ইনিংসের মাত্র চতুর্থ ওভার। গাস অ্যাটকিনসনের লেগ স্টাম্পের বাইরের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাইম আইয়ুব। টেস্ট ক্রিকেটে পাকিস্তান হয়তো আরেকটি বাজে দিন দেখতে যাচ্ছে, তখন অনেকেই এমনটা ভাবছিলেন। কিন্তু উইকেটে এসে মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলে দুর্দান্ত এক স্ট্রেট ড্রাইভে ২ রান নিয়ে পাকিস্তানের অধিনায়ক শান মাসুদ দেন অন্য ইঙ্গিত।
শান মাসুদের দেওয়া পূর্বাভাস মেনেই এগোচ্ছে মুলতানে পাকিস্তান–ইংল্যান্ড প্রথম টেস্ট। ঘরের মাঠে বাংলাদেশের কাছে দুই টেস্টের সিরিজে ধবলধোলাই হওয়ার পর সমালোচনায় জেরবার পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছিলেন। দলকে ভালো কিছু এনে দিতে চেয়েছিলেন। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে সেটার পথই হয়তো দেখিয়ে দিলেন শান মাসুদ।
শান মাসুদকে নিয়েও কি সমালোচনা কম হয়েছে! বাংলাদেশ সিরিজের পর যে সমালোচনার তীব্রতা শুধু বেড়েছেই। না আছে নেতৃত্বগুণ, না আছে ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স—এমনটাই ছিল বলছিলেন সমালোচকেরা।
এমনটা বলার কারণও ছিল যথেষ্টই। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মুলতান টেস্ট খেলতে নামার আগে মাসুদ সর্বশেষ সেঞ্চুরি পেয়েছেন ২০২০ সালের ৫ আগস্ট। ওল্ড ট্রাফোর্ডে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেই সেঞ্চুরির পর আজকের আগপর্যন্ত খেলেছেন ২৬ ইনিংস। সর্বোচ্চ রান ছিল ৬০।
অবশেষে সেই ইংল্যান্ডকে দিয়েই সেঞ্চুরির খরা কাটালেন মাসুদ। মুলতানে আজ সেঞ্চুরিটি আরও দুটি দিক থেকে বিশেষ। এই সেঞ্চুরিতে তিনি দুটি দিক থেকে পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক মিসবাহ–উল–হকের পরে নাম লিখিয়েছেন।
মাসুদ সেঞ্চুরিটি করেছেন ১০২ বলে। ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মিসবাহর ৫৬ বলে সেঞ্চুরির পর এটাই পাকিস্তানের দ্রুততম টেস্ট সেঞ্চুরি। পাকিস্তানি অধিনায়কদের মধ্যেও মিসবাহর সেই ৫৬ বলের সেঞ্চুরির পর এটা দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরি। টেস্ট ক্রিকেটে এটি পঞ্চম সেঞ্চুরি মাসুদের।
পাকিস্তানের এর চেয়ে কম বলেও টেস্টে সেঞ্চুরি করেছেন অনেকে। শহীদ আফ্রিদিরই দুটি সেঞ্চুরি আছে ৭৮ বলে। মাজিদ খান ৭৪ বলে সেঞ্চুরি করেছেন। এ ছাড়া সরফরাজ আহমেদ ৮০, কামরান আকমল ৮১, ওয়াসিম আকরাম ৮৬, আবদুল রাজ্জাক ৯২ ও শহীদ আফ্রিদি ৯৬ বলে টেস্টে সেঞ্চুরি করেছেন। কিন্তু এর কোনোটিই অধিনায়ক হিসেবে বা ২০১৪ সালের মিসবাহর সেই সেঞ্চুরির পরে নয়।