবে না। খেলোয়াড়দের ওপর চাপ এবং প্রত্যাশাটা এমনই ছিল।’

সেই চাপ যে এখন কমেছে সেটাও জোর দিয়ে বলা যায় না। এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপে ভারত–পাকিস্তান দ্বৈরথ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এরই মধ্যে পক্ষে–বিপক্ষে আলোচনা ও তর্ক–বিতর্ক শুরু হয়েছে। খেলোয়াড়দের ওপর চাপটা তো এমনিতেই থাকে, তার ওপর এসব ব্যাপার মিলিয়ে প্রত্যাশার বোঝাটা অনেক বেড়ে যায়। যে কারণে এমন ম্যাচে শুধু চাপের কারণে অপ্রত্যাশিত ফল আসতে পারে। তাই কুম্বলের পরামর্শ, ‘তখন ভারত–পাকিস্তান ম্যাচকে এমন চোখেই দেখা হতো। এ কারণে ভালো করার উপায় হলো, এটাকে অন্য সব ম্যাচের মতোই দেখা।’

২৪ বছর আগে দিল্লি টেস্টে পাকিস্তানের এক ইনিংসে ১০ উইকেট নেওয়া নিয়েও কথা বলেছেন কুম্বলে, ‘১০ উইকেট নেওয়ার স্বপ্ন নিয়ে মাঠে নামিনি। যদিও এটা যেকোনো বোলারেরই স্বপ্ন। কিন্তু কলকাতায় এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পরের ম্যাচেই পাকিস্তানের বিপক্ষে একটি উইকেট নিতেই খুব কষ্ট হয়েছিল। ক্রিকেট খেলাটা এমনই।’ ইডেন গার্ডেনসে সেই টেস্টে ভারতকে ৪৬ রানে হারিয়েছিল পাকিস্তান। ১৩৯ রানে ১ উইকেট নিয়েছিলেন কুম্বলে।

এবারের এশিয়া কাপ শুরু হবে ৩০ আগস্ট থেকে। হাইব্রিড মডেলে পাকিস্তানের সঙ্গে ম্যাচগুলো হবে শ্রীলঙ্কাতেও। ভারত পাকিস্তানে খেলতে যাবে না বলেই এ ব্যবস্থা। গ্রুপপর্বে ভারত ও পাকিস্তানের ম্যাচটি ক্যান্ডিতে ২ সেপ্টেম্বর। সুপার ফোরে দুই দল উঠলে তাদের ম্যাচটি ১০ সেপ্টেম্বর, কলম্বোতে। এবারের এশিয়া কাপের ফাইনাল ১৭ সেপ্টেম্বর, কলম্বোতে।