প্রথম ৮.৪ ওভার ২ উইকেটে ১০৪ রান, সেখান থেকে অস্ট্রেলিয়া অলআউট ১৭৪ রানে। অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে সে ম্যাচই মিচেল মার্শের দল জিতেছে ৭২ রানে। অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ১৭৫ রানের লক্ষ্যে পেসারদের তোপের পর অ্যাডাম জাম্পার ঘূর্ণিতে পড়ে নিউজিল্যান্ড থেমেছে ১০২ রানেই। রানের হিসাবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার এটি সবচেয়ে বড় জয়। এ জয়ে ১ ম্যাচ বাকি থাকতে সিরিজও জিতে গেছে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ম্যাচে তারা পেয়েছিল রোমাঞ্চকর এক জয়।
ইডেন পার্কে জেতা ম্যাচে প্রথম ইনিংসে গড় স্কোর ১৮৮ রান। টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা ছিল দুর্দান্ত। নবম ওভারে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের উইকেট দিয়ে ধস নামে তাদের ইনিংসে, পরের ১২ ওভারে ওঠে মাত্র ৭১ রান। ১ বল বাকি থাকতেই অলআউটও হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।
ডেভিড ওয়ার্নারের জায়গায় আজ ওপেন করতে আসেন স্টিভেন স্মিথ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে নিজের জায়গার দাবিটা জোরালো করার সুযোগ ছিল স্মিথের সামনে। তবে সে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান, ৭ বলে ১১ রান করে এলবিডব্লু হন লকি ফার্গুসনের বলে।
ততক্ষণে অবশ্য ট্রাভিস হেড ঝোড়ো শুরু এনে দিয়েছেন, প্রথম ২ ওভারেই অস্ট্রেলিয়া তোলে ৩২ রান। মিচেল মার্শের সঙ্গে হেডের ২৭ বলে ৫৩ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে অস্ট্রেলিয়া পায় শক্ত ভিত। তবে নিউজিল্যান্ডের সম্মিলিত আক্রমণে অস্ট্রেলিয়ার মিডল অর্ডার দাঁড়াতেই পারেনি। ৩৪ রানের মধ্যে এ সময় ৫টি উইকেট হারায় দলটি। সে ধস সামাল দেন প্যাট কামিন্স, নাথান এলিসের সঙ্গে তাঁর ২৮ বলে ৩৩ রানের জুটিতে অস্ট্রেলিয়া পায় লড়াই করার মতো সংগ্রহ। মাত্র ১২ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন ফার্গুসন।
নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং অবশ্য ছিল অস্ট্রেলিয়ার বিপরীত। পাওয়ারপ্লেতে মাত্র ২৭ রান তুলতেই ৩ উইকেট হারায় স্বাগতিকেরা। ফিন অ্যালেন, উইল ইয়াংয়ের সঙ্গে ফেরেন তিনে আসা মিচেল স্যান্টনার। উইকেটকিপিংয়ের সময় আঙুলে চোট পেয়ে উঠে যাওয়া ডেভন কনওয়ে ব্যাটিং করতে পারবেন কি না, তখনো নিশ্চিত ছিল না নিউজিল্যান্ড।
জশ ক্লার্কসনকে নিয়ে গ্লেন ফিলিপস নিউজিল্যান্ডকে একটু ধাতস্থ করার চেষ্টা করেছিলেন ৩২ বলে ৪৫ রানের জুটিতে। কিন্তু অ্যাডাম জাম্পার ঘূর্ণিতে আবার বেসামাল হয়ে পড়ে তারা। অস্ট্রেলিয়ান লেগ স্পিনার পরপর ২ ওভারে নেন ৩টি উইকেট। ইনিংসের ১২তম ওভারের শেষ ২ বলে ক্লার্কসন ও অ্যাডাম মিলনের উইকেট নেন জাম্পার, নিজের পরের ওভারে এসে থামান ফিলিপসকেও।
নিউজিল্যান্ডের আশা কার্যত শেষ হয়ে যায় সেখানেই। ট্রেন্ট বোল্ট চড়াও হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন জাম্পার ওপর। তবে ২ বলে ১০ রান তুলে জাম্পার চতুর্থ শিকারে পরিণত হন ২০২২ সালের নভেম্বরের পর নিউজিল্যান্ডের হয়ে টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা বোল্ট। পরে নাথান এলিস এসে আউট করেন ফার্গুসনকে। টেস্ট সিরিজের আগে কনওয়েকে ব্যাটিংয়ের নামানোর ঝুঁকি নেয়নি নিউজিল্যান্ড।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
অস্ট্রেলিয়া: ১৯.৫ ওভারে ১৭৪ (হেড ৪৫, স্মিথ ১১, মার্শ ২৬, ম্যাক্সওয়েল ৬, ইংলিস ৫, ডেভিড ১৭, ওয়েড ১, কামিন্স ২৮, এলিস ১১*, জাম্পা ১, হ্যাজলউড ০; বোল্ট ৪-০-৪৯-০, মিলনে ৪-০-৪০-২, ফার্গুসন ৩.৫-০-১২-৪, সিয়ার্স ৪-০-২৯-২, স্যান্টনার ৪-০-৩৫-২)
নিউজিল্যান্ড: ১৭ ওভারে ১০২ (অ্যালেন ৬, ইয়াং ৫, স্যান্টনার ৭, ফিলিপস ৪২, চ্যাপম্যান ২, ক্লার্কসন ১০, মিলনে ০, বোল্ট ১৬, ফার্গুসন ৪, সিয়ার্স ২*, কনওয়ে আহত অনুপস্থিত; হ্যাজলউড ৪-১-১২-১, কামিন্স ৩-০-১৯-১, এলিস ৩-০-১৬-২, মার্শ ৩-০-১৮-১, জাম্পা ৪-০-৩৪-৪)
ফল: অস্ট্রেলিয়া ৭২ রানে জয়ী