‘লিডিং ফ্রম দ্য ফ্রন্ট’—বহুল প্রচলিত কথাটা লিটন দাস ও তামিম ইকবালের ক্ষেত্রে দারুণভাবে মিলে যায়। বিপিএলের দুই ফাইনালিস্ট কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস ও ফরচুন বরিশাল দলের অধিনায়ক এই দুজন। অধিনায়ক দুজনকে এমনিতেই মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়া যায়। এখানে তা আরও করা যাচ্ছে দুজনই ওপেনার বলে।
ফাইনালে উঠতে পারায় এই দুজনের ব্যাটের কাছেও ঋণ আছে দুই দলের। দুজনই রানের মধ্যে আছেন। তামিম তো টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহকই (৪৫৩)। লিটনও খুব বেশি পিছিয়ে নেই। তামিমের চেয়ে এক ম্যাচ কম খেলে লিটন করেছেন ৩৭৫ রান। সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহকদের তালিকায় আছেন ৪ নম্বরে। তামিমের স্ট্রাইক রেট ১২৫, লিটনের ১৩০। বুঝতেই পারছেন, তামিম ও লিটনের ভূমিকাটা একই রকম। উদ্বোধনে নেমে ইনিংসটা দীর্ঘ করা, অন্তত ১৫ ওভার পর্যন্ত ব্যাটিং করে ফিনিশারদের জন্য মঞ্চ গড়ে দেওয়া। ফাইনালের রাতে সে কাজটা কে কতটা সাফল্যের সঙ্গে করতে পারেন, সেটা শিরোপার নির্ধারকও হয়ে যেতে পারে।
দুজনের মধ্যে লিটনের বিপিএলের শুরুটা একদমই ভালো হয়নি। বিপিএলের প্রথম পাঁচ ম্যাচে একবারও ২০-এর ঘরে যেতে পারেননি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের অধিনায়ক, ৭৫ স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন মাত্র ৩৭ রান! অধিনায়কত্বের চাপ ব্যাটিংয়ে প্রভাব ফেলছে কি না, এমন প্রশ্নও শুনতে হয়েছে লিটনকে। কিন্তু টুর্নামেন্টের শেষার্ধে এসে তামিম ও লিটনের মধ্যে বর্তমান ফর্মের বিবেচনায় লিটনের পাল্লাটাই হয়তো ভারী থাকবে।
বিপিএলের পরের ৮ ম্যাচে ১৪০.৮৮ স্ট্রাইক রেটে লিটনের ব্যাট থেকে এসেছে ৩৩৮ রান। ক্যারিয়ার–সেরা ৮৫ রানের ইনিংসটিও। খোলস থেকে বেরিয়ে তিনি ঢুকে পড়েছেন সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহকের তালিকার শীর্ষ চারে। রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচের আগে লিটনই জানিয়েছেন, রানসংখ্যাটাকে এখন চার শর ঘরে নিয়ে যাওয়াটা তাঁর লক্ষ্য। পরদিনই ৮৩ রান করে চার শর খুব কাছে পৌঁছে গেছেন লিটন। অন্যদিকে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে তামিমের ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ১০ রান। ফাইনালটাকে স্মরণীয় করে রাখতে তাঁকে এর অনেক গুণ ভালো করতে হবে।
বিপিএল ফাইনালের কথা বললে সেটি অবশ্য তামিম ইকবালকে দারুণ এক সুখস্মৃতির কথা মনে করিয়ে দেয়। ২০১৯ বিপিএল ফাইনালে কুমিল্লার হয়ে ঢাকা ডাইনামাইটসের বিপক্ষে তামিম খেলেছিলেন বিপিএল ইতিহাসের সেরা ইনিংসগুলোর একটি। ৬১ বলে অপরাজিত ১৪১ রানের সেই ইনিংসই কুমিল্লাকে এনে দিয়েছিল আরও একটি বিপিএল শিরোপা। সেবার কুমিল্লার অধিনায়ক ছিলেন ইমরুল কায়েস। এবার সেই কুমিল্লার বিপক্ষেই প্রথমবারের মতো অধিনায়ক হিসেবে শিরোপা জয়ের হাতছানি তামিমের সামনে। অধিনায়ক হিসেবে ‘প্রথম’ শিরোপা জয়ের সুযোগ লিটনেরও। বিদেশি তারকায় ঠাসা দুই দলের এই ম্যাচে দুই অধিনায়কের লড়াইয়ের দিকেও চোখ থাকবে সবার।