এবারের বিশ্বকাপে সবচেয়ে বড় বিস্ময়ের নাম ইংল্যান্ড। বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা বাংলাদেশকে ছাড়া হারাতে পারেনি কোনো দলকে। পয়েন্ট তালিকায় তাদের অবস্থান সবার নিচে। এখন ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারবে কি না, সেটাই বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অথচ এই ইংল্যান্ডই বিশ্বকাপে অন্যতম ফেবারিট ছিল। প্রায় সব ক্রিকেট বিশ্লেষকই শীর্ষ চারে জস বাটলারের দলকে রেখেছিলেন। তবে টানা পাঁচ হারে প্রথম পর্ব থেকে ইংলিশদের বিদায় নিশ্চিত হয়েছে। সর্বশেষ গত রাতে অস্ট্রেলিয়ার কাছে তারা হেরেছে ৩৩ রানে। কেন ইংল্যান্ড এভাবে ধুঁকছে? এর কারণ খোঁজার চেষ্টা করেছেন পাকিস্তান কিংবদন্তি ওয়াসিম আকরাম।
২০১৫ বিশ্বকাপেও প্রথম পর্ব থেকে ছিটকে যায় ইংল্যান্ড। অ্যাডিলেডে বাংলাদেশের কাছে হেরে সেবার ইংলিশদের বিদায়ঘণ্টা বাজে। সেই হারের পর দেশটির ক্রিকেটেও আসে আমূল পরিবর্তন। আধুনিক ক্রিকেটকে নতুন মাত্রায় নিজে যাওয়ার ফলস্বরূপ সর্বশেষ দুটি বিশ্বকাপেরই (২০১৯ ওয়ানডে ও ২০২২ টি-টোয়েন্টি) চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে একই সময়ে দুটি বিশ্বকাপ জয়ের খেতাব পাওয়া দলও তারা। কিন্তু এবার কেন এই দুর্দশা?
আকরাম মনে করেন, সবাইকে সাদা বলের ক্রিকেট শিখিয়ে ইংল্যান্ড নিজেই খেলা ভুলে গেছে। গতকাল বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার পর এই কিংবদন্তি পেসার দাবি করেছেন, ইংল্যান্ড ওয়ানডেকে গুরুত্ব দেয়নি, ‘ইংল্যান্ডের জন্য দুঃখের দিন। সব ক্রিকেট বিশ্লেষক ইংল্যান্ডকে বিশ্বকাপের ফেবারিটের তালিকায় রেখেছিল। এর কারণ, তারা যেভাবে ওয়ানডে ক্রিকেট খেলে থাকে। গত তিন-চার বছরে ওরা দুনিয়াকে শিখিয়েছে, কীভাবে সাদা বলের ক্রিকেটটা খেলতে হয়, তবে নিজেরাই ভুলে গেছে। কারণ, তারা ওয়ানডে ক্রিকেটকে গুরুত্ব দেয়নি।’
ইংল্যান্ডের এবারের বিশ্বকাপ দল নিয়ে বেশ নাটক হয়েছে। শুরুতে জেসন রয়কে দলে নিলেও পরে তাঁকে বাদ দিয়ে হ্যারি ব্রুককে নেওয়া হয়। বিশ্বকাপের জন্য দলে ফেরানো হয় অবসর নেওয়া বেন স্টোকসকে।
ইংল্যান্ডের এই সিদ্ধান্তেরও সমালোচনা করেন আকরাম, ‘যে গত কয়েক বছরে সবচেয়ে বেশি ওয়ানডে খেলেছে, সেই জেসন রয়কে তারা বিশ্বকাপ দলে রাখেনি। কেউ (সর্বশেষ) ২৪ ওয়ানডে মিস করেছে, কেউ ২৮ ওয়ানডে মিস করেছে, কেউ ২৩ ওয়ানডে মিস করেছে। নতুন নতুন ক্রিকেটারদের সুযোগ দিয়েছে, তাদের আবার বিশ্বকাপে নেয়নি। তরুণ ক্রিকেটার হ্যারি ব্রুক দলে সুযোগ পাচ্ছে না, অবসর নেওয়া ক্রিকেটার বেন স্টোকসকে জোর করে নিয়ে এসেছে। বেন স্টোকস সর্বকালের অন্যতম সেরা। কিন্তু তার যদি ওয়ানডেতে মনই না থাকে, তাহলে জোর করে কেন নিয়ে আসা হলো?’