কত কারণেই না খেলা বন্ধ হয়!
অতিরিক্ত গরম, তীব্র ঠান্ডা, মৃত্যু, যুদ্ধবিমানের হানা আর বাঘের আগমন—কত অদ্ভুত কারণেই না খেলা বন্ধ হয়েছে এ যাবৎ। এই তালিকায় নতুন সংযোজন গুইসাপ। আজ শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা কিছু সময়ের জন্য বন্ধ ছিল গুইসাপ মাঠে প্রবেশের কারণে।
শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংসের ৪৮তম ওভারে নিজাত মাসুদের বলে ব্যাট করছিলেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস। এমন সময়ে কেউ একজন দেখতে পান, মাঠে গুইসাপ এসে হাজির। গুইসাপ খুব ভয়ংকর কোনো প্রাণী না হলেও আর যা-ই হোক, মশা-মাছির মতো এড়িয়ে তো যাওয়া যায় না। তাই বন্ধ হয়ে যায় খেলা। মাঠকর্মী ও অফিশিয়ালসরা এসে গুইসাপটিকে তাড়িয়ে দেওয়ার পর আবার খেলা শুরু হয়।
ক্রিকেট মাঠে খেলা বন্ধের এমন আরও কিছু অদ্ভুত কারণ মনে আছে তো? না থাকলে জেনে নিন...
বাঘ: আসল নয়! ইংল্যান্ডের রোজ বল নার্সারি গ্রাউন্ডে ইসিবি সাউদার্ন ইলেকট্রিক প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে হ্যাম্পশায়ার ও সাউথ উইলটিসের ম্যাচ চলছিল। এমন সময় একজন দর্শক জানায় পাশের গলফ কোর্সে একটি বাঘ দেখা গেছে। সেই দর্শক জুম লেন্স ব্যবহার করে বাঘ দেখেছিলেন। এরপর সব খেলোয়াড় নিরাপত্তার কারণে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। পুলিশ এলে পরে দেখা যায় এটা আসল বাঘ নয়, খেলনা বাঘ। ম্যাচ শুরু হয় ২০ মিনিট পর।
যুদ্ধবিমান: এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের ঘটনা। লর্ডসে আর্মি ও আরএএফের ম্যাচ চলছিল। আর্মি প্রথমে ব্যাট করে ১ উইকেটে ৫৭ রান করার পর জার্মানির একটি যুদ্ধবিমান মাঠের কাছাকাছি চলে এসেছিল। শেষ পর্যন্ত অবশ্য যুদ্ধবিমানটা লর্ডস পর্যন্ত আসেনি। কিন্তু যুদ্ধবিমান আসার খবরেই খেলা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
মৃত্যু: ১৯৫২-৫৩ সালের ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজের ঘটনা। সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিন শেষে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ৫ উইকেটে ২২৪ রান। দিনের খেলা শেষে ইংল্যান্ড দল ড্রেসিংরুমে যেতে না যেতেই জানতে পারে রাজা ষষ্ঠ জর্জ মারা গেছেন। এরপর টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা বন্ধ রাখা হয়। এই টেস্টেই ভারত তাদের প্রথম টেস্ট জয় পায়। এমন ঘটনা আছে আরও। ১৯৮৪ সালের শিয়ালকোটে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ চলাকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর খবর আসে। শুধু ম্যাচ নয়, পুরো পাকিস্তান সফরই বাতিল করে দেশে ফেরত যায় ভারত দল। আর ২০১৪ সালে নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটার ফিলিপ হিউজের মৃত্যুর খবরে বন্ধ করে দেওয়া হয় শারজায় পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা।
রজার টেলেমাকাসের বলে ছয় মেরেছিলেন ড্যারেল কালিনান। বল গিয়ে পড়ে একটা ক্যালামারি স্কুইড ভাজার প্যানের মধ্যে। বলটা ঠান্ডা করতেই ১০ মিনিট লেগে যায়।
ড্রেনের পাইপ: ১৯৮৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ-ইংল্যান্ড সিরিজের হেডিংলি টেস্ট। গ্রাহাম গুচের বিপক্ষে ইনিংসের প্রথম ৪টি বল করলেন কার্টলি অ্যামব্রোস, তবে পঞ্চম বল করতে গিয়েই থেমে গেলেন। কারণ, ড্রেন বিস্ফোরণ। পাইপ ফেটে মাঠে পানি উপচে পড়ছিল মাঠে।
ক্যালামারি: এই মজার ঘটনাটি ঘটে ১৯৯৪-১৯৯৫ সালের দক্ষিণ আফ্রিকার ক্যাসল কাপে। রজার টেলেমাকাসের বলে ছয় মেরেছিলেন ড্যারেল কালিনান। বল গিয়ে পড়ে একটা ক্যালামারি স্কুইড ভাজার প্যানের মধ্যে। বলটা ঠান্ডা করতেই ১০ মিনিট লেগে যায়। তখন উইজডেন লিখেছিল: ‘ফ্রাইড ক্যালামারি স্টপড প্লে’।