সংবাদ সম্মেলনে তানজিদ হাসান
সংবাদ সম্মেলনে  তানজিদ হাসান

এবার বড়দের বিশ্বকাপ জিততে চান তানজিদ

সুযোগটা সবার আগে পেয়েছিলেন শরীফুল ইসলাম। এরপর একে একে সুযোগ পেয়েছেন মাহমুদুল হাসান, শামীম হোসেন, পারভেজ হোসেন ও তাওহিদ হৃদয়। ২০২০ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের সর্বশেষ সদস্য হিসেবে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন তানজিদ হাসান। দেশকে বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সাফল্য এনে দেওয়া এই তরুণেরা এখন বড়দের বিশ্বকাপ জিততে চান।

জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার পর আজ প্রথম সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এ কথা জানান তানজিদ, ‘আমরা যেটা অর্জন করছি, সেটা তো এখন অতীত। সবার মধ্যে এখন একটাই কথা, একটা স্বপ্ন যে বড়দের হয়ে বিশ্বকাপ জেতা। সবারই যখন দেখা হয়, সামনে যেহেতু বিশ্বকাপ, একটা জিনিসই মাথায় কাজ করে, আমরা এশিয়া কাপ যত টুর্নামেন্টই খেলি না কেন, ব্যাক অব দ্য মাইন্ডে কিন্তু ওয়ার্ল্ড কাপ থেকেই যায়। ইনশা আল্লাহ চেষ্টা করব এবার। যদি কপালে থাকে, ইনশা আল্লাহ হয়ে যাবে।’

তানজিদের কাছে প্রথমবারের মতো জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার অভিজ্ঞতা জানতে চাওয়া হয়। উত্তরে বেশ আত্মবিশ্বাসী হয়েই তানজিদ বললেন, ‘প্রথমত, আলহামদুল্লিলাহ যে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছি। তারপরও এশিয়া কাপের মতো একটা মঞ্চে সুযোগ পেয়েছি। সিনিয়রদের সঙ্গে এর আগেও খেলা হয়েছে আমার। বিভিন্ন স্থানীয় টুর্নামেন্টগুলোতে, বিসিবি প্রেসিডেন্ট কাপ, সব জায়গাতেই খেলা হয়েছে। উপভোগ করছি অনেক।’

কোচ হাথুরুসিংহের ‘ক্লাসে’ তানজিদ

আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের জন্য বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকেই তানজিদের সুনাম আছে। সর্বশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ব্রাদার্স ইউনিয়নের হয়ে তানজিদ ১১ ম্যাচ খেলেন। ২টি সেঞ্চুরি, ১টি ফিফটিসহ রান করেছেন ৪৭৪। স্ট্রাইক রেট ৯৩.৩০। কয়েক দিন আগে হয়ে যাওয়া ইমার্জিং এশিয়া কাপেও ছিলেন বাংলাদেশ ‘এ’ দলের সেরা ব্যাটসম্যান। শ্রীলঙ্কায় হয়ে যাওয়া সে টুর্নামেন্টে ৪ ম্যাচে ১৭৯ রান করেছেন তানজিদ, তাতে ফিফটি ৩টি, স্ট্রাইক রেট ১১৬.৯৯।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও তানজিদ সহজাত খেলাটা খেলতে পারবেন কি না, এ আলোচনাটাও আছে। তানজিদ অবশ্য বরাবরই ইতিবাচক, ‘আমি এইটা নিয়ে চিন্তা করতেছি না। কোন বোলার বল করছে, জিনিসটা নিয়ে আমি ভাবি না। আমি চেষ্টা করি বল দেখে খেলার।’

আরেক প্রশ্নের উত্তরে নিজের খেলার ধরন নিয়ে তানজিদ বললেন, ‘দেখুন, আমি এসব চিন্তা করে ব্যাটিংয়ে নামি না। মনের মধ্যে এটাই থাকে যে পজিটিভ ক্রিকেট খেলব। অনেকেই বলে আমি অনেক আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলি। এই রকম না। আমি শুধু স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করি। আমার শক্তির ওপর বিশ্বাস রাখার চেষ্টা করি। আমি বিশ্বাস করি, আমার শক্তিতে এবং পজিটিভ খেলায়।’

বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন দেখেন তানজিদ

প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেও তানজিদকে সেই সহজাত খেলাটা ধরে রাখতে বলছেন, ‘জাতীয় দলে আসার পর কোচ বলছেন, তুমি এত দিন যেভাবে খেলে এসেছ, তোমার সহজাত খেলা যেটা, সেটাই খেলবে। উনি বলছেন যে তোমার যদি নিজের কোনো সমস্যা থাকে, তাহলে আমার কাছে এসে কথা বলবে। উনি সব সময় একটু প্রশ্ন করতে পছন্দ করেন। কারণ, তাহলে নিজের ভেতর থেকে সব কিছু আসে। এদিক থেকে বলব ভালো।’

তানজিদের সংবাদ সম্মেলন যেহেতু, তাঁর ডাক নাম নিয়ে তো প্রশ্ন হবেই। কারণও আছে। তানজিদের ডাক নাম তামিম। বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ওপেনার তামিম ইকবালের মতোই বাঁহাতি ওপেনার তানজিদ। তানজিদ জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেনও তামিম জাতীয় দলে না থাকায়।

তামিমের ব্যাপারে তানজিদকে জিজ্ঞাসা করা হলে বললেন, ‘দেখুন এই কথা আমি অনেক আগে থেকে শুনছি। সত্যি কথা বলতে ছোট বেলায় উনার খেলা দেখে বড় হয়েছি। খেলা দেখার অনুপ্রেরণা পেয়েছি উনার নামের সঙ্গে আমার নামের মিল থাকায়। এ জন্য ছোট থেকে তাঁর খেলা দেখা হয়েছে বেশি। উনি আমাদের জন্য আইডল, সবার জন্য। ওনার খেলার দেখে অনেক কিছু শেখার চেষ্টা করি। কিভাবে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে, কোন অবস্থায় কীভাবে খেলবে। অবশ্যই তিনি একজন অনুপ্রেরণা। যখন ওনার সঙ্গে দেখা হয় কথা হয়, সব বিষয়ে।’