বয়স হয়ে গেছে ৩৬ বছর। ২০০৭ সাল থেকে খেলছেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন ২০১১ সাল থেকে। কম তো নয়! প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট থেকে ধরলে ১৬ বছর ধরে টানা খেলে যাচ্ছেন ক্রিকেট। মধ্য ত্রিশ পার হয়ে আসা অ্যারন ফিঞ্চ এত ধকল আর নিতে পারছেন না।
এ কারণেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিয়েছেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়াকে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে নেতৃত্ব দেওয়া এবং এই সংস্করণে দেশটির সফলতম অধিনায়ক।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বললেও বিশ্বজোড়া ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোতে খেলে যাবেন বলে জানিয়েছেন ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসেই অবসর নেওয়া ফিঞ্চ। অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি লিগ বিগ ব্যাশের দল মেলবোর্ন রেনেগেডসের সঙ্গে আরও এক বছরের জন্য চুক্তির বিষয়টিও নিশ্চিত করেছেন অস্ট্রেলিয়াকে ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতানো অধিনায়ক।
১২ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে সাদা বলের ক্রিকেটে ফিঞ্চ ২৪৯টি ম্যাচ খেলেছেন (ওয়ানডে ১৪৬টি, টি-টোয়েন্টি ১০৩টি)। টি-টোয়েন্টিতে ১০৩ ম্যাচের ক্যারিয়ারের ৭৬টিতেই ছিলেন অধিনায়কের ভূমিকায়। এই সংস্করণে অধিনায়ক হিসেবে ৪০টি ম্যাচ জিতেছেন ফিঞ্চ। সবচেয়ে বড় সাফল্য, অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জেতানো। ওয়ানডেতে অবশ্য দলকে মাত্র ৫৫ ম্যাচেই নেতৃত্ব দিয়েছেন ফিঞ্চ। আর টেস্ট খেলেছেনই মাত্র ৫টি।
ফিঞ্চের কীর্তির বেশির ভাগই অবশ্য টি-টোয়েন্টিতে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংসের রেকর্ডটি তাঁর। ২০১৮ সালে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৭৬ বলে করেছিলেন ১৭২ রান। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের মধ্যে টি-টোয়েন্টি সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা আর রান করা ব্যাটসম্যানও ফিঞ্চই। ১০৩ ম্যাচে তিনি করেছেন ৩১২০ রান। তাঁর পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করেছেন ডেভিড ওয়ার্নার (২৮৯৪ রান)।
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার ওয়েবসাইটে অবসরের ঘোষণা ফিঞ্চ দিয়েছেন এভাবে, ‘আমি বিগ ব্যাশটা খেলতে চেয়েছি এবং এরপর ভেবে দেখতে চেয়েছি। বিগ ব্যাশের একটি ম্যাচের পর আমার শরীরে ব্যথা হচ্ছিল। এটা ঠিক হতে দুই দিন সময় লেগেছে। (মেলবোর্ন রেনেগেডসের কোচ) ম্যাকডোনাল্ড আমাকে বলেছেন, সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সময় নাও, বিষয়টি নিয়ে ভাবো। এটা আবেগী কোনো বিষয় নয়।’
ফিঞ্চ এরপর যোগ করেন, ‘আমি বিষয়টি নিয়ে অনেক ভেবেছি। সবাই এখন ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবছে আর প্রস্তুতি নিচ্ছে। নিজেকে আমি সেখানে দেখতে পাচ্ছি না।’
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে এক যুগের লম্বা ক্যারিয়ারের জন্য নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেন ফিঞ্চ, ‘১২ বছর খেলতে পারার জন্য আমি নিজেকে চরম ভাগ্যবান মনে করি। আমি মনে করি, দল এখন খুব ভালো অবস্থায় আছে। এখন আমি চলে যেতে পারি।’