সেমিফাইনালে যাওয়ার হিসেবটা মাথায় ছিল বাংলাদেশ দলের অধিনায়কসহ সব খেলোয়াড়ের। এরপরও ম্যাচটি তারা খেলতে নেমেছিল শুধুই একটি জয়ের প্রাথমিক পরিকল্পনা নিয়ে। আফগানিস্তানের ইনিংস শেষে সবার মনে হয়েছিল ১২.১ ওভারের মধ্যে লক্ষ্যটা পেরোনো সম্ভব। তখন সেমিফাইনালে ওঠার পরিকল্পনা করেই ব্যাটিংয়ে নামেন লিটন দাস-তানজিদ হাসানরা। কিন্তু পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ৩ উইকেট হারানোর পর আবার সেই পরিকল্পনা থেকে সরে আসে বাংলাদেশ দল। তখন শুধুই ম্যাচটি জয়ের জন্য খেলেছে তারা।
সেন্ট ভিনসেন্টে আজ সুপার এইটের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে ৮ রানে হারার পর সংবাদ সম্মেলনে এসে এমনটা বলেছেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন।
সেন্ট লুসিয়ায় গতকাল ভারতের কাছে অস্ট্রেলিয়া হেরে যাওয়ার পরই সেমিফাইনালে ওঠার সমীকরণটা জেনে গিয়েছিল বাংলাদেশ দল। সেটা ছিল অনেকটা এ রকম, আফগানিস্তান আগে ব্যাট করে ১৪০ রান করলে সেমিফাইনালে উঠতে বাংলাদেশকে জিততে হবে ১২ ওভারের মধ্যে। কিন্তু টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে আফগানরা ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১১৫ রান করায় একটু বদলে যায় সমীকরণ। সেমিফাইনালে যেতে এই রান বাংলাদেশকে টপকাতে হতো ১২.১ ওভারে।
বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত পারেনি সেই সমীকরণ মেলাতে। আরও একবার ব্যাটিং ব্যর্থতার খেসারত দিয়ে ম্যাচটিও হেরেছে নাজমুলের দল। সংবাদ সম্মেলনে এসে নাজমুলও হারের দায় দিলেন ব্যাটসম্যানদেরই। ম্যাচ শেষে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের বোলিং খুব ভালো হয়েছে। এমন বোলিংয়ের পর আমাদের জেতা উচিত ছিল। কিন্তু ব্যাটিংয়ে অনেক বাজে সিদ্ধান্তের কারণে হেরে গেছি আমরা।’
এরপর সেমিফাইনালের সমীকরণ মেলানোর বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে নাজমুল বলেছেন, ‘পরিকল্পনাটা এমন ছিল যে আমরা প্রথম ৬ ওভার চেষ্টা করব। পরিকল্পনা ছিল, যদি আমরা ভালো শুরু করি, দ্রুত উইকেট যদি না পড়ে, তাহলে আমরা সুযোগটা নেব। কিন্তু যখন আমাদের দ্রুত ৩ উইকেট পড়ে গেল, তখন আমাদের পরিকল্পনা ভিন্ন ছিল—যেন আমরা ম্যাচটা জিততে পারি। তারপরও আমি বলব, মিডল অর্ডার ভালো সিদ্ধান্ত নেয়নি। যার কারণে ম্যাচটা আমরা হেরে গেছি।’
আফগানিস্তান ম্যাচ তথা পুরো বিশ্বকাপেই বাংলাদেশের বোলিং নিয়ে সন্তুষ্ট নাজমুল, ‘ আমি মনে করি পুরো বোলিং বিভাগই টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত করেছে। আমি রিশাদের কথা বিশেষ ভাবে বলব। পুরো টুর্নামেন্টেই সে খুব ভালো বোলিং করেছে। তানজিম সাকিবও ভালো করেছে। আমাদের ফিল্ডিংও ভালো হয়েছে। তাই আমি বলব এখান থেকে ইতিবাচক অনেক কিছু নিয়েই আমরা সামনে এগিয়ে যেতে পারি।’
আফগানিস্তানকে ১১৫ রানে আটকে রাখতে পারার জন্য বোলারদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন নাজমুল বলেছেন, ‘বোলিংয়ে আমাদের পরিকল্পনা ছিল শুরুর দিকে উইকেট নেওয়া। কিন্তু গুরবাজ ও ইব্রাহিম খুব ভালো ব্যাটিং করেছে। মাঝের ওভারে আমরা খেলা নিয়ন্ত্রণ করেছি। বোলাররা দারুণ করেছে। আমি ব্যাটিং গ্রুপের কথা বলব যে বিশেষ করে মিডল অর্ডারে খুব বাজে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এটারই মূল্য দিতে হয়েছে আমাদের।’
তাওহিদ হৃদয়কে শুরুর দিকে ব্যাটিংয়ে না পাঠিয়ে ৬ নম্বরে খেলানোর ব্যাখ্যাও দিয়েছেন নাজমুল, ‘ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে আমি বলব, আজকে আমরা যে পরিবর্তনটা করার চেষ্টা করেছি, সেটা বাঁহাতি-ডানহাতি সমন্বয়ের কারণে। লিটন এক দিকে ব্যাটিং করছিল। ওদের বোলিংয়ে অনেক বৈচিত্র্য ছিল। এ কারণে বাঁহাতি-ডানহাতি সমন্বয়ের প্রয়োজন ছিল। এটা সবাই জানত। সবাই এ ব্যাপারে পরিষ্কার ছিল।’