অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে গতকাল ৩৬৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম ১০ ওভারে পাকিস্তানের রান ছিল ৫৯ রান। এই ৫৯ রানের মধ্যে ছিল না কোনো ছক্কা। পাকিস্তান এদিন সব মিলিয়ে ৬টি ছক্কা মেরেছে, যেখানে তারা প্রথম ছক্কাটি মেরেছে ম্যাচের ১১.৫ ওভারের মাথায়।
পাকিস্তানের জন্য এটি অবশ্য নতুন কিছু না। পাকিস্তান এ বছর ২০ ওয়ানডে খেলে এখন পর্যন্ত প্রথম ১০ ওভারে কোনো ছক্কাই মারতে পারেনি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সে ধারাবাহিকতারই দেখা মিলেছে। এ নিয়ে ম্যাচ শেষে সাবেক ক্রিকেটারদের সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে পাকিস্তানকে।
চার-ছক্কার এমন রমরমা সময়ে পাকিস্তানের ছক্কা মারতে না পারার চিত্র বেশ অবাক করার মতোই। অথচ একসময় প্রথম ১০ ওভারে ‘ঝড়’ তোলার জন্য বিখ্যাত ছিল পাকিস্তান। কয় দিন আগে ভারত ম্যাচের পর পাকিস্তানের পুরোনো দিনের ক্রিকেটের কথা মনে করিয়ে দিয়ে ভারতের সাবেক ওপেনার গৌতম গম্ভীর বলেছিলেন, ‘বাবর আজম নিজের জন্য অনেক রান করেছে, কিন্তু পাকিস্তানের ইতিহাস বলছে, তারা শুরুতে আগ্রাসী ব্যাটিং করে। সেটা শহীদ আফ্রিদি, ইমরান নাজির কিংবা তৌফিক ওমর, যে-ই হোক। তারা মাঝের ওভারগুলোতে ইনিংস দৃঢ় করে। আর এখানে শুরুর তিন ব্যাটসম্যানের কেউই প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করে না।’
এ তো গেল ছক্কাহীন পাকিস্তানের কথা, বাংলাদেশের কী অবস্থা? ক্রিকইনফোর পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৩ সালে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ২৪ ম্যাচ খেলে প্রথম ১০ ওভারে ছক্কা মেরেছে ১০টি। সর্বশেষ ভারতের বিপক্ষে ম্যাচেই অবশ্য বাংলাদেশ প্রথম ১০ ওভারে ছক্কা মেরেছিল ৩টি, যেখানে ৩টি ছক্কাই এসেছিল বাঁহাতি ওপেনার তানজিদ হাসান তামিমের ব্যাট থেকে।
তবে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের চেয়ে পিলে চমকানোর মতো পরিসংখ্যান পাওয়া যাবে প্রথম ১০ ওভারে রোহিত শর্মার মারা ছক্কাসংখ্যায় তাকালে। ২০২৩ সালে শুরুর ১০ ওভারে রোহিত একাই ছক্কা মেরেছেন ৩২টি, যা কিনা অস্ট্রেলিয়াকে দলকে বাদ দিলে ব্যক্তি তো বটেই, অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি।
অস্ট্রেলিয়া এ বছর ছক্কা মেরেছে সব মিলিয়ে ৩৪টি। তবে পাকিস্তান ম্যাচের আগপর্যন্ত রোহিত অস্ট্রেলিয়ারও ওপরে ছিলেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ১০ ওভারে ৪টি ছক্কা মেরে রোহিতকে টপকেছে প্যাট কামিন্সের দল। তবে দল হিসেবে তবু অন্যদের চেয়ে ছক্কা মারায় বেশ এগিয়েই আছে ভারত। এ বছর ২৫ ম্যাচে ভারত ছক্কা মেরেছে সব মিলিয়ে ৪৩টি। অস্ট্রেলিয়া অবশ্য ভারতের চেয়ে ১০ ম্যাচ কম খেলেছে।
ভারত, অস্ট্রেলিয়ার পর এই তালিকায় বাকি ১০ দলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছক্কা সংযুক্ত আরব আমিরাতের। যারা এ বছর সব মিলিয়ে ২৭টি ছক্কা মেরেছে। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকা ১৯, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৮, নেপাল ১৮, শ্রীলঙ্কা ১৪, ইংল্যান্ড ১৩, পাপুয়া নিউগিনি ১২ এবং নেদারল্যান্ডস ১১টি।
আবার ব্যক্তিগতভাবে রোহিতের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ছক্কা মোহাম্মদ ওয়াসিমের, যিনি সব মিলিয়ে ২৩টি ছক্কা মেরেছেন। এরপর ডেভিড ওয়ার্নার ১৩, মিচেল মার্শ ১২ এবং কুইন্টন ডি কক ১১ ছক্কা নিয়ে আছেন সেরা পাঁচে।