ইংল্যান্ডের হয়েছেটা কী!
এবারের বিশ্বকাপে বাজে পারফর্ম করা দলগুলোর একটি ইংল্যান্ড। অথচ এই ইংল্যান্ডই গত কয়েক বছরে ৫০ ওভারের ক্রিকেটের সংজ্ঞাটাই পাল্টে দিয়েছিল। এই ইংল্যান্ডই জিতেছে সীমিত ওভারে দুই সংস্করণের বিশ্বকাপ।
২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়া–নিউজিল্যান্ড ওয়ানডে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড দল বাদ পড়েছিল গ্রুপ পর্ব থেকেই। বাংলাদেশের কাছে হেরেছিল তাঁরা। সমালোচিত হয়েছিল মান্ধাতার আমলের ক্রিকেট খেলার জন্য। সেই বিশ্বকাপের পর থেকেই ভোজবাজির মতো পাল্টে যায় দলটি। খেলার ধরন বদলে ফেলে ইংলিশরা হয়ে ওঠে সীমিত ওভারের ক্রিকেটের ভয়ংকর দল। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে মারকুটে ব্যাটিং দিয়ে ৩৫০–৪০০ রানকে সাধারণ ব্যাপারে পরিণত করেছিল তারা। সেই পথ বেয়েই ২০১৯ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছিল ইংল্যান্ড। জস বাটলার, বেন স্টোকস, লিয়াম লিভিংস্টোন, জনি বেয়ারস্টো, মঈন আলী, জো রুটরা মারকুটে ব্যাটিংয়ে টেস্ট ক্রিকেটে নিয়ে গেলেও এবারের বিশ্বকাপ দেখে মনে হচ্ছে দলটা নিজেদের সেরা সময়টা পেছনে ফেলে এসেছে।
সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক মাইকেল আথারটনও তেমনটিই মনে করেন। তাঁর মতে, ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল ৫০ ওভারের ক্রিকেটে একধরনের চক্রপূরণের শেষ প্রান্তেই দাঁড়িয়ে আছে। গতকাল বেঙ্গালুরুতে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ১৫৬ রানে গুটিয়ে বড় হার দেখছে বাটলারের দল। আগের ম্যাচেও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মুম্বাইয়ে উড়ে গেছে বিশাল ব্যবধানে। বড় ব্যবধানে হেরেছে আফগানিস্তানের সঙ্গেও।
স্কাই স্পোর্টসের বিশ্লেষণে আথারটন বলেছেন, ‘যখন কোনো দল ভালো করতে পারে না এবং আত্মবিশ্বাসের তলানিতে থাকে, তখন অনুশীলনে যা যা করা হয়, সেটির অনেক কিছুই মাঠে করে দেখানো সম্ভব নয়। যে ইংল্যান্ড অনেকটা সময় ওয়ানডে ক্রিকেটে আধিপত্য করেছে, সেই দলটাই এখন আত্মবিশ্বাসের তলানিতে। কোনো দলের পক্ষে চিরদিন নিজেদের পারফরম্যান্সের চূড়ায় বসে থাকা সম্ভব নয়। এই চক্রের শেষ আছেই।’
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বেন স্টোকস ৪৩ করেছেন, বেয়ারস্টো করেছেন ৩০ আর ডেভিড ম্যালান ২৮—এর বাইরে বাকিদের পারফরম্যান্স যাচ্ছেতাই। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানো দলটাকে মনে হচ্ছিল ক্লান্ত–বিধ্বস্ত। মনে হচ্ছিল নিজেদের খেলাটাও ভুলে গেছেন ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা।
আথারটন এই পারফরম্যান্সের একটা কারণ ধরতে পেরেছেন, ‘আমার মনে হয় ৫০ ওভারের ক্রিকেট কম খেলার পাশাপাশি নিজেদের সেরা ৫০ ওভার ক্রিকেটের দল ভাবার অনেক দুর্বলতাকেই ঢেকে দিয়েছে। বিশ্বকাপে পাঁচটি ম্যাচে এই সমস্যা দেখা গেছে। আরও নির্দিষ্ট করে বললে ইংল্যান্ড আসলে ৫০ ওভারের ক্রিকেটের চক্রপূরণের একেবারে শেষ ধাপে দাঁড়িয়ে আছে। মুম্বাই কিংবা বেঙ্গালুরু—যে পারফম্যান্স আমরা দেখলাম, সেটি পুরো বিষটির সম্মিলিত প্রতিফলন।’