গত বিশ্বকাপের পর থেকে নানা কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে সাকিব আল হাসান। চট্টগ্রাম টেস্টের দলে ফিরে কালই প্রথম যোগ দিয়েছেন অনুশীলনে। স্বাভাবিকভাবেই এই দুই দিন জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ দলের অনুশীলনে মধ্যমণি হয়ে থাকলেন।
টেস্ট ক্রিকেটে সাকিবের জন্য বাংলাদেশ দলের অপেক্ষাটা প্রায় এক বছরের। গত বছরের আগস্টে তিনি সর্বশেষ লাল বলের ক্রিকেট খেলেছেন। তখন সাকিবই ছিলেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক।
মাঝের সময়টায় অনেক কিছুই বদলে গেছে। বাংলাদেশ দলের নেতৃত্বে এখন নাজমুল হোসেন, যাঁর অধীনে সাকিব প্রথমবার খেলবেন আগামীকাল শুরু হতে যাওয়া শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে। গতকাল থেকে মাঠে নতুন অধিনায়কের সঙ্গেই বেশি সময় কাটাতে দেখা যাচ্ছে সাকিবকে। গতকালের পর আজও অনেকটা সময় নিয়ে একসঙ্গে দেখেছেন উইকেট।
পারিবারিক কারণে অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে যেতে হওয়ায় চট্টগ্রাম টেস্টে নেই প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। তাঁর অবর্তমানে প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করছেন সহকারী কোচ নিক পোথাস। তাঁর সঙ্গেও অনেকটা সময় কথা বলতে দেখা গেছে সাকিবকে।
গতকাল দেড় ঘণ্টা ব্যাটিং অনুশীলন করেছেন সাকিব। আজ অবশ্য ব্যাটিং-বোলিং কিছুই অনুশীলন করেননি। অন্য ব্যাটসম্যানরা সবাই ব্যাটিং অনুশীলন করেছেন। বিশ্রামে ছিলেন পেসাররা। ব্যাটিং-বোলিং না করলেও ফিটনেস ও ফিল্ডিং অনুশীলনের ফাঁকে পুরো দলকে চাঙা করে রাখলেন সাকিব।
লম্বা সময় পর সাকিবের টেস্ট ক্রিকেটে ফেরা স্বাভাবিকভাবেই দলকে উজ্জীবিত করছে। চট্টগ্রাম টেস্ট–পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে আজ কোচ নিক পোথাসও সে রকমই বললেন, ‘সাকিব যে দলেই খেলুক, তাদের ভাগ্যবান বলতে হবে। আমরা তাকে স্বাগত জানাই। ড্রেসিংরুমে তাকে পাওয়া সব সময়ই দারুণ ব্যাপার। তার শক্তিমত্তা খুব দ্রুত সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। যখনই সে দলের সঙ্গে যোগ দেয়, সে দলকে অনেক কিছু দিয়ে থাকে।’
বিশ্বকাপ থেকেই সাকিব ভুগছিলেন চোখের সমস্যায়। বিপিএলের শুরুতে একই সমস্যার সঙ্গে লড়তে হয়েছে তাঁকে। বিশ্রাম নিয়ে মাঠে ফেরা সাকিবকে এখন পুরোপুরি সুস্থ মনে হচ্ছে পোথাসের, ‘তাকে দেখে দারুণ লাগছে। মনে হয়েছে সে ওজন কমিয়েছে। ওর বিপিএলটা ভালো গেছে। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ভালো শুরু করেছে। সে খুশি, আর আমরাও সাকিবকে খুশি দেখতে চাই।’
সাকিবের ফেরায় স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশ দলের সমন্বয় পাল্টে যাবে। সে ক্ষেত্রে দল কয়জন বোলার নিয়ে খেলবে, সে প্রশ্ন এসেছে। পোথাস অবশ্য এ নিয়ে সরাসরি কিছু বললেন না, ‘আমরা আগামীকাল সকালে এই সিদ্ধান্ত নেব। সাকিব এলে দলের মধ্যে একটা প্রশান্তি চলে আসে। শান্তও (নাজমুল হোসেন) একজনকে পাবে, যার কাছ থেকে সে পরামর্শ নিতে পারে। সে খুবই অভিজ্ঞ একজন খেলোয়াড়, বিশ্বমানের খেলোয়াড়।’
লম্বা বিরতির পর সাকিবের টেস্টের ব্যাটিংটা কেমন হতে পারে, সে প্রশ্নের উত্তরে পোথাস বলেছেন, ‘সে যে রকমের পেশাদার ক্রিকেটার, সে জানে, সে কী করেছে এবং কী করেনি। সে কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেবে। সে জন্যই সে বিশ্বমানের।’