নিউজিল্যান্ড সিরিজটি বাবর আজম-মোহাম্মদ রিজওয়ানের জন্য ছিল পরীক্ষার। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বাবর আজম-মোহাম্মদ রিজওয়ানের জন্য কি না, এই সিরিজের আগে সেই প্রশ্ন ছিল।
টি-টোয়েন্টি দলে সাবেক অধিনায়ক বাবরের জায়গা দেখেন না, এমন মন্তব্যও করেছিলেন পেসার মোহাম্মদ আমির ও স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার ইমাদ ওয়াসিম। নানা সমালোচনার পর এই সিরিজেই পরীক্ষিত ওপেনিং জুটি ভেঙে বাবরকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ৩ নম্বরে। তবে পরীক্ষায় ভালোভাবেই উতরে গেছেন বাবর-রিজওয়ান। এই সিরিজে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তাঁরাই। যদিও দলকে সিরিজ জেতাতে পারেননি, পাকিস্তান হেরেছে ৪-১ ব্যবধানে।
৫ ম্যাচের সিরিজের সর্বোচ্চ রান এসেছে নিউজিল্যান্ডের ফিন অ্যালেনের ব্যাট থেকে। ৫ ইনিংসে ৫৫ গড়ে তিনি রান করেছেন ২৭৫। এই ওপেনার ব্যাট করেছেন অবিশ্বাস্য ১৯৫.০৩ স্ট্রাইক রেটে। পাকিস্তানকে পুরো সিরিজে ভুগিয়েছেন এই ওপেনার।
পাকিস্তানের সর্বোচ্চ রান এসেছে বাবরের ব্যাট থেকে, যেটা সিরিজের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ৫ ইনিংসে তাঁর রান ২১৩। গড় ৪২.০৭, টি-টোয়েন্টি যেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, সেই স্ট্রাইক রেট—১৪২। সংখ্যাটা আরও ভালো হতে পারত, যদি সিরিজের শেষ ম্যাচে ২৪ বলে ১৩ রানে আউট না হতেন। সিরিজের প্রথম ৩ ম্যাচেই অর্ধশতক করেছিলেন বাবর।
রিজওয়ান ৫ ম্যাচের সিরিজে রান করেছেন ১৮৪, ৪৬ গড় ও ১৩১.৪২ স্ট্রাইক রেটে। সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১৪ বলে ২৫ রানের ইনিংস খেলা রিজওয়ান চতুর্থ ম্যাচে করেছিলেন অপরাজিত ৯০ রান। সিরিজের শেষ ম্যাচে করেছেন ৩৮ রান।
পাকিস্তানের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি ৫১ বার ইনিংস উদ্বোধন করেছে বাবর-রিজওয়ান জুটি। ৫১ ইনিংসে দুজনের জুটি থেকে এসেছে ২৪০০ রান, যা আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ওপেনিংয়ে সর্বোচ্চ। গড়েছেন ৮টি শতরানের জুটি। টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শতরানের জুটি (৪টি) এসেছে রোহিত শর্মা ও শিখর ধাওয়ানের ওপেনিং জুটি থেকে।
বাবর-রিজওয়ানের ওপেনিং জুটি ভাঙায় রিজওয়ান চতুর্থ ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তিনি যা বলেছেন, তার মর্মার্থ করলে দাঁড়ায়—ঠিকভাবে চলা ওপেনিং জুটি ভাঙা পাকিস্তান দলের ক্ষতি করেছে। রিজওয়ানের এমন কথা আবার পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার মোহাম্মদ আমির খুব একটা পছন্দ করেননি। তিনি এক্সে রিজওয়ানের উদ্দেশে লিখেছিলেন, ‘নিজে ৪ বছর মজা করেছেন ভাইজান, বাচ্চারা ৪ ম্যাচে খারাপ করলে ক্ষতি হয় না। নতুন কিছু করতে চাইলে সময় দিতে হবে। সহজ হিসাব।’
সব মিলিয়ে বাবর-রিজওয়ানের সমালোচনা পাকিস্তান ক্রিকেটে কান পাতলেই শোনা যায়। এমন পরিস্থিততে টি-টোয়েন্টি দুজনের পারফর্ম করে যাওয়াই হয়তো পাল্টা জবাব। সিরিজের শেষ ম্যাচ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অধিনায়ক শাহিন শাহ আফ্রিদি অবশ্য বলেছেন, জুনে হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে মাথায় রেখেই এই সিরিজে তরুণদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আসলেই তা কি না, সেটা সময়ই বলবে।